Banking 101 (A brief discussions of banking products and services)

269
article image

ব্যাংকের প্রোডাক্ট ও সার্ভিসগুলোকে মূলত ৪টি ভাগে করা যায়, যথা - কোর প্রোডাক্টস, লোন সার্ভিস, ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস ও অন্যান্য সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস। প্রতিটি ভাগেই একাধিক ধরণের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস রয়েছে, যার উদ্দেশ্য মূলত গ্রাহকের আর্থিক লেনদেনকে সহজ করে তোলা এবং নিরাপদে আর্থিক লেনদেন করার সুবিধা প্রদান করা।

Key Points

  • ব্যাংকের কোর প্রোডাক্টগুলো হচ্ছে মূলত বিভিন্ন ধরণের অ্যাকাউন্টসমূহ যেমন - চেকিং অ্যাকাউন্ট, সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট।
  • ইভেস্টমেন্ট ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যাংক তার গ্রাহকদের ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং ও ফাইন্যান্সিয়াল গোল অ্যাচিভ করতে সাহায্য করে।
  • ব্যাংকের কিছু স্পেশালাইজড ও সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস রয়েছে যেমন - লকার সার্ভিস, ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জ সার্ভিস ও ওয়্যার ট্রান্সফার ফ্যাসিলিটি।
  • ক্রেডিট কার্ড থেকে পাওয়া লোনের সুদের হার অনেক বেশি হয়ে থাকে, আবার সময়ের মাঝে লোনের টাকা পরিশোধ না করলে জরিমানা দিতে হয়।

বিভিন্ন ব্যাংকিং প্রোডাক্ট ও সার্ভিসসমূহ

আধুনিক জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করছে ব্যাংকিং, যা আমাদের দৈনন্দিন জীবন, আর্থিক নিরাপত্তা ও দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা-ভাবনাকে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে প্রভাবিত করছে। আমাদের প্রথম ডিপোজিট থেকে শুরু করে, বাড়ি বানানো বা ব্যবসায় শুরু করা ইত্যাদি সবকিছুতেই জড়িত থাকে এই ব্যাংকিং। তবুও পুরো ব্যাংকিং সেক্টরকে বেশ জটিল ও ভীতিকর মনে হতে পারে। তাই আজকের লেখায়, আমরা খুব সহজ ভাষায় ব্যাংকিং সেক্টরের বিভিন্ন প্রোডাক্ট এবং সার্ভিসগুলো আপনাদের কাছে তুলা ধরার চেষ্টা করবো। আশা করি এতে আপনাদের ব্যাংকের সাথে জড়িত বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা হবে।

ব্যাংক কী?

ব্যাংক হচ্ছে এমন একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, যারা বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের থেকে ডিপোজিট সংগ্রহ করে এবং তারপর সেই ডিপোজিটের টাকা বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ হিসেবে প্রদান করে। অর্থাৎ, ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণদাতা ও ঋণগ্রহিতাদের মাঝে মধ্যস্তাকারী হিসেবে কাজ করে।

ব্যাংকের বিভিন্ন কার্যক্রম

একটি ব্যাংক অনেক ধরণের কার্যক্রম পরিচালনা করলেও, মূল কার্যক্রমগুলো হচ্ছে -

ডিপোজিটরি সার্ভিস

ব্যাংকের বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ জমা রাখার একটি নিরাপদ স্থান হিসেবে কাজ করে।

ঋণ প্রদান

ব্যাংকে জমা থাকা অর্থ ব্যাংক বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ হিসেবে প্রদান করে, যাতে করে তারা কিছু ক্রয় করতে পারে অথবা কোথাও কাজে লাগাতে পারে।

পেমেন্ট সার্ভিস

চেকিং অ্যাকাউন্ট, ডেবিট কার্ড ও অনলাইন পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যাংক বিভিন্ন পেমেন্ট সার্ভিস প্রদান করে।

ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস

ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্টের মতো বিভিন্ন প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যাংক ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস প্রদান করে।

ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট

বিভিন্ন ব্যাংক ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং এবং ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্টের মতো সেবা প্রদান করে থাকে।

অর্থনীতিতে ব্যাংকের ভূমিকা

ব্যাংক বিভিন্ন লাভজনক খাতে অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে এবং অর্থ জমা রাখার জন্য একটি নিরাপদ স্থান অফার করার মাধ্যমে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ভূমিকা রাখে। আবার ইন্সুরেন্স ও হেজিং (Hedging) - এর মতো বিভিন্ন প্রোডাক্ট অফার করার মাধ্যমে ব্যাংক আর্থিক নিরাপত্তা প্রদান করে। মূলত, একটি ব্যাংক এনশিওর করে যাতে অর্থনীতিতে কোনো টাকা অলস বসে না থাকে। বরং, একজনের অলস টাকা অন্যজনের প্রয়োজনের কাজে ব্যবহার করতে দেয়ার মাধ্যমে ব্যাংক অর্থনীতিতে অর্থের প্রবাহ বা লেনদেন বৃদ্ধি করে।

বিভিন্ন ধরণের ব্যাংক

ব্যাংকের বিভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট ও সার্ভিস সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে ব্যাংকের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে হবে। বিশ্বজুড়ে বহু ধরণের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠানের দেখা মিললেও বাংলাদেশে মূলত ৪ ধরণের ব্যাংক দেখতে পাওয়া যায়।

১। কমার্শিয়াল ব্যাংক

কমার্শিয়াল ব্যাংক হচ্ছে সবচেয়ে পরিচিত ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান। মূলত ‘ব্যাংক’ বলতে কমার্শিয়াল ব্যাংককেই বোঝানো হয়। তাই এর ভিন্ন কোনো সংজ্ঞার প্রয়োজন নেই। কমার্শিয়াল ব্যাংকের ফিচারগুলো হচ্ছে -

  • কমার্শিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের চেকিং ও সেভিংস অ্যাকাউন্ট অফার করে।
  • কমার্শিয়াল ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের ব্যাক্তিগত ও বন্ধকী ঋণ অফার করে।
  • কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোর দেশজুড়ে বহু শাখা থাকে।
  • কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং’র মতো সুবিধা করে।

২। ক্রেডিট ইউনিয়ন

ক্রেডিট ইউনিয়ন অনেকটা সমিতির মতো কাজ করে। অর্থাৎ, এই ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস শুধু নিজেদের সদস্যদেরকেই অফার করে থাকে। ক্রেডিট ইউনিয়নের ফিচারগুলো হচ্ছে -

  • ক্রেডিট ইউনিয়নের সুবিধা পেতে চাইলে আপনাকে ক্রেডিট ইউনিয়নের সদস্য হতে হবে।
  • এই ব্যাংকের সদস্যরা’ই এই ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডার।
  • বিভিন্ন ধরণের সেভিংস ও লোন প্রোডাক্ট অফার করে থাকে।

৩। কেন্দ্রীয় ব্যাংক

কেন্দ্রীয় ব্যাংক হচ্ছে ব্যাংকারদের ব্যাংকার। অর্থাৎ, দেশে উপস্থিত সকল ধরণের ব্যাংক এই কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীনে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। যেকোনো দেশে একটি মাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক থাকে। বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

৪। বিনিয়োগ ব্যাংক

বিনিয়োগ ব্যাংকের কার্যক্রম অন্যান্য ট্রেডিশনাল ব্যাংকের চাইতে কিছুটা ভিন্ন। কারণ এই ব্যাংকগুলো মূলত ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজরি ও বিভিন্ন ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিস অফার করার দিকে ফোকাস করে থাকে। তারা তাদের গ্রাহকদের জন্য মূলধন সংগ্রহ, মার্জার ও অ্যাক্যুইজিশন এবং অন্যান্য ইনভেস্টমেন্ট রিলেটেড কার্যক্রমে অংশগ্রহন করে থাকে।

ব্যাংকের মূল প্রোডাক্টসমূহ

বিভিন্ন ধরণের ব্যাংকিং প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জানার পর এখন আমরা মূল ব্যাংকিং প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে জানতে পারি।

১। চেকিং অ্যকাউন্ট

চেকিং বা কারেন্ট অ্যাকাউন্টগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যাতে গ্রাহকরা এই অ্যাকাউন্টের টাকা যেকোনো সময় খরচ করতে পারেন। এইসব অ্যাকাউন্টে চেক বই, ডেবিট কার্ড, অনলাইন বিল পেমেন্টের মতো সুবিধা পাওয়া যায়। যেকোনো সময় টাকার অ্যাক্সেস প্রয়োজন হলে, এই অ্যাকাউন্ট’ই শ্রেয়।

