বিলাসবহুল ব্র্যান্ডিং-এর মৌলিক বিষয়সমূহ (The Fundamentals of Luxury Branding)

341
article image

প্রয়োজনের অতিরিক্ত অর্থ দিয়ে আমরা যেসব পণ্য বা সেবা ক্রয় করি, যা আমাদের জীবনধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয়, তবে আমাদের মানসিক তৃপ্তি প্রদান করে এবং সোশ্যাল স্ট্যাটাস বজায় রাখতে সাহায্য করে তাই লাক্সারি বা বিলাসবহুল পণ্য। আর যেসকল ব্র্যান্ড এসব পণ্যের মার্কেটিং এবং বিক্রয় করে তাদেরকেই আমরা লাক্সারি ব্র্যান্ড হিসেবে জানি। লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো সাধারণত তাদের রোমাঞ্চকর গল্প, সেলিব্রেটি মার্কেটিং, পণ্যের লিমিটেড এমাউন্ট ইত্যাদি ফ্যাক্টরের জন্য সর্বাধিক পরিচিত।

Key Points

  • লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো খুব অল্প পরিমাণ অডিয়েন্সকে টার্গেট করে ব্র্যান্ডিং করে থাকে আর প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর অডিয়েন্স হয় তুলনামূলক বড়।
  • লাক্সারি ব্র্যান্ডের পণ্যের মান অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ভালো হতেও পারে, নাও হতে পারে। কারণ, প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর মতো লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো শুধু পণ্যের মানের দিক দিয়েই ডিফারেনশিয়েট করেন না।
  • যে কেউ চাইলেই এই ক্যাটাগরির পণ্য এফোর্ড করতে পারবে না এবং যাদের আর্থিক সামর্থ্য অথবা সোশ্যাল স্ট্যাটাস বজায়ে রাখার প্রতি ঝোক রয়েছে শুধু তারাই হবেন আপনার কাস্টমার।
  • যেহেতু লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলোর কাস্টমার বেইজ খুব ছোট হয়ে থাকে, তাই একই কাস্টমারের কাছে তাদের বার বার পণ্য বিক্রয় করতে হয়।

ভূমিকা

বলা হয়ে থাকে যে, মানবসভ্যতার উন্মেষ থেকেই আমাদের সমাজে বিলাসবহুল পণ্যের উপস্থিতি ছিল। তৎকালীন ধনী পরিবারের মানুষেরা সমাজের অন্যদের থেকে নিজেদের স্বতন্ত্র হিসেবে উপস্থাপন করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরণের শামুকের খোলস দিয়ে তৈরি গহনা পরিধান করতেন, যা সমাজের সাধারণ মানুষদের কাছে ছিল বিলাসী পণ্য। কারণ, সওদাগরেরা অনেক দূর থেকে এসব পণ্য নিয়ে এসে চড়াদামে বিক্রি করতেন। তাই সাধারণ মানুষের পক্ষে এগুলো ক্রয় করা সম্ভব ছিল না।

সেই সময় থেকে আমরা অনেকটা পথ চলে এসেছি। তবে, এখনো আমাদের সমাজে এবং জীবনে বিলাসী পণ্যের অস্তিত্ব কিন্তু খুব ভালোভাবেই জানান দিচ্ছে। একটি বাজেট রেঞ্জের স্মার্টফোন ক্রয় করার সময় আমরা ভাবি যে একদিন ইনশাআল্লাহ অ্যাপলের আইফোন ক্রয় করবো অথবা ম্যাক ব্যবহার করবো। আমাদের মস্তিষ্কে এই ব্যাপারগুলো কিন্তু এমনিতেই আসে না। বিলাসবহুল পণ্যের ব্র্যান্ডগুলো তাদের ব্র্যান্ডিং এমনভাবেই করে যাতে আমরা তাদের প্রতি আকৃষ্ট হই এবং ভবিষ্যতে আমাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পেলে তাদের পণ্য ক্রয় করি। তারা কিভাবে এই কাজটি করে এবং আপনিও কিভাবে নিজের বিলাসবহুল পণ্যের ব্র্যান্ডিং করতে পারবেন সেই সম্পর্কে জানবো আজকে।

বিলাসবহুল ব্র্যান্ডিং কী?

