কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ - সংজ্ঞা এবং উদাহরণ

456
article image

যখন কোনো প্রতিষ্ঠান তার প্রতিযোগীদের থেকে কম মূল্যে আরো ভালো মানের পণ্য বা সেবা উৎপাদন করে, তখন তাকে কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ বলা হয়। কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ-এর মাধ্যমে কোম্পানী তার পণ্য বা সেবা অন্যদের থেকে ভিন্ন হিসেবে উপস্থাপন করার সুযোগ পেয়ে যায় এবং এতে করে কাস্টমারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পায়।

Key Points

  • কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ বলতে কোম্পানীর এমন বৈশিষ্ট্য বোঝানো হয় যা ঐ কোম্পানীকে মার্কেটের অন্যান্য কোম্পানীদের থেকে স্বতন্ত্র করে তোলে।
  • কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় কাস্টমাররা উক্ত পণ্য বা সেবার জন্য ঠিক কতো টাকা পে করতে রাজি, তা ঠিক করার সময় যে ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করেন তাকে কোম্পানীর ভ্যালু প্রপোজিশন বলে।
  • মাইকেল পর্টার তার “কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজঃ ক্রিয়েটিং এন্ড সাস্টেইনিং সুপেরিয়র পারফরম্যান্স” নামক বইতে মূলত ৩ ধরণের কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজের কথা বলেছেন।
  • কই প্রোডাক্ট যদি দুটি কোম্পানী প্রস্তুত করে থাকে তাহলে যেই কোম্পানী ব্র্যান্ড ইমেজ ভালো সেই কোম্পানীর পণ্য’ই ক্রেতারা বেশি প্রিফার করে থাকেন।

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে অবাধ তথ্য ব্যবস্থা এবং সরকার প্রদত্ত বিভিন্ন ইনসেনটিভের কারণ মানুষ কোম্পানী প্রতিষ্ঠার দিকে বেশি ঝুকছেন। যার ফলে বাজারে তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিযোগীতা। কোম্পানীগুলোকে এখন শুধু দেশীয় প্রতিযোগীদের কথা ভাবলেই হয় না, একই সাথে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগীদের দিকে রাখতে হচ্ছে বিশেষ নজর। তাই অন্য সকল প্রতিষ্ঠানের থেকে নিজেদের পণ্য বা সেবাকে আলদা হিসেবে তুলে ধরতে কোম্পানীগুলো প্রতিনিয়ত চেষ্টা করে চলেছে নতুন নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আসার।

প্রতিযোগীদের থেকে নিজের পণ্য বা সেবাকে স্বতন্ত্র হিসেবে তুলে ধরার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জন করা। এর মাধ্যমে হাজারো পণ্যের ভীড়েও যেকোনো পণ্য ক্রেতা আকর্ষণ করতে সক্ষম হয়। তাই আজকের লেখায় আমরা জানবো কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ কি এবং কিভাবে কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জন করা যায়।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ কী?

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ বলতে সেই পরিস্থিতিকে বোঝানো হয় যখন একটি কোম্পানী তার প্রতিযোগীদের থেকে এক বা একাধিক ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকে। অর্থাৎ, কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ বলতে কোম্পানীর এমন বৈশিষ্ট্য বোঝানো হয় যা ঐ কোম্পানীকে মার্কেটের অন্যান্য কোম্পানীদের থেকে স্বতন্ত্র করে তোলে। উদাহরণস্বরুপ, একটি কোম্পানী তার ব্র্যান্ড ইমেজ, প্রযুক্তিগত পারদর্শিতা অথবা সাপ্লাই চেইনের মাধ্যমে অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকতে পারে।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জনের মাধ্যমে কোম্পানী তার সম্ভাব্য কাস্টমারদের কাছে নিজেদের পণ্য বা সেবা আকর্ষণীয় করে তুলতে পারে। এর মাধ্যমে উক্ত কোম্পানী তার কাস্টমারদের তুলনামূলক কম মূল্যে পণ্য দেয়া, ভালো মানের পণ্য দেয়া অথবা উন্নত কাস্টমার কেয়ার প্রোভাইড করতে পারে। অর্থনীতির ভাষায় একে ভ্যালু প্রপোজিশন’ও বলা হয়ে থাকে।

কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় কাস্টমাররা উক্ত পণ্য বা সেবার জন্য ঠিক কতো টাকা পে করতে রাজি, তা ঠিক করার সময় যে ফ্যাক্টরগুলো বিবেচনা করেন তাকে কোম্পানীর ভ্যালু প্রপোজিশন বলে। উদাহরণস্বরুপ, একটি গাড়ি ক্রয় করার সময় ক্রেতা গাড়ির রঙ, নিরাপত্তা, নির্ভরযোগ্যতা এবং দাম ইত্যাদি ফ্যাক্টর বিবেচনা করেন।

কোনো কোম্পানী যখন উপরিউক্ত সুবিধাগুলো থেকে তার প্রতিযোগীদের তুলনায় এক একাধিক সুবিধা বেশি প্রদান করতে পারে তখন তার কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ রয়েছে বলে মনে করা হয়ে। উদাহরণস্বরুপ, কোনো কোম্পানী গাড়ির বিক্রয়ের পর ২০ বছরের জন্য ফ্রি সার্ভিসিং সুবিধা প্রদান করছে। কিন্তু তার প্রতিযোগীরা শুধু ২ বছরের জন্য ফ্রি সার্ভিসিং সুবিধা প্রদান করছে। তখন কাস্টমার কেয়ারের ক্ষেত্রে প্রথম কোম্পানীটির কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ আছে বলে বুঝতে হবে।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজি কতো প্রকার?

মাইকেল পর্টার তার “কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজঃ ক্রিয়েটিং এন্ড সাস্টেইনিং সুপেরিয়র পারফরম্যান্স” নামক বইতে মূলত ৩ ধরণের কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজের কথা বলেছেন। সেগুলো হচ্ছে কস্ট লিডারশিপ, ডিফারেনসিয়েশন লিডারশিপ এবং ফোকাস। এখানে ফোকাস’কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে, কস্ট এবং ডিফারেনসিয়েশন।

কস্ট লিডারশিপ

যখন কোনো কোম্পানী তার প্রতিযোগীদের থেকে কম দামে পণ্য উৎপাদন এবং তা বিক্রয় করতে পারে তখন তার কস্ট লিডারশিপ কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ থাকে। যেহেতু এই স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কোম্পানীগুলো তাদের পূর্ণ মনোযোগ খরচ কমানোর দিকে দিয়ে থাকে তাই অনেক সময় বাজে কোয়ালিটি এবং নির্ভরযোগ্যতার কারণে তাদের ব্র্যান্ড ইমেজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

এই স্ট্র্যাটেজিতে কোম্পানী তাদের অপারেশনাল দক্ষতা বৃদ্ধি করার চেষ্টা করে। যার ফলে তাদের প্রতি ইউনিটে উৎপাদন ব্যয় অনেক কমে আসে। এই কাজটি তারা করে কর্মী সংখ্যা কমিয়ে আনা, কর্মীদের ট্রেইন করা অথবা কোনো বিজনেস প্রসেসকে স্বয়ংক্রিয় করে ফেলার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে মূল ফোকাস ভালো মানের পণ্য উৎপাদনের দিকে না রেখে কম মূল্যে পণ্য উৎপাদনের দিকে রাখা হয়।

ডিফারেনসিয়েশন লিডারশিপ

এই স্ট্র্যাটেজি অনুযায়ী কোম্পানীগুলো তাদের প্রতিযোগীদের থেকে ভিন্ন কিছু করার মাধ্যমে কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পাওয়ার চেষ্টা করে। নিজের ভ্যালু প্রপোজিশনে ভিন্নতা নিয়ে আসার মাধ্যমে তারা কাস্টমারদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করে। উদাহরণস্বরুপ, কোনো প্রোডাক্ট ক্যাটাগরির প্রাইস পয়েন্ট যদি অনেক বেশি থাকে তাহলে কোম্পানী উক্ত প্রোডাক্ট ন্যায্য মূল্যে বিক্রয়ের মাধ্যমে প্রতিযোগীদের থেকে নিজেদের আলাদা করে ফেলে।

