Monetary policy (Definition, Types, Examples, & Facts)

1647
article image

মনিটারি পলিসি হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দ্বারা তৈরি এক সেট নিয়মকানুন যার মাঝে ঐ অর্থবছরে দেশে মুদ্রার সরবরাহ, সুদের হার, ব্যাংকের রিজার্ভের হার কেমন হবে তা নির্ধারণ করা হবে। সাধারণত ৩টি টুলের মাধ্যমে যথা - ব্যাংক রেট, খোলাবাজার নীতি ও ব্যাংকের রিজার্ভের হার নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক দুই ধরণের মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করতে পারে, যথা - সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি ও সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি। মুদ্রানীতি মূল উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে রাখা, বেকারত্বের হার কমানো ও এক্সচেঞ্জ রেটকে নিয়ন্ত্রণে রাখা।

Key Points

  • মুদ্রানীতি দ্বারা সাধারণত অর্থনীতিতে মুদ্রার মোট পরিমাণ এবং মুদ্রার বিভিন্ন চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়।
  • কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেই সুদের হারে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোকে এই ঋণ প্রদান করে তাকে ব্যাংক রেট বলা হয়।
  • সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি একটি নির্দিষ্ট সময় ও মাত্রার বেশি অনুসরণ করলে মুদ্রাস্ফীতির হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে।
  • মনিটারি পলিসি ও ফিসকাল পলিসির মাঝে মূল পার্থক্য হচ্ছে এই যে মনিটারি পলিসি কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৈরি করে থাকে। আর ফিসকাল পলিসি সরকার তৈরি করে থাকে।

ভূমিকা

হঠাৎ করেই দেখা যায় যে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দিয়েছে। সবাই আশংকা করছে যে এখন ব্যাংক থেকে ঋণ গ্রহণ করা আরো কঠিন হয়ে যাবে এবং তাতে করে সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পাবে। কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো সিদ্ধান্তের কারণে সাধারণ জনগণ কেনো প্রভাবিত হচ্ছে? কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তো সাধারণ জনগণের সাথে কোনো লেনদেন করে না। এমনটি হয়ে থাকে কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যেকোনো সিদ্ধান্ত অর্থনীতিতে একটি চেইন রিয়েকশন তৈরি করে। আর তার শেষ প্রভাব সাধারণ জনগণের উপরেই এসে পরে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নেয়া যেকোনো সিদ্ধান্তই তার মনিটারি পলিসির অংশ। অর্থাৎ, এসব সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার মনিটারি পলিসি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে। তাই, আজকের লেখায় আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটারি পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো।

মনিটারি পলিসি কী?

মনিটারি পলিসিকে বাংলায় মুদ্রানীতি বলা হয়। মুদ্রানীতি হচ্ছে মূলত এক ধরণের নিয়ম-কানুন যা কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরের জন্য তৈরি করে এবং এর মাধ্যমে দেশে মুদ্রার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের চেষ্টা করা হয়। মুদ্রানীতির সবচেয়ে বড় দুটি টুল হচ্ছে ব্যাংক রেট এবং ব্যাংকের রিজার্ভের হার। এই দুটির পাশাপাশি আরো কিছু টুল ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কিছু দীর্ঘমেয়াদি অবজেক্টিভ অর্জন করার চেষ্টা করে যার মাঝে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং উচ্চ কর্মসংস্থানের হার অর্জন করা অন্যতম। বাংলাদেশে মুদ্রানীতি তৈরি করে থাকে বাংলাদেশ ব্যাংক।

মনিটারি পলিসি কীভাবে কাজ করে?

মুদ্রানীতি দ্বারা সাধারণত অর্থনীতিতে মুদ্রার মোট পরিমাণ এবং মুদ্রার বিভিন্ন চ্যানেল নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হয়। যেকোনো অর্থবছরের মুদ্রানীতি আসলে কি হবে তা নির্ধারণ করা হয় বিভিন্ন অর্থনৈতিক মানদন্ড দেখে যেমন - জিডিপি, মুদ্রাস্ফীতির হার, বিভিন্ন শিল্পের প্রবৃদ্ধির হার ইত্যাদি। সাধারণত মুদ্রানীতির মাধ্যমে অন্যান্য কমার্শিয়াল ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে কতো শতাংশ সুদের হারে ঋণ গ্রহণ করতে পারবে তা নির্ধারণ করা হয়। কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে কি হারে কি পরিমাণ ঋণ নিতে পারছে তার উপর নির্ভর করে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো সাধারণ জনগণকে ঋণ প্রদান করে থাকে।