বিলাসবহুল পণ্য বলতে সাধারণত সেই সকল পণ্যকে বোঝানো যা আমাদের জীবন-ধারণের জন্য অত্যাবশ্যকীয় নয় বরং নিজেদের শখ-আহ্লাদ মেটাতে বা সোশ্যাল স্ট্যাটাস বজায়ে রাখার উদ্দেশ্যে আমরা আমাদের অতিরিক্ত অর্থ থেকে ক্রয় করি। এই ধরণের পণ্য সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে তৈরি করা হয় না তাই সাধারণ জনগণ এগুলো ক্রয় করতে পারে না। সাধারণত যাদের আর্থিক অবস্থা খুব ভালো এবং বেশ ভালো পরিমাণ অলস অর্থ রয়েছে তারাই এই ক্যাটাগরির পণ্য উপভোগ করতে পারেন। যেই সকল কোম্পানী বা ব্র্যান্ড এই ক্যাটাগরির পণ্য তৈরি করেন তারা যে উপায়ে নিজেদের ব্র্যান্ডিং করেন তাকেই বিলাসবহুল বা লাক্সারি ব্র্যান্ডিং বলা হয়।

লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলোর মাঝে আমরা একধরণের আভিজাত্যের ছায়া দেখতে পারি। তারা নিজেদের পণ্যের গুণগত উৎকর্ষতা এবং দুর্লভ্যতার কারণ সাধারণ পণ্যের থেকে অনেকগুণ বেশি টাকা চার্জ করতে পারেন। আবার অনেক ব্র্যান্ড ডিফারেনসিয়েশনের মাধ্যমেও এই কাজটি করে থাকে। যেমন : লাক্সারি ঘড়ির ব্র্যান্ড রোলেক্স সাধারণ ঘড়ির তুলনায় এতো বেশি দামি হয়ে থাকে কারণ তাদের প্রতিটি ঘড়ির এসেম্বলি সুদক্ষ কারিগর দ্বারা সম্পূর্ণ হাতের তৈরি হয়ে থাকে। এই কাজটি সাধারণত অন্যান্য ব্র্যান্ড করতে পারে না।

লাক্সারি বনাম প্রিমিয়াম

অনেকেই লাক্সারি ব্র্যান্ড এবং প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডের মাঝে পার্থক্য বুঝতে পারেন না। এদের মাঝে মৌলিক পার্থক্য হলো এই যে, লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো খুব অল্প পরিমাণ অডিয়েন্সকে টার্গেট করে ব্র্যান্ডিং করে থাকে আর প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর অডিয়েন্স হয় তুলনামূলক বড়। প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড মানেই হচ্ছে যে, তাদের পণ্যের মান অনেক বেশি ভালো হবে, তাই তারা অনায়াসেই অনেক বেশি টাকা চার্জ করতে পারে। যাদের এতো ভাল মানের পণ্য প্রয়োজন, তারা একটু বেশি টাকা দিয়ে হলেও এই ব্র্যান্ডগুলোর পণ্যই ব্যবহার করেন।

অপরদিকে, লাক্সারি ব্র্যান্ডের পণ্যের মান অন্যান্য ব্র্যান্ডের তুলনায় ভালো হতেও পারে, নাও হতে পারে। কারণ, প্রিমিয়াম ব্র্যান্ডগুলোর মতো লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো শুধু পণ্যের মানের দিক দিয়েই ডিফারেনশিয়েট করেন না। ডিফারেনশিয়েট করার মতো তাদের আরও অনেক ফ্যাক্টর থাকতে পারে যেমন - রেয়ারিটি, ব্র্যান্ডের ঐতিহ্য ইত্যাদি। অ্যাপলের উদাহরণ দিয়েই এই ব্যাপারটা ভালোভাবে বোঝা যাবে।

অ্যাপল তাদের আইফোনের জন্য সুপরিচিত। অন্যান্য স্মার্টফোনের তুলনায় আইফোনের সিকিউরিটি এবং পার্টসের মান ভালো হওয়ায় অন্যান্য স্মার্টফোনের তুলনায় আইফোনের দামও কয়েকগুণ বেশি হয়ে থাকে। আবার আইফোনের কিছু লিমিটেড এডিশন অ্যাপল প্রতিবছর বাজারে ছাড়ে যেমন - গোল্ড এডিশন। এখন এই স্বর্ণে মোড়ানো আইফোন তো সবার প্রয়োজন নয়, আর এগুলো দাম এতো বেশি যে যেকেউ চাইলেই এটি ক্রয় করতে পারবেন না। আবার স্বর্ণের পরিমাণ সীমিত হওয়ার কারণে অ্যাপল চাইলেই এই পণ্য অনেক বেশি পরিমাণে তৈরি করতে পারবে না। তাই সাধারণ আইফোন হচ্ছে একটি প্রিমিয়াম প্রোডাক্ট এবং গোল্ড এডিশন আইফোন হচ্ছে একটি লাক্সারি প্রোডাক্ট।

কিভাবে একটি বিলাসবহুল ব্র্যান্ড তৈরি করবেন?

আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে যে লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো জাদুকরের মতো আমাদের মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণ করে তাদের প্রতি আমাদের আকৃষ্ট করে তোলে। তবে এই কাজটি করার পেছনে তাদের বেশ ভালো পরিমাণ সময় এবং শ্রম খরচ করে প্রথমেই একটি লাক্সারি ইমেজ তৈরি করে নিতে হয়। নির্দিষ্ট কিছু স্টেপ ফলো করার মাধ্যমে তারা এই কাজটি করে থাকেন।

১। একটি নির্দিষ্ট নিশ সিলেক্ট করা

আগেই বলেছি যে বিলাসবহুল ব্র্যান্ডগুলো খুব ছোট পরিমাণ অডিয়েন্সকে টার্গেট করে নিজেদের পণ্য তৈরি করে এবং সেই হিসেবে ব্র্যান্ডিং করে। এই জন্য আপনাকেও এমনই একটি নিশ সিলেক্ট করতে হবে যার অডিয়েন্স এবং চাহিদা দুটোই খুব সীমিত। যে কেউ চাইলেই এই ক্যাটাগরির পণ্য এফোর্ড করতে পারবে না এবং যাদের আর্থিক সামর্থ্য অথবা সোশ্যাল স্ট্যাটাস বজায়ে রাখার প্রতি ঝোক রয়েছে শুধু তারাই হবেন আপনার কাস্টমার। অথবা আপনি চাইলে যেকোনো নিশেই একটি লাক্সারি ব্র্যান্ড দাড় করিয়ে ফেলতে পারেন। শুধু খেয়াল রাখতে হবে যে সেই পণ্যের চাহিদা যেন কিছুটা হলেও থাকে। একেবারেই চাহিদা নেই বা কেউই এফোর্ড করতে পারবেন না এমন পণ্য বাজারে নিয়ে আসার কোনো মানে হয় না।

তাই যেই নিশে আপনি কাজ করতে চাইছেন সেই নিশের মার্কেট রিসার্চ আপনাকে খুব সন্তর্পণে চালিয়ে যেতে হবে। এমন কিছু নিশ হতে পারেন, ছেলেদের অফিশিয়াল পোশাকের লাক্সারি ব্র্যান্ড, বইয়ের লাক্সারি এডিশনের ব্র্যান্ড, লাক্সারি স্পা ও বডি ম্যাসাজ পার্লার ইত্যাদি।

২। ডিফারেনসিয়েশন

একটি নির্দিষ্ট মার্কেট সেগমেন্টকে আকৃষ্ট করতে ডিফারেনসিয়েশন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর। আপনার ব্র্যান্ড যদি আর দশটি ব্র্যান্ডের মতোই হয়ে থাকে তাহলে তো মানুষের আপনার ব্র্যান্ডের কাছে আসার মতো কোনো কারণই রইলো না। তাই মোটামুটি সকল ব্র্যান্ডকেই কোনো না কোনো ধরণের ডিফারেনসিয়েশন স্ট্র্যাটেজি ফলো করতে হয়। তবে লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলোর ডিফারেনসিয়েশন একটু ভিন্নভাবে করা হয়। অন্যান্য ব্র্যান্ড যেখানে ডিফারেনসিয়েশন করে প্রোডাক্টের মান বা ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে, সেখানে লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো ডিফারেনশিয়েট করে ব্র্যান্ড এক্সপেরিয়েন্স-এর উপর নির্ভর করে। আগেই বলেছি যে, লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলোর পণ্য অন্যান্য ব্র্যান্ডগুলোর চাইতে মানে ভালো হতেই হবে এমন কোনো নিয়ম নেই। তবে আপনার ব্র্যান্ডটি এক্সপেরিয়েন্স করার মাধ্যমে যাতে কাস্টমারের সোশ্যাল স্ট্যাটাস বজায় থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

রোলেক্স-এর ঘড়ি যে আর দশটি ঘড়ির থেকে ভালো এমন কিছু কিন্তু নয়। তবে রোলেক্স-এর ঘড়ি পুরোপুরি হ্যান্ডমেইড। যা অন্যান্য ব্র্যান্ডের ঘড়িতে নেই। এর ফলে রোলেক্স-এর ঘড়ি যারা ব্যবহার করেন, এই বিষয়টি এক্সপেরিয়েন্স করে তারা গর্বিত অনুভব করতে পারেন। এখানেই হচ্ছে লাক্সারি এবং সাধারণ ব্র্যান্ডের ডিফারেনসিয়েশনের মাঝে পার্থক্য।।

৩। আপনার প্রোডাক্টের ভ্যালু নির্ধারণ

লাক্সারি ব্র্যান্ড তৈরির আরো একটি অত্যাবশ্যকীয় ধাপ হচ্ছে আপনার প্রোডাক্টের ভ্যালু নির্ধারণ করা। আপনার নিজের জানতে হবে এবং আপনার কাস্টমারদের জানাতে হবে যে, আপনার প্রোডাক্ট কাস্টমারদের জীবন কোন ধরণের ভ্যালু যোগ করবে। এটা হতে পারে কোনো ফাংশনাল ভ্যালু অথবা প্রতীকি ভ্যালু। ফাংশনাল ভ্যালু গুলো হচ্ছে মানে ভালো হওয়া, ভালো পারফর্ম করা ইত্যাদি। আবার প্রতীকি ভ্যালু হচ্ছে কোনো একটি গল্প বা আভিজাত্য। লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো সাধারণত প্রতীকি ভ্যালুর উপরেই বেশি নির্ভর করে।

রোলেক্স-এর উদাহরণেই যদি আমরা ফেরত আসি, তাহলে দেখতে পারবো যে রোলেক্স ঘড়ি হাতে তৈরি করা হচ্ছে নাকি রোবটের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে তা আসলে কাস্টমারের জীবনে কোনো ফাংশনাল ভ্যালু যোগ করেনা। ঘড়ির মূল কাজ হচ্ছে, সময় বলা। সেটা ঠিকঠাকভাবে বলতে পারলেই হলো। তবে তারা তাদের হ্যান্ডমেইড ঘড়ি তৈরির কাহিনীটাই এমনভাবে কাস্টমারদের জানিয়েছে যে, কাস্টমাররা মনের অজানতেই রোলেক্স ঘড়ি ক্রয় করার স্বপ্ন দেখা শুরু করে দেন।

এভাবেই, আপনিও আপনার লাক্সারি ব্র্যান্ডে এমনই কিছু ব্যতিক্রমী বিষয় যোগ করতে পারেন অথবা আপনার ব্র্যান্ডের সাথে জড়িত কোনো গল্পকে আকর্ষণীয় রুপে তুলে ধরতে পারেন। এই গল্পই আপনার লাক্সারি ব্র্যান্ডিং-এ সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবে।

৪। স্বাতন্ত্র্য তৈরি করা

আপনার প্রোডাক্ট যে অন্যসব প্রোডাক্টের চাইতে স্বতন্ত্র এই গল্পটা আপনি কিভাবে আপনার কাস্টমারদের কাছে পৌছে দিবেন সেই বিষয়টিই এখানে ঠিক করতে হবে। স্বতন্ত্রতা বিভিন্ন ধরণের হতে পারে যেমন - আপনার প্রোডাক্ট অনেক রেয়ার, আপনার প্রোডাক্ট তৈরি করার প্রসিডিউর ভিন্ন, আপনার প্রোডাক্ট খুব অল্প পরিমাণে তৈরি করা হয় ইত্যাদি। একইসময়ে একাধিক স্ট্র্যাটেজি ফলো না করে যেকোনো একটি স্ট্র্যাটেজি নিয়ে কাজ করতে হবে।

যখন আপনি বুঝে ফেলবেন যে আপনার প্রোডাক্টটি ঠিক কোন দিক দিয়ে স্বতন্ত্র, তারপর আপনাকে সেই গল্পটি কাস্টমারদের কাছে খুব ভালোভাবে পৌছে দিতে হবে।

