মনিটারি পলিসি (Monetary policy)
মনিটারি পলিসিকে বাংলায় মুদ্রানীতি বলা হয়। মুদ্রানীতি হচ্ছে মূলত এক ধরণের নিয়ম-কানুন যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরের জন্য তৈরি করে এবং এর মাধ্যমে দেশে মুদ্রার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করা হয়। মুদ্রানীতির সবচেয়ে বড় দুটি টুল হচ্ছে ব্যাংক রেট এবং ব্যাংকের রিজার্ভের হার। এই দুটির পাশাপাশি আরো কিছু টুল ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু দীর্ঘমেয়াদি অবজেক্টিভ অর্জন করার চেষ্টা করে যার মাঝে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং উচ্চ কর্মসংস্থানের হার অর্জন করা অন্যতম। বাংলাদেশে মুদ্রানীতি তৈরি করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মুদ্রানীতি দ্বারা সাধারণত অর্থনীতিতে মুদ্রার মোট পরিমাণ এবং মুদ্রার বিভিন্ন চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। যেকোনো অর্থবছরের মুদ্রানীতি আসলে কি হবে তা নির্ধারণ করা হয় বিভিন্ন অর্থনৈতিক মানদন্ড দেখে যেমন - জিডিপি, মুদ্রাস্ফীতির হার, বিভিন্ন শিল্পের প্রবৃদ্ধির হার ইত্যাদি। সাধারণত মুদ্রানীতির মাধ্যমে অন্যান্য কমার্শিয়াল ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে কতো শতাংশ সুদের হারে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে তা নির্ধারণ করা হয়। কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে কি হারে কি পরিমাণ ঋণ নিতে পারছে তার উপর নির্ভর করে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো সাধারণ জনগণকে ঋণ প্রদান করে থাকে।
ফিসকাল পলিসি বনাম মনিটারি পলিসি
ফিসকাল পলিসি ও মনিটারি পলিসির মাঝে পার্থক্য হচ্ছে এই যে, মনিটারি পলিসি তৈরি করে থাকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে ফিসকাল পলিসি তৈরি করে থাকে সরকার। মনিটারি পলিসি দ্বারা সাধারণত মাইক্রোইকোনমিক পরিস্থিত প্রভাবিত হয় এবং ফিসকাল পলিসি দ্বারা ম্যাক্রোইকোনমিক পরিস্থিতি প্রভাবিত হয়। মনিটারি পলিসি দ্বারা সাধারণত অর্থনীতিতে মুদ্রার পরিমাণ ও মান নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। অপরদিকে, ফিসকাল পলিসি ট্যাক্সের হার ও সরকারি খরচকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে। কার্যক্রমে পার্থক্য থাকলেও, ফিসকাল পলিসি ও মনিটারি পলিসির মূল লক্ষ্য প্রায় একই, তা হলো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা।