বিজনেস অ্যানালিসিস কী, কেনো, কীভাবে করবেন?

বিজনেস অ্যানালিসিস - এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে এবং বাহিরে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার মাধ্যমে স্টেকহোল্ডারদের চাহিদা পূরণ করার চেষ্টা করা হয়। মূলত এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন চাহিদা আইডেন্টিফাই করা হয় এবং সেই চাহিদা পূরণের উপায় খুজে বের করা হয়। শুধু আইডেন্টিফাই এবং সমাধান বের করার মাঝেই বিজনেস অ্যানালিসিস সীমাবদ্ধ নয় বরং সমাধান অ্যাপ্লাই করার জন্য যথার্থ পরিকল্পনা তৈরিতেও বিজনেস অ্যানালিসিস কাজে আসে।
Key Points
- বিজনেস অ্যানালিসিস হচ্ছে এমন একটি ডিসিপ্লিন, যা ব্যবহার করে একটি
- ব্যবসায়ের প্রয়োজনগুলো আইডেন্টিফাই করা হয় এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুজে বের করার চেষ্টা করা হয়।
- বিজনেস অ্যানালিসিস বিভিন্ন উপায়ে করা যায় এবং ব্যবসায়ের প্রয়োজন অনুযায়ী ইউনিকভাবে এই প্রসেস তৈরি’ও করে নেয়া যায়।
- যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বিজনেস অ্যানালাইজ করার পূর্বশর্ত হচ্ছে ব্যবসায়ের লক্ষ্য আইডেন্টিফাই করা।
- ব্যবসায়ের লক্ষ্য আইডেন্টিফাই এবং প্রতিদিনের কার্যক্রম অ্যানালাইজ করা হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হচ্ছে একটি বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা।
বিজনেস অ্যানালিসিস কী, কেনো, কীভাবে করবেন?
বর্তমান সময়ের করপোরেট ওয়ার্ল্ড পূর্বের যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি কমপিটিটিভ। তাই ব্যবসায় টিকে থাকতে চাইলে কোম্পানীকে তার সাধ্যের মাঝে সকল টুল এবং টেকনিকের সুষ্ঠু ব্যবহার করতে জানতে হবে। টুল এবং টেকনিকের সুষ্ঠু ব্যবহার এনশিওর করার মাধ্যমে কোম্পানীর জন্য স্মার্ট ডিসিশান নেয়া সম্ভব হবে এবং এতে করে কোম্পানীর সকল স্টেকহোল্ডারের স্বার্থ পূরণ করা সম্ভব হবে। এখানেই বিজনেস অ্যানালিসিসের প্রবেশ। বিজনেস অ্যানালিসিস - এর মাধ্যমে
প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীন এবং বাহ্যিক বিভিন্ন উপাদান সম্পর্কে ডেটা কালেক্ট করে তা সবচেয়ে ভালো সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যায়।
বিজনেস অ্যানালিসিস কী?
বিজনেস অ্যানালিসিস হচ্ছে এমন একটি ডিসিপ্লিন, যা ব্যবহার করে একটি ব্যবসায়ের প্রয়োজনগুলো আইডেন্টিফাই করা হয় এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান খুজে বের করার চেষ্টা করা হয়। সমস্যার সমাধান হিসেবে একটি সিস্টেম কমপোনেন্ট অথবা কোনো সফটওয়্যার ডেভেলপ করতে হতে পারে, আর বিজনেস অ্যানালিসিস আইডেন্টিফাই করে যে উক্ত সিস্টেম কমপোনেন্ট অথবা সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠানের জন্য কেনো প্রয়োজন এবং তা দ্বারা কি কি সমস্যার সমাধান করা যাবে। বিজনেস অ্যানালিসিস-এর আলটিমেট লক্ষ্য হচ্ছে ব্যবসায়ের বিভিন্ন প্রয়োজন পূরণ করে ব্যবসায়ের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো।
বিজনেস অ্যানালিসিস কেনো প্রয়োজন?
বিজনেস অ্যানালিসিস ব্যবহার করার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলো নিচে উল্লেখ করা হলো -
১। কোম্পানীর স্ট্রাকচার এবং বিভিন্ন কমপোনেন্ট বুঝতে সাহায্য করে।
২। কোম্পানীর ভেতর বিদ্যমান সমস্যাগুলো আইডেন্টিফাই করতে সাহায্য করে।
৩। ব্যবসায়ের কোন কোন ক্ষেত্রে সমন্বয় আনা দরকার সেগুলো বুঝতে সাহায্য করে এবং সমন্বয় এনে ব্যবসায়ের সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৪। ব্যবসায় পরিবর্তন আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
৫। স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করে।
৬। সমস্যার সমাধানে কি পরিমাণ রিসোর্স প্রয়োজন হবে তা বুঝতে সাহায্য করে।
বিজনেস অ্যানালিসিস প্রসেস
বিজনেস অ্যানালিসিস বিভিন্ন উপায়ে করা যায় এবং ব্যবসায়ের প্রয়োজন অনুযায়ী ইউনিকভাবে এই প্রসেস তৈরি’ও করে নেয়া যায়। তবে যেকোনো বিজনেস অ্যানালিসিস প্রসেসে কমন কিছু স্টেপ থাকে। যেমন -
১। ব্যবসায়ের লক্ষ্য আইডেন্টিফাই করা
যেকোনো প্রতিষ্ঠানের বিজনেস অ্যানালাইজ করার পূর্বশর্ত হচ্ছে ব্যবসায়ের লক্ষ্য আইডেন্টিফাই করা। লক্ষ্য আইডেন্টিফাই করা ব্যতীত বোঝা যায় না যে ব্যবসায়ের আসলে কি প্রয়োজন এবং তা পূরনে কি কি করতে হবে। আর যদি আগে থেকে ব্যবসায়ের লক্ষ্য ঠিক করা থাকে, তাহলে লক্ষ্যের সাথে ব্যবসায়ের মিশন এবং ভ্যালু অ্যালাইন করছে কি না তা যাচাই করতে হবে।
২। ব্যবসায়ের বিভিন্ন কার্যক্রম অ্যানালাইজ করা
ব্যবসায়ের বিভিন্ন কার্যক্রম যেমন - সেলস, মার্কেটিং, অ্যাকাউন্টিং, ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি অ্যানালাইজ করার মাধ্যমে বোঝা যায় যে কোন কাজে কি পরিমাণ রিসোর্স ব্যবহৃত হচ্ছে এবং কি কি চ্যালেঞ্জ ফেইস করতে হচ্ছে। স্পেসিফিক কার্যক্রম এক এক করে পর্যালোচনা করার মাধ্যমে বোঝা যায় যে ব্যবসায়ের লক্ষ্য অর্জনে তা কোনো ভূমিকা পালন করছে কি না এবং কি কি উপায়ে সেই কাজকে আরো বেশি ইফেক্টিভ এবং ইফিশিয়েন্ট করে তোলা যায়।
৩। বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা
ব্যবসায়ের লক্ষ্য আইডেন্টিফাই এবং প্রতিদিনের কার্যক্রম অ্যানালাইজ করা হয়ে গেলে পরবর্তী কাজ হচ্ছে একটি বিজনেস প্ল্যান তৈরি করা। নির্দিষ্ট একটি সময়ের মাঝে (১/২/৫/১০ বছর) প্রতিষ্ঠানটি কি কি অর্জন করতে চায় এবং এর মাঝে তাদের কি কি পরিবর্তন আনতে হবে তা কিছু ফরমাল ডকুমেন্টে লিপিবদ্ধ তৈরি করাই হলো বিজনেস প্ল্যান তৈরি। বিজনেস প্ল্যান তৈরি করে তা ফলো করার মাধ্যমে এটা এনশিওর করা যায় যে ব্যবসায়ের সকল ক্ষেত্র একটি কমন লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
৪। বিজনেস প্ল্যান রিভিউ।
বিজনেস প্ল্যান তৈরি করে তা ফলো করা শুরু করার পর নির্দিষ্ট সময় পর পর তা রিভিউ করতে হবে। এটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে যে বিজনেস প্ল্যান অনুযায়ী সব ঠিকঠাক চলছে কি না, বিজনেস প্ল্যানে কি কি পরিবর্তন আনতে হবে, বিজনেস প্ল্যান অ্যাপ্লাই করার কারণে ব্যবসায়ের সার্বিক উন্নতি ঘটেছে কি না ইত্যাদি।
বিজনেস অ্যানালিসিস টেকনিক
কিছু কমন বিজনেস অ্যানালিসিস টেকনিক ব্যবসায় জগৎ-এ বেশ পরিচিত এবং টেকসই কিছু বিজনেস অ্যানালিসিস টেকনিক রয়েছে এগুলো টেমপ্লেট হিসেবে ব্যবহার করে যেকোনো প্রতিষ্ঠান নিজেদের বিজনেস অ্যানালিসিস করে নিতে পারে। তবে প্রফেশনাল বিজনেস অ্যানালিস্ট হায়ার করে তাকে দিয়ে অ্যানালিসিস করানো সবচেয়ে ভালো পন্থা।
১। MOST Technique
MOST - এর ফুল ফর্ম হচ্ছে - Mission, Objectives, Strategies। এই টেকনিক ব্যবহার করে বিজনেস অ্যানালিস্টরা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন উপাদান নিয়ে কাজ করেন। শুরুতেই ব্যবসায়ের মিশন আইডেন্টিফাই করা হয়, তারপর সেই মিশন অ্যাচিভ করার জন্য কি কি অবজেক্টিভ ফুলফিল করতে হবে সেগুলো ভাগ করা হয় এবং সবশেষে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীন বিভিন্ন ইস্যু কিভাবে হ্যান্ডেল করা হচ্ছে সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত পর্যালোচনা করা হয়।
২। PESTLE Technique
PESTLE - এর ফুল ফর্ম হচ্ছে Political, Economic, Sociological, Technological, Legal এবং Environmental। এই টেকনিক ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের বাহ্যিক বিভিন্ন উপাদানের অ্যানালিসিস করা হয়। বেসিকালি এই টেকনিক ব্যবহার করে এমন সব বাহ্যিক উপাদান আইডেন্টিফাই এবং অ্যানালাইজ করা যেগুলো প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলতে পারে।
৩। SWOT Technique
SWOT - এর ফুল ফর্ম হচ্ছে Strengths, Weaknesses, Opportunities এবং Threats। SWOT অ্যানালিসিস ব্যবসায় জগৎ-এ অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং এভারগ্রিন একটি টেকনিক। শুধু ব্যবসায় জগৎ-এই নয়, বরং ব্যক্তিগত জীবনে এটি প্রয়োগ করা সম্ভব। বেসিকালি এই টেকনিক ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীন Strengths এবং Weaknesses আইডেন্টিফাই করা হয় এবং বাহ্যিক Opportunities এবং Threats আইডেন্টিফাই করা হয়।
৪। CATWOE Technique
CATWOE - এর ফুল ফর্ম হচ্ছে Customers, Actors, Transformation Process, World View, Owner, এবং Environmental। প্রতিষ্ঠানের জন্য নেয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের মাঝে কি কি প্রভাব ফেলে তা আইডেন্টিফাই এবং অ্যানালাইজ করার জন্য এই টেকনিক ব্যবহার করা হয়।
৫। The 5 Whys Technique
এই টেকনিক ব্যবহার করে প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীন এবং বাহ্যিক বিভিন্ন সমস্যার রুট কজ বা মূল কারণ আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করা হয়। মূলত যেকোনো সমস্যার কারণ নিয়ে ক্রমাগত ৫ বার “কেনো?” প্রশ্নটি করার মাধ্যমে মূল কারণ আইডেন্টিফাই করা হয়।
৬। ব্রেইনস্টর্মিং
ব্রেইনস্টর্মিং হচ্ছে এমন একটি টেকনিক যেখানে প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিগণ একসাথে হয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের চাহিদা এবং তা পূরনের উপায় খুজে বের করার চেষ্টা করেন। বিভিন্ন ডিভিশন থেকে মানুষ এখানে অংশগ্রহণ করায় ডিফারেন্ট পারসপেক্টিভ-এর প্রবেশ ঘটে এবং গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব হয়।
৭। বিজনেস প্রসেস মডেলিং