৫। কাস্টমার কমিউনিটি তৈরি করা এবং কথা দিয়ে কথা রাখা

কোনো সফল ব্র্যান্ড একদিনেই তৈরি হয় না, বরং বছরের পর বছর ধরে শ্রম বিনিয়োগ করার পরই একটি সফল ব্র্যান্ড তৈরি করা সম্ভব হয়ে ওঠে। লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলো আসলেই সফল হয়ে ওঠে তখন, যখন তারা একটি লয়াল কাস্টমার বেইজ তৈরি করে ফেলতে সক্ষম হয়। যেহেতু লাক্সারি ব্র্যান্ডগুলোর কাস্টমার বেইজ খুব ছোট হয়ে থাকে, তাই একই কাস্টমারের কাছে তাদের বার বার পণ্য বিক্রয় করতে হয়। কাস্টমার যদি তাদের কাছে আসা বন্ধ করে দেন তাহলেই তাদের ব্যবসায় শুরু হয়ে যায় মন্দা। তাই লয়াল কাস্টমার বেইজ তৈরি করার দিকে মনোযোগী হতে হবে।

এই কাজটি করার একটি সহজ উপায় হচ্ছে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। অনেক ব্র্যান্ডই কাস্টমারদের অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকে। তবে দিনশেষে বেশিরভাগ প্রতিশ্রুতিই ব্র্যান্ডগুলো রাখতে পারে না। এতে করে ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনাকে চেষ্টা করতে হবে সর্বদা কথা দিয়ে কথা রাখার। আপনার ব্র্যান্ড যখন একটি কথা দিবে, তখন আপনার ব্র্যান্ডের প্রতি কাস্টমারদের এক্সপেক্টেশন তৈরি হবে। সেই এক্সপেক্টেশন আপনি যতো বেশি রক্ষা করতে পারবেন আপনার ব্র্যান্ডের সাথে কাস্টমারের কানেকশন ততোই মজবুত হবে।

পরিসংহার

আমাদের ইকোসিস্টেমে ইতোমধ্যেই এতো বেশি পরিমাণে লাক্সারি ব্র্যান্ড রয়েছে যে আরো একটি লাক্সারি ব্র্যান্ড তৈরি করার ভাবনা অনেক বেশি রিস্কি মনে হতে পারে। তবে আপনার কাছে যদি ভালো গল্প এবং ভালো নিশ সিলেক্ট করা থাকে এবং আপনি জানেন যে সেই গল্পটি কিভাবে কাস্টমারদের কাছে পৌছে দিতে হবে তাহলেই কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়। মার্কেটে অনেক লাক্সারি ব্র্যান্ড থাকলেও প্রতিনিয়তই নতুন নতুন ব্র্যান্ড তৈরি হচ্ছে এবং মার্কেটে জায়গা করে নিচ্ছে। তাই সঠিক পথ অবলম্বন করলে আপনার জন্যেও কাজটি বেশি কঠিন হবে না বলেই আশা করছি।

  • https://www.retaildogma.com/luxury-brand/
  • https://martinroll.com/resources/articles/strategy/five-steps-to-build-a-luxury-brand/
  • https://www.socreative.co.uk/how-to-create-a-luxury-brand/
Next to read
Canvas & Methods
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)

ইম্প্যাথি ম্যাপিং মূলত একধরনের ট্যুলস। এটি গ্রাহকদের ভাবনা-চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি, অনুভব, উপলব্ধি সহ নানাবিধ তথ্য, উপাত্ত এর সমন্বয়ে গঠিত সুশৃঙ্খল এবং সুবিন্যস্ত একটি চার্ট। উল্লেখিত বিষয় সমূহ সম্পর্কিত তথ্য উপাত্তের খুব চমৎকার একটা ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন পাওয়া যায় এই ইম্প্যাথি ম্যাপিং এর মাধ্যমে। যা মূলত আপনার কাঙ্ক্ষিত গ্রাহককে ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করে।

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
লিন ক্যানভাস মডেল (Lean Canvas Model)
Canvas & Methods
লিন ক্যানভাস মডেল (Lean Canvas Model)
বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
Business
বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
লোগোর উদাহরন (Example of Logos)
Logo
লোগোর উদাহরন (Example of Logos)
CSR বা Corporate Social Responsibility কী?
Business
CSR বা Corporate Social Responsibility কী?
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?
Economics
ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?
ই-কমার্স: অনলাইন ব্যবসা
E-Commerce
ই-কমার্স: অনলাইন ব্যবসা
অ্যাম্বুশ মার্কেটিং (Ambush Marketing)
Marketing
অ্যাম্বুশ মার্কেটিং (Ambush Marketing)