এইভাবে সাধারণ জনগণ কি পরিমাণ ঋণ গ্রহণ করতে পারছে তা পরোক্ষভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এতে করে অর্থনৈতিক লেনদেন প্রভাবিত হয়।

আবার মুদ্রানীতি ব্যবহার করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে বিভিন্ন সিকিউরিটি ক্রয় বা বিক্রয় করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এভাবে খোলাবাজারে কেন্দ্রীয় ব্যাংক লেনদেন করলে অর্থনীতিতে মুদ্রার পরিমাণের হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটে। এতে করে পরোক্ষভাবে সাধারণ জনগণের ক্রয়ক্ষমতা প্রভাবিত হয় এবং মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়। ব্যাংক রেট এবং খোলাবাজারে সিকিউরিটি ক্রয়-বিক্রয় ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের জন্য আরো কিছু টুল রয়েছে। সেগুলো নিয়ে একটু পরে আলোচনা করছি।

মুদ্রানীতির বিভিন্ন টুল

টুল বলতে মূলত যেসব উপায়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করে থাকে সেগুলোকে বোঝানো হয়।

১। ব্যাংক রেট

নিজেদের ব্যবসায় পরিচালনা ও স্বচ্ছল থাকার উদ্দেশ্যে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিকট হতে নির্দিষ্ট সুদের হারে ঋণ গ্রহণ করতে পারে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেই সুদের হারে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলোকে এই ঋণ প্রদান করে তাকে ব্যাংক রেট বলা হয়। ব্যাংক রেট মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের অন্যতম মাধ্যম। কারণ, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যদি ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দেয়, তাহলে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে কম ঋণ গ্রহণ করে। আবার একই কারণে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো সাধারণ জনগণকে কম পরিমাণ ঋণ প্রদান করে। এভাবে একটি চেইন রিয়েকশন তৈরি হয়। সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলো যেহেতু কম ঋণ গ্রহণ করতে পারছে, তাই স্বভাবতই বিভিন্ন পণ্য ও সেবার চাহিদা কমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতির হার হ্রাস পায়।

অপরদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ব্যাংক রেট কমিয়ে দিলে এর ঠিক বিপরীত চেইন রিয়েকশন দেখা যায়। ফলে তখন অর্থনৈতিক লেনদেন বৃদ্ধি পায় এবং মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।

২। খোলাবাজার নীতি

এই নীতি অনুযায়ী কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে (মূলত সেকেন্ডারি মার্কেটে) বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সিকিউরিটি যেমন বন্ড ক্রয়-বিক্রয় করা শুরু করে। এই পদ্ধতির উদ্দেশ্য হচ্ছে অর্থনীতিতে মুদ্রার প্রাপ্যতা হ্রাস-বৃদ্ধি করা। যদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজার থেকে সিকিউরিটি ক্রয় করে, তাহলে অর্থনীতিতে আরো বেশি পরিমাণ মুদ্রা প্রবেশ করে। এতে করে পণ্য ও সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। অপরদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক খোলাবাজারে সিকিউরিটি বিক্রয় করলে তার মাধ্যমে অর্থনীতি থেকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বেশ ভালো পরিমাণ টাকা উঠিয়ে নেয়। এতে করে অর্থনীতিতে মুদ্রার প্রাপ্যতা কমে যায়, পণ্য ও সেবার চাহিদা কমে যায় এবং মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পায়।

৩। ব্যাংক রিজার্ভের হার

আমরা জানি যে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো সাধারণ জনগণের থেকে যেই অর্থ ডিপোজিট হিসেবে গ্রহণ করে, তার একটি নির্দিষ্ট অংশ তাকে রিজার্ভ হিসেবে রেখে দিতে হয়। এই হারকে ব্যাংকের রিজার্ভ রিকোয়ারমেন্ট বলা হয় এবং এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নির্ধারণ করে দেয়। ব্যাংকের রিজার্ভের হার বাড়িয়ে দিলে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো আগের তুলনায় সাধারণ জনগণকে কম পরিমাণ ঋণ প্রদান করে এবং এতে করে পরোক্ষভাবে মুদ্রাস্ফীতিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়।

মুদ্রানীতির প্রকারভেদ

মুদ্রানীতি মূলত দুই ধরণের হয়ে থাকে।

১। সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি

সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি সাধারণত অর্থনৈতিক মন্দার সময় ব্যবহার করা হয়। এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রথমেই তার ব্যাংক রেটের হার কমিয়ে দেয়। আর দ্বিতীয়ত অর্থনীতিতে নতুন মুদ্রা ইস্যু করা বৃদ্ধি করে। ফলে জনগণের ঋণ গ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, অর্থনীতিতে মুদ্রার হাতবদল বৃদ্ধি পায় এবং বিভিন্ন পণ্য ও সেবার চাহিদা বৃদ্ধি পায়। তবে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি একটি নির্দিষ্ট সময় ও মাত্রার বেশি অনুসরণ করলে মুদ্রাস্ফীতির হার অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে। যেমন গত কয়েকবছরে বাংলাদেশে হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রমাগত নতুন নোট ইস্যু করার কারণে বাংলাদেশে মুদ্রাস্ফীতির হার অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছিল। তাই তা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশ ব্যাংক ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে আবারো তার ব্যাংক রেটের হার বৃদ্ধি করে।

২। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি

সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি মূলত ব্যবহার করা হয় মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেড়ে গেলে। এই ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তার ব্যাংক রেট বাড়িয়ে দেয় এবং অর্থনীতিতে নতুন মুদ্রা ইস্যু করা কমিয়ে দেয়। এতে করে প্রথমত কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো সাধারণ জনগণকে কম পরিমাণ ঋণ প্রদান করে আর দ্বিতীয়ত নতুন মুদ্রা ইস্যু করা কমিয়ে দেয়ার কারণে দুইভাবেই অর্থনীতিতে মুদ্রার লেনদেন হ্রাস পায়। ফলে জনগণের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং বিভিন্ন পণ্য ও সেবার চাহিদা কমে যায়। ফলে মুদ্রাস্ফীতি আর বাড়তে পারে না। একসময় গিয়ে মুদ্রাস্ফীতি আবার স্বাভাবিক হারে চলে আসলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আবার সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করা শুরু করে।

মনিটারি পলিসি বনাম ফিসকাল পলিসি

মনিটারি পলিসি ও ফিসকাল পলিসির মাঝে মূল পার্থক্য হচ্ছে এই যে মনিটারি পলিসি কেন্দ্রীয় ব্যাংক তৈরি করে থাকে। আর ফিসকাল পলিসি সরকার তৈরি করে থাকে। যদিও দুইধরণের পলিসির মূল উদ্দেশ্যগুলো হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, বেকারত্বের হার কমানো এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা। এই দুই নীতির উদ্দেশ্য একই দেখে মনে হতে পারে যে মনিটারি পলিসি ও ফিসকাল পলিসি একই ধরণের হয়ে থাকে। অর্থাৎ, যখন সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হচ্ছে, তখন স্বাভাবিকভাবেই সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা।

তবে বাস্তব জগতে এমনটি সাধারণত দেখা যায় না। যেকোনো দেশের সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর প্রথমেই রাজস্বনীতি তৈরি করে। আর যেই দল করের হার কমানোর ও অর্থনীতিকে মুক্ত রাখার আশ্বাস দেয়, তাদেরই নির্বাচনে জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফলে সরকার নির্বাচিত হওয়ার পর সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতি তৈরি করে করের হার কমিয়ে দেয় এবং সরকারি খরচ বৃদ্ধি করে। এতে করে রিয়েকশন হিসেবে মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধি পেতে শুরু করে।

এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অনেকটা বাধ্য হয়েই সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি বাস্তবায়ন করতে হয়। এতে করে সম্প্রসারণমূলক রাজস্বনীতি ফলে মুদ্রাস্ফীতির হার আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পায় না বরং তাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। তাই বলা যায় যে, মনিটারি পলিসি ও ফিসকাল পলিসি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে একে অপরের সহযোগী হিসেবে কাজ করে।

মুদ্রানীতির উদ্দেশ্য

নির্দিষ্ট কিছু অর্থনৈতিক অবজেক্টিভ অর্জনের উদ্দেশ্যেই মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও অনুসরণ করা হয়।

১। মুদ্রাস্ফীতি

যেকোনো ধরণের মুদ্রানীতির সর্বপ্রথম উদ্দেশ্যই হচ্ছে মুদ্রাস্ফীতির হারকে প্রভাবিত করা। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ব্যবহার করার মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতির হারকে কমিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। আবার সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক লেনদেনের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়, তাই তা পরোক্ষভাবে মুদ্রাস্ফীতির হার বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

২। বেকারত্ব

মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের আরো একটি পরোক্ষ উদ্দেশ্য হচ্ছে বেকারত্বের হারকে প্রভাবিত করা। সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে দেশের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরো বেশি ঋণ গ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হয়। প্রতিষ্ঠানগুলো ঋণ গ্রহণ করে নিজেদের ব্যবসায় সম্প্রসারণ করে ও নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করে। এতে করে বেকারত্বের হার হ্রাস পায়। অপরদিকে, সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির মাধ্যমে বেকারত্বের হার বেড়ে যেতে পারে। তাই কোনো দেশের সরকারই খুব সহজে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অনুসরণ করতে চায় না।

৩। এক্সচেঞ্জ রেট

দেশীয় ও বৈদেশিক মুদ্রার মাঝে এক্সচেঞ্জ রেটকে প্রভাবিত করাও মুদ্রানীতির কাজ। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কারণে দেশের ভেতর সুদের হার বেড়ে যায় এবং তার ফলে দেশীয় মুদ্রার মান’ও বেড়ে যায়। এখন দেশীয় মুদ্রার মান বৃদ্ধি পেলে স্বাভাবিকভাবেই দেশীয় মুদ্রার কাছে বৈদেশিক মুদ্রার মান কমে যায়। ফলে পরোক্ষভাবে তা রপ্তানি আয়কে কমিয়ে দেয়। আবার সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতির কারণে বৈদেশিক মুদার কাছে দেশীয় মুদ্রার মান কমে যায়। ফলে তখন রপ্তানির মাধ্যমে আরো বেশি পরিমাণ দেশীয় মুদ্রা আয় করা সম্ভব হয়। ডলারের বিপরীতে টাকার মান এতো কমিয়ে যাওয়ার পেছনে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি অনেকগুলো প্রভাবকের মাঝে একটি হিসেবে কাজ করেছিল।

পরিসংহার

সংবাদ মাধ্যমগুলোতে আমরা ফিসকাল পলিসির নাম যতোবার শুনে থাকি, ঠিক ততোবার মনিটারি পলিসির নাম শোনা যায় না। এই কারণে খুব কম পরিমাণ মানুষই মনিটারি পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা রাখেন। তবে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনে ফিসকাল পলিসির অবদান ঠিক যতোটা, মনিটারি পলিসির অবদান তার থেকে কোনো অংশে কম নয়। আশা করি আজকের লেখায় আপনাকে মনিটারি পলিসি সম্পর্কে বিস্তারিত একটি ধারণা দিতে পেরেছি।

  • https://www.investopedia.com/terms/m/monetarypolicy.asp
  • https://www.britannica.com/money/topic/monetary-policy
  • https://www.wallstreetmojo.com/monetary-policy/
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/economics/monetary-policy/
  • https://www.thebalancemoney.com/what-is-monetary-policy-objectives-types-and-tools-3305867
  • https://www.investopedia.com/ask/answers/100314/whats-difference-between-monetary-policy-and-fiscal-policy.asp
  • https://www.forbes.com/advisor/investing/monetary-policy/
Next to read
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ মূলত এক ধরনের টেমপ্লেট বা চার্ট। যা অনেকাংশে একটা স্টোরিবোর্ড এর মতো ও কাজ করে থাকে। নিতান্তই ছোট এবং সংক্ষিপ্ত কিন্তু অর্থবহ এই টেমপ্লেট কিংবা স্টোরিবোর্ড আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।

সোশ্যাল বিজনেস মডেল ক্যানভাস (Social Business Model Canvas)
Canvas & Methods
সোশ্যাল বিজনেস মডেল ক্যানভাস (Social Business Model Canvas)
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
Business Models
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
কাস্টমার ডাটা মনেটাইজেশন মডেল (Customer Data Monetization Model)
Business Models
কাস্টমার ডাটা মনেটাইজেশন মডেল (Customer Data Monetization Model)
ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ? ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রসমূহ
Marketing
ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ? ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রসমূহ
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
Business
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
Business
রেড ওশান এবং ব্লু ওশান স্ট্র্যাটেজি (Red Ocean & Blue Ocean Strategy with Example
সেলস ফানেল বা বিক্রয় ফানেল কি?
Sales
সেলস ফানেল বা বিক্রয় ফানেল কি?
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
এঞ্জেল বিনিয়োগ কি? এবং কিভাবে কাজ করে (What is angel investing & how does it work?)
Investment
এঞ্জেল বিনিয়োগ কি? এবং কিভাবে কাজ করে (What is angel investing & how does it work?)