বিজনেস প্রসেস মডেলিং হচ্ছে এমন একটি টেকনিক যেখানে বর্তমান সময়ের ডেটা অনুযায়ী ব্যবসায়ের বিভিন্ন কার্যক্রম অ্যানালাইজ করা হয় এবং বর্তমান ডেটা থেকে ভবিষ্যতের কার্যক্রম, সমস্যা এবং সমাধান আইডেন্টিফাই করার চেষ্টা করা হয়। যেমন - আপনি যদি প্রতিষ্ঠানের পুরনো ইনফরমেশন সিস্টেম পরিবর্তন করে অ্যাডভান্সড ইনফরমেশন সিস্টেম অ্যাপ্লাই করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই ইনফরমেশন সিকিউরিটির দিকে আরো বেশি ফোকাস করতে হবে। অর্থাৎ, অ্যাডভান্সড ইনফরমেশন সিস্টেমের পাশাপাশি আপনাকে অ্যাডভান্সড ইনফরমেশন সিকিউরিটি’ও অ্যাপ্লাই করতে হবে, এটা আপনি আগে থেকে প্রেডিক্ট করতে পারলেন।
বিজনেস অ্যানালিসিস করার জন্য কিছু টিপস
আপনার বিজনেস অ্যানালাইজ করার সময় এই টিপসগুলো কাজে দিবে বলে আশা করছি।
● বিজনেস অ্যানালিসিস শুরু করার আগেই ব্যবসায়ের স্বল্পমেয়াদী এবং দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য আইডেন্টিফাই করুন।
● বিজনেসের দৈনন্দিন সিদ্ধান্তগুলোকে মিশন এবং ভিশনের সাথে অ্যালাইন করানোর চেষ্টা করুন।
● একই ক্যাটাগরির অন্যান্য কোম্পানীর থেকেও ডেটা কালেক্ট করুন, এতে ভিন্ন ভিন্ন পারসপেক্টিভ সম্পর্কে ধারণা পাবেন।
● যেকোনো বিজনেস অ্যানালিসিস টেকনিক গ্রহণ করার আগে সেটির সুবিধা এবং অসুবিধাগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
● বছরে অন্তত ২ থেকে ৩ বার বিজনেস অ্যানালিসিস করার চেষ্টা করুন।
● বিজনেস প্ল্যানকে স্ট্যাটিক কিছু হিসেবে চিন্তা না করে এটিকে ক্রমাগত আপডেট করতে থাকুন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে এটির বিকল্প নেই।
● কোম্পানীর স্টেকহোল্ডার কারা এবং তারা কোম্পানী থেকে কি আশা রাখেন তা বোঝার চেষ্টা করুন।
● বিজনেস অ্যানালিসিস প্রসেস অ্যাপ্লাই করার জন্য বিভিন্ন টুলের সাহায্য নিন।
পরিসংহার
প্রতিষ্ঠানের সকল কার্যক্রম ঠিকভাবে চলছে কি না এবং কোথাও কোনো সমস্যা আছে কি না, তা যাচাই করতে বিজনেস অ্যানালিসিস-এর বিকল্প নেই। অনেক সময় খালি চোখে সমস্যা দেখা যায় না, কিন্তু বিজনেস অ্যানালিসিস-এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে এখানে কোনো সমস্যা রয়েছে। তাই যেকোনো প্রতিষ্ঠানে বছরে অন্তত ২ - ৩ বার বিজনেস অ্যানালিসিস করতে হবে।
- https://www.invensislearning.com/blog/business-analysis-definition/
- https://www.futurelearn.com/info/blog/introduction-business-analysis
- https://www.indeed.com/career-advice/career-development/what-is-business-analysis
- https://www.simplilearn.com/what-is-a-business-analyst-article
Next to read
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)


সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)

লিন ক্যানভাস মডেল (Lean Canvas Model)

সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)

নিট মুনাফা (net profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং কিভাবে হিসাব করবেন

রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)

সামষ্টিক অর্থনীতি বা ম্যাক্রো ইকোমিক্স ( Macro Economics ) কী?

অ্যাম্বুশ মার্কেটিং (Ambush Marketing)