চেকিং অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে সাধারণত আপনাকে ব্যাংকের ব্রাঞ্চে যেতে হবে। আপনাকে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং একটি নির্দিষ্ট অ্যামাউন্ট (মিনিমাম ডিপোজিট) জমা দিতে হবে। একেক ব্যাংকের মিনিমাম ডিপোজিটের পরিমাণ একেক রকম হয়, তাই অ্যাকাউন্ট খোলার আগে এই সম্বন্ধে বিস্তারিত রিসার্চ করে নেয়া উচিত।

২। সেভিংস অ্যাকাউন্ট

অ্যাকাউন্টে টাকা জমানো এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সুদ পাওয়ার জন্য এই অ্যাকাউন্ট শ্রেয়। নিজের সঞ্চয়ের লক্ষ্য পূরণের জন্য এই অ্যাকাউন্ট ভালো কাজে দিবে। আবার আপনার প্রয়োজনে যেকোনো সময় টাকা তুলেও ফেলতে পারবেন। বাজারে অনেক ধরণের সেভিংস অ্যাকাউন্ট রয়েছে, আবার প্রতিটি ব্যাংক সেভিংস অ্যাকাউন্টের বিপরীতে ভিন্ন ভিন্ন হারে সুদ অফার করে, তাই অ্যাকাউন্ট খোলার আগে এই সম্বন্ধে রিসার্চ করে নিতে হবে।

৩। ফিক্সড ডিপোজিট অ্যাকাউন্ট

অলস টাকা একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যাংকে জমা রেখে দেয়ার জন্য এই অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়। এই অ্যাকাউন্টে একটি নির্দিষ্ট হারে সুদ পাওয়া যায়, তবে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে টাকা তুলে নেয়া যায় না। যদি টাকা তুলে নিতে চান, তাহলে ব্যাংক থেকে কোনো সুদ দেয়া হবে না। সাধারণত ১ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত এই অ্যাকাউন্টের মেয়াদ থাকে।

এই কোর ব্যাংকিং প্রোডাক্টগুলোই আপনার সাথে ব্যাংকের সম্পর্কের প্রাথমিক ধাপ। সঠিক ধরণের অ্যাকাউন্ট সিলেক্ট করার মাধ্যমে আপনি টাকা জমানোর একটি নিরাপদ জায়গা পাবেন, আবার অলস টাকা থেকে আয় করার’ও সুযোগ পাবেন।

ব্যাংকের বিভিন্ন ধরণের সার্ভিস

কোর ব্যাংকিং প্রোডাক্টগুলো অফার করার পাশাপাশি ব্যাংক এমন কিছু সার্ভিস অফার করে যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের লেনদেনের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আবার এই সার্ভিসগুলোর আবির্ভাবে ব্যাংকের কোর প্রোডাক্টগুলো আরো বেশি ইফেক্টিভ ও এফিশিয়েন্ট হয়ে উঠেছে বলা যায়।

১। ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড

শুনতে ও দেখতে একইরকম হলেও ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডের উদ্দেশ্য ভিন্ন। ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে আপনি আপনার অ্যাকাউন্টে জমা রাখা টাকা ব্যয় করার সুযোগ পান। অন্যদিকে, ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও আপনি ব্যাংক থেকে একটি নির্দিষ্ট হারে নির্দিষ্ট লিমিট পর্যন্ত লোন নিতে পারেন। ডেবিট কার্ডে টাকা না থাকলে আপনি সেটি ব্যবহার করতে পারবেন না। আর ক্রেডিট কার্ডে টাকা না থাকলেও আপনি টাকা খরচ করার সুযোগ পাবেন।

শুনতে বেশ লোভনীয় হলেও উভয় ধরণের কার্ড বেশ দায়িত্বশীলতার সাথে ব্যবহার করা উচিত। বিশেষ করে ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে অপ্রয়োজনীয় খরচ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কারণ, ক্রেডিট কার্ড থেকে পাওয়া লোনের সুদের হার অনেক বেশি হয়ে থাকে, আবার সময়ের মাঝে লোনের টাকা পরিশোধ না করলে জরিমানা দিতে হয়।

২। অনলাইন ও মোবাইল ব্যাংকিং

অনলাইন ব্যাংকিং’র ক্ষেত্রে আপনি আপনার কম্পিউটার ব্যবহার করেই ব্যাংকিং সার্ভিস পেতে পারেন, আর মোবাইল ব্যাংকিং’র ক্ষেত্রে আপনি আপনার স্মার্টফোন ব্যবহার করেই ব্যাংকিং সুবিধা পেতে পারেন। উভয় ক্ষেত্রেই আপনার ব্যাংকের ব্রাঞ্চে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এতে করে ব্যালেন্স চেক করা, বিল পে করা, কোথাও টাকা পাঠানোর মতো কাজগুলো সহজেই করে ফেলা যায়।

৩। এটিএম সার্ভিস

এটিএম বা অটোমেটেড টেলার মেশিন ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ব্যাংকিং আওয়ার শেষে আপনার ব্যালেন্স চেক, কোথাও টাকা পাঠানো বা টাকা তোলার মতো কাজগুলো সেরে ফেলতে পারছেন। যেই ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট, সেই ব্যাংকের এটিএম থেকে টাকা তোলা সম্পূর্ণ ফ্রি হলেও, অন্য ব্যাংকের এটিএম ব্যবহার করতে গেলে কিছু ফি দিতে হয়।

এই ব্যাংকিং সার্ভিসগুলোর মাধ্যমে ব্যাংকের ইউটিলিটি এবং অ্যাক্সেসিবিলিটি বৃদ্ধি পায়। এতে করে আপনি যেকোনো সিচুয়েশনে আপনার অ্যাকাউন্ট ম্যানেজ ও লেনদেন করতে পারছেন। তবে অপ্রয়োনীয় ফি বা জরিমানা থেকে বাচতে এই সার্ভিসগুলো সাবধানতার সাথে ব্যবহার করা উচিত।

লোন এবং ক্রেডিট সার্ভিস

বিভিন্ন ব্যাক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে তাদের ফিন্যান্সিয়াল গোল অ্যাচিভ করতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে ব্যাংক বিভিন্ন ধরণের লোন ও ক্রেডিট সার্ভিস অফার করে থাকে।

১। পারসোনাল লোন

ব্যাংক তার গ্রাহকদের (ব্যাক্তি) লোন পরিশোধের ক্ষমতা যাচাই করে এই ধরণের লোন গ্রান্ট করে থাকে। এই লোনের সুদের হার আপনার ক্রেডিট স্কোর ও লোন পরিশোধের সক্ষমতার উপর নির্ভর করবে। এই লোনের মেয়াদ কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত হতে পারে।

২। বন্ধকী ঋণ

সাধারণত বাড়ি ক্রয় বা তৈরি করার জন্য এই ধরণের ঋণ ব্যবহার করা হয়। আপনি কোন স্থানে এবং কতো বড় বাড়ি করতে চাইছেন তার উপর ঋণের সুদের হার, পরিমাণ ও মেয়াদ নির্ভর করবে।

৩। ক্রেডিট কার্ড

ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করার মাধ্যমে আপনার অ্যাকাউন্টে টাকা না থাকলেও আপনি কেনাকাটা করতে পারবেন। তবে ক্রেডিট কার্ডের লোন সময়মতো পরিশোধ করে দিতে হয়, নইলে ভালো পরিমাণ জরিমানা বা সুদ দিতে হয়।

ইনভেস্টমেন্ট এবং ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট

ব্যাংক শুধু টাকা জমা রাখা ও তোলার স্থান হিসেবেই ব্যবহৃত হয় না। বরং আপনার অ্যাসেট ম্যানেজ ও গ্রো করতে সাহায্য করার উদ্দেশ্যে’ও ব্যাংক কিছু সার্ভিস অফার করে থাকে।

১। ইনভেস্টমেন্ট অ্যাকাউন্ট

এই ধরণের অ্যাকাউন্টে আপনি একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা জমা করে রাখতে পারেন। পরবর্তী সময়ে এই অ্যাকাউন্টের টাকা ব্যবহার করে আপনি বিভিন্ন স্টক, বন্ড ও মিচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন।

২। রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট

আপনি চাইলে আপনার অবসরের জন্যে’ও স্পেসিফিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন সেভিংস অ্যাকাউন্ট ব্যাংকে খুলতে পারেন। এই ধরণের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সাধারণত ট্যাক অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। আবার আপনার চাহিদা অনুযায়ী আপনার কতো টাকা করে অ্যাকাউন্টে জমানো উচিত সেই বিষয়ে’ও ব্যাংক আপনাকে অ্যাডভাইস দিতে পারে।

৩। ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজর

বিভিন্ন ব্যাংক সার্টিফাইড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজরদের মাধ্যমে ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজরি সার্ভিস অফার করে থাকে। এই অ্যাডভাইজররা আপনার ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং, ইনভেস্টমেন্ট অ্যাডভাইস ও ফাইন্যান্সিয়াল গোল অ্যাচিভ করার স্ট্র্যাটেজি তৈরিতে সাহায্য করতে পারেন।

ব্যাংকের অন্যান্য সার্ভিসসমূহ

ব্যাংকের বিভিন্ন কোর সার্ভিস যেমন - অ্যাকাউন্ট সেবা, লোন সেবা ও বিনিয়োগের পাশাপাশি ব্যাংকগুলো এখন কিছু স্পেশালাইজড এবং সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস প্রোভাইড করছে যা আপনার আর্থিক লেনদেনকে আরো সহজ করে তুলতে পারে।

১। লকার সার্ভিস

ব্যাংক থেকে লকার সার্ভিস প্রোভাইড করা হয়, যেখানে আপনি মূল্যবান অর্থ, স্বর্ণ ও গয়না জমা রাখতে পারেন। আপনি কেমন জিনিস লকারে জমা রাখছেন তার উপর ডিপেন্ড করে ব্যাংক বিভিন্ন হারে ফি নিয়ে থাকে।

২। ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জ

ট্রাভেল বা বিজনেসের উদ্দেশ্যে গ্রাহকদের জন্য ব্যাংক থেকে ফরেন কারেন্সি এক্সচেঞ্জ সার্ভিস’ও প্রোভাইড করা হয়। এতে করে গ্রাহকরা খুব সহজেই তাদের অ্যাকাউন্টে থাকা টাকা অন্য কোনো কারেন্সিতে চেঞ্জ করে নিতে পারেন।

৩। ওয়্যার ট্রান্সফার

দেশব্যাপি ও দেশের বাইরে নিরাপদে টাকা পাঠানোর জন্য ব্যাংক থেকে ওয়্যার ট্রান্সফার সেবা প্রদান করা হয়। এই ধরণের ট্রান্সফার সাধারণত বড় অ্যামাউন্টের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। লেনদেনের টাকার পরিমাণ ও গন্তব্যের উপর নির্ভর করে ব্যাংক থেকে বিভিন্ন হারে এই ট্রান্সফারের বিপরীতে চার্জ করা হয়।

পরিসংহার

ফিন্যান্সের জগতে ব্যাংকগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ পিলার হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে, যেখান থেকে গ্রাহকরা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরণের সেবা ভোগ করছেন। এই ব্লগের মাধ্যমে আমরা ব্যাংকের বিভিন্ন কোর প্রোডাক্ট, লোন সার্ভিস, ইনভেস্টমেন্ট ও ওয়েলথ ম্যানেজমেন্ট সার্ভিস এবং অন্যান্য সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিসগুলো সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি, এই লেখা আপনার ফাইন্যান্সিয়াল প্ল্যানিং ও গোল অ্যাচিভ করার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। 
 


  • https://www.capitalone.com/bank/money-management/banking-basics/banking-products-and-services/
  • https://www.linkedin.com/pulse/finance-banking-101-understanding-basics-success-rifah-tasnia-onney
  • https://catalogimages.wiley.com/images/db/pdf/9780470170885.excerpt.pdf
  • https://www.investopedia.com/personal-finance/banking-101/
  • https://testbook.com/banking-awareness/basics-of-banking
  • https://www.investopedia.com/terms/b/bank.asp
  • https://www.unitedway.org/my-smart-money/pages/financial-products-and-services-the-basics#
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/wealth-management/banking-fundamentals/
  • https://www.imf.org/en/Publications/fandd/issues/Series/Back-to-Basics/Banks
  • https://www.wallstreetmojo.com/retail-banking/
  • https://stripe.com/nl-jp/resources/more/business-bank-accounts-101
Next to read
Business Models
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)

শেয়ারিং ইকোনমি মূলত দুই পক্ষের (Peer to Peer) সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি বিজনেস মডেল, যেখানে মূল প্রতিষ্ঠানটি একটি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। এক্ষত্রে প্রতিষ্টান গুলো মূলত দুই পক্ষ অর্থাৎ সেবা প্রদানকারী এবং সেবা গ্রহণকারীদের মাঝে প্রযুক্তির সহায়তায় নিজস্ব কৌশলে সংযোগ করে দেয়।

বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
Business
বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
Logo
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
অর্থনীতি কী?
Economics
অর্থনীতি কী?
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
Business Law
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
Marketing
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
বিক্রয় বৃদ্ধি করার ৬টি নীতি
Sales
বিক্রয় বৃদ্ধি করার ৬টি নীতি
Generally Accepted Accounting Principle (GAAP)
Accounting
Generally Accepted Accounting Principle (GAAP)