ডিফারেনসিয়েশন লিডারশিপের মাধ্যমে কোম্পানীগুলো মার্কেটে নতুন নতুন ট্রেন্ড নিয়ে আসার চেষ্টা করে। যেমন - আইফোন লঞ্চ করার মাধ্যমে অ্যাপল সর্বপ্রথম টাচ বেইজড স্মার্টফোনের ট্রেন্ড শুরু করেছিল। এই ডিফারেনসিয়েশন স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে তারা নিজেদের ব্র্যান্ড ইমেজ পুনরুদ্ধার করে এবং স্মার্টফোন মার্কেটে নিজেদেরকে লিডার হিসেবে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

ডিফারেনসিয়েশন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে যেমন - হাই কোয়ালিটি, উন্নত কাস্টমার কেয়ার, নতুন নতুন ফিচার এবং আরো অনেক কিছু। বিশেষত, এমন সকল গুণ যা একটি পণ্য বা সেবাকে তার প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা করে তার সবই ডিফারেনসিয়শনের অন্তর্ভূক্ত। এই স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে মূলত সেই সকল কাস্টমারদের টার্গেট করা হয় যারা একটু ভিন্ন ধরণের পণ্য বা সেবা ক্রয় করতে আগ্রহী।

ডিফারেনসিয়েশন খুবই ভালো স্ট্র্যাটেজি হলেও একমাত্র এটির দিকে মনোযোগ দেয়াই যথেষ্ট নয়। ডিফারেনসিয়েশনের পাশাপাশি ভালো মার্কেটিং-এর দিকেও ফোকাস করতে হয়। নতুবা, বেশিরভাগ কাস্টমার জানতেই পারবেন না যে আপনার পণ্য বা সেবা কিভাবে অন্যদের থেকে আলাদা।

ফোকাস স্ট্র্যাটেজি

উপরিউক্ত দুই ধরণের স্ট্র্যাটেজি কম্বাইন করে ফোকাস স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা হয়। অর্থাৎ, এখানে ডিফারেনসিয়েশন এবং কস্ট লিডারশিপ উভয়ই বিদ্যমান থাকে। শুধু পার্থক্য হচ্ছে, উপরিউক্ত দুই স্ট্র্যাটেজিতে একটি বড় মার্কেটকে টার্গেট করা হয়। অন্যদিকে, ফোকাস স্ট্র্যাটেজিতে খুব ছোট একটি নিশ টার্গেট করে পণ্য বা সেবা প্রস্তুত করা হয়ে থাকে।

যেহেতু খুব ছোট একটি মার্কেট সেগমেন্ট টার্গেট করে পণ্য বা সেবা প্রস্তুত করা হচ্ছে তাই সম্পূর্ণ ফোকাস থাকে কিভাবে খুব সীমিত মূল্যে একটু ভিন্ন ধরণের প্রোডাক্ট অফার করা যায় সেইদিকে। যেহেতু এই সেগমেন্টে প্রতিযোগীতা খুবই কম থাকে, তাই ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা খুব সহজেই এই মার্কেটে এন্ট্রি নিয়ে বাজার দখল করতে পারেন।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজের কিছু উদাহরণ

১। ব্র্যান্ড ইমেজ

একটি ভালো ব্র্যান্ড ইমেজ তৈরি করার মাধ্যমে যেকোনো কোম্পানী কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পেতে পারে। একই প্রোডাক্ট যদি দুটি কোম্পানী প্রস্তুত করে থাকে তাহলে যেই কোম্পানী ব্র্যান্ড ইমেজ ভালো সেই কোম্পানীর পণ্য’ই ক্রেতারা বেশি প্রিফার করে থাকেন।

২। উন্নত কাস্টমার সেবা

কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করার সময় ক্রেতারা অবশ্যই আফটার সেলস সার্ভিস বিবেচনায় নিয়ে থাকেন। যদি কোনো কোম্পানী তার প্রতিযোগীদের তুলনায় উন্নত আফটার সেলস সার্ভিস প্রদান করে থাকে তাহলে কাস্টমাররা একটু বেশি টাকা দিয়ে হলেও সেই কোম্পানীর পণ্য’ই ক্রয় করতে চাইবেন।

৩। করপোরেট ম্যানেজমেন্ট

ভালো পণ্য বা সেবা উৎপাদন করতে চাইলে অবশ্যই একটি ভালো এবং দক্ষ ওয়ার্কফোর্স প্রয়োজন। কোম্পানীর ম্যানেজাররা যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হোন তাহলে অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে যাওয়া যায়।

৪। উন্নত ডিস্ট্রিবিউশান নেটওয়ার্ক

আপনার পণ্য যদি আপনি দেশের এমন সব স্থানে পৌছে দিতে পারেন যেখানে আপনার প্রতিযোগীরা পৌছাতে পারছেন না, অথচ সেই স্থানে পণ্যের চাহিদা রয়েছে তাহলে আপনার বিক্রয় এমনিতেই বৃদ্ধি পাবে। এছাড়াও কম সময়ে এবং কম খরচে পণ্য পৌছে দেয়ার মাধ্যমে’ও কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়।

৫। বড় পরিসরে উৎপাদন

আমরা জানি, কোনো পণ্য বা সেবার উৎপাদন যতো বেশি পরিমাণে করা যায়, তার প্রতি ইউনিটে উৎপাদন খরচ ততো বেশি কমানো সম্ভব হয়। তাই আপনি যদি প্রতিযোগীদের থেকে বেশি পরিমাণে পণ্য উৎপাদন করতে পারেন তাহলে অবশ্যই পণ্যটি আপনি প্রতিযোগীদের থেকে কম দামে বাজারে ছাড়ার কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যাবেন।

৬। লোকেশান

সাপ্লাইয়ারদের কাছাকাছি প্রোডাকশন প্লান্ট স্থাপনের মাধ্যমেও কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। এতে করে পরিবহন খরচ অনেক হ্রাস পায় এবং কাঁচামাল সংগ্রহজনিত ঝামেলা কমে যায়। যার ফলে আরো কম সময়ে পণ্য উৎপাদন সম্ভব হয়। এছাড়াও রিটেইলারদের কাছাকাছি গোডাউন স্থাপনের মাধ্যমে খুব কম সময়ে পণ্য ডেলিভারি করা যায়।

৭। প্রযুক্তিগত দক্ষতা

আপনার বিজনেস প্রসেসগুলোকে অটোমেট করে ফেলার মাধ্যমেও কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ পেয়ে যেতে পারেন। এখনকার সময়ে বেশিরভাগ কোম্পানীই এই স্ট্র্যাটেজি ফলো করছে। এমন একটি মার্কেট, যেখানে বেশিরভাগ ব্যবসায় কার্যক্রম ম্যানুয়ালি সম্পাদন করা হয় সেখানে অটোমেশন নিয়ে এসে আপনি সহজেই আপনার পণ্য বা সেবার দক্ষতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি কর‍তে পারেন।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ-এর গুরুত্ব

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ আপনার ব্যবসায়কে অন্যদের থেকে স্বতন্ত্র করে তুলতে সাহায্য করে। যেহেতু এর মাধ্যমে কম মূল্যে ভালো মানের পণ্য বা সেবা ডেলিভার করা যায়, তাই কাস্টমারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা বেড়ে যায়।

তথ্য-প্রযুক্তির এই সময়ে কোম্পানীগুলো শুধু দেশীয় প্রতিযোগীদেরই মোকাবেলা করছে না, একই সাথে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকেও টেক্কা দিতে হচ্ছে। আগে থেকেই কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জন করা সম্ভব হলে এই কাজটি অনেক সহজ হয়ে যায়।

কিছু বেশি টাকা খরচ করে হলেও ক্রেতারা এখন একটু ভালো মানের পণ্য বা সেবা পেতে চান। কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জন করার মাধ্যমে পণ্য বা সেবার ভ্যালু প্রপোজিশন বাড়িয়ে তোলা সম্ভব হয়। বাজারে থাকা অনেক পণ্যের ভীড়ে ক্রেতারা আপনার পণ্যটিই ক্রয় করবেন, সেই সম্ভাবনা বেড়ে যায়।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অর্জনের মাধ্যমে ব্র্যান্ড ভ্যালু ক্রিয়েট করা যায়, যা অনেক টাকা খরচ করেও অন্যরা তৈরি করতে পারে না। কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ থাকলে আপনার পণ্য বা সেবা ক্রেতাদের মস্তিষ্কে একটি ইউনিক স্পট দখল করে ফেলতে সক্ষম হয়। উদাহরণস্বরুপ, অ্যাপল কোম্পানী ব্র্যান্ড ভ্যালু এখন প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার। তারা ছোট ছোট অনেক কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ তৈরির মাধ্যমেই কিন্তু এই ভ্যালুয়েশন অর্জন করতে পেরেছেন।

কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ vs কম্পেরিটিভ অ্যাডভান্টেজ

একটি কোম্পানী যখন তার প্রতিযোগীদের থেকে কম মূল্যে পণ্য উৎপাদন এবং বিক্রয় করতে পারে তখন তার কম্পেরিটিভ অ্যাডভান্টেজ আছে বলে বুঝতে হবে। যেই কোম্পানীর পণ্যের মূল্য তুলনামূলক কম, ক্রেতারা সেই কোম্পানীর পণ্যই ক্রয় করে থাকেন। বড় পরিসরে উৎপাদন, দক্ষ কর্মী, ভালো লোকেশান ইত্যাদির মাধ্যমে কম্পেরিটিভ অ্যাডভান্টেজ পাওয়া যায়। এই স্ট্র্যাটেজি শুধু পণ্যের মূল্য কম হওয়াকেই নির্দেশ করে।

অন্যদিকে, কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ-এর ক্ষেত্রে কম মূল্যে ভালো মানের পণ্য সরবরাহ করাকে নির্দেশ করা হয়। কারণ, একটু বেশি টাকা খরচ করে হলেও ভালো মানের পণ্য চান, মার্কেটে এমন ক্রেতার সংখ্যা’ই বেশি। তাই এই স্ট্র্যাটেজিতে পণ্যের মূল্য কমানোর পাশাপাশি পণ্যে মান বজায়ে রাখার দিকে জোর দেয়া হয়।

পরিসংহার

যেকোনো প্রকার কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ অবশ্যই আপনাকে প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে দিবে, তবে তার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে আপনাকে অবশ্যই উপযুক্ত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করতে হবে। ইফেক্টিভ মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ব্যতীয় কাস্টমাররা জানতে পারবেন না যে কেনো তার আপনার পণ্যটিই ক্রয় করা উচিত। তাই আপনার কোম্পানীর কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ সিলেক্ট করার সময় অবশ্যই মার্কেটিং ফ্যাক্টর বিবেচনা করবেন।

  • https://boycewire.com/competitive-advantage-definition/#
  • https://www.investopedia.com/terms/c/competitive_advantage.asp
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/knowledge/strategy/competitive-advantage/
  • https://www.thebalance.com/what-is-competitive-advantage-3-strategies-that-work-3305828
  • কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ স্ট্র্যাটেজি
  • “কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজঃ ক্রিয়েটিং এন্ড সাস্টেইনিং সুপেরিয়র পারফরম্যান্স” – মাইকেল পর্টার
  • অ্যাপল এর উদাহরণ
  • https://www.forbes.com/sites/kurtbadenhausen/2019/05/22/the-worlds-most-valuable-brands-2019-apple-on-top-at-206-billion/#21cc4d637c2d
Next to read
Business Models
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)

শেয়ারিং ইকোনমি মূলত দুই পক্ষের (Peer to Peer) সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি বিজনেস মডেল, যেখানে মূল প্রতিষ্ঠানটি একটি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। এক্ষত্রে প্রতিষ্টান গুলো মূলত দুই পক্ষ অর্থাৎ সেবা প্রদানকারী এবং সেবা গ্রহণকারীদের মাঝে প্রযুক্তির সহায়তায় নিজস্ব কৌশলে সংযোগ করে দেয়।

বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
Business
বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
Logo
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
অর্থনীতি কী?
Economics
অর্থনীতি কী?
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
Business Law
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
Marketing
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
বিক্রয় বৃদ্ধি করার ৬টি নীতি
Sales
বিক্রয় বৃদ্ধি করার ৬টি নীতি
Generally Accepted Accounting Principle (GAAP)
Accounting
Generally Accepted Accounting Principle (GAAP)