(Part-1) Indonesia's Journey to Economic Resilience: Key Reforms from Crisis to Growth

ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কার কার্যক্রম ১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকটের পর থেকে দেশটির অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করেছে, প্রবৃদ্ধি বাড়িয়েছে এবং শাসন ব্যবস্থার উন্নতি করেছে। সংকট থেকে এখন অনেক দূরে এসে ইন্দোনেশিয়া বিশ্বের গুরত্বপূর্ণ ৫টি অর্থনীতির একটি হওয়ার চেষ্টা করছে। তবে আয়ের বৈষম্য, পরিবেশগত সমস্যা এবং দুর্নীতির মতো চ্যালেঞ্জ এখনো রয়ে গেছে।
Key Points
- ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক সংস্কার ১৯৯৭ সালের পর মুদ্রার স্থিতিশীলতা, শাসন ব্যবস্থার উন্নতি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণের উপর গুরুত্বারোপ করেছে।
- ১৯৯৭ সালের সংকট দেশটির ব্যাংকিং খাত, মুদ্রা এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় গভীর প্রভাব ফেলে, যা পরিস্থিতিকে সুহার্তোর পতনের দিকে ধাবিত করে।
- কাঠামোগত সংস্কার ইন্দোনেশিয়াকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম শক্তিশালী অর্থনীতিতে রূপান্তর করেছে, যদিও আয়ের বৈষম্য এবং আঞ্চলিক বৈষম্য বিদ্যমান।
- বন উজাড় এবং কয়লার উপর নির্ভরশীলতা, ইন্দোনেশিয়ার টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যগুলিকে চ্যালেঞ্জ করে, তা সত্ত্বেও উচ্চাভিলাষী নবায়নযোগ্য শক্তির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
পর্ব - ১
ইন্দোনেশিয়া অর্থনৈতিক শীর্ষক আলোচনায় এটি পর্ব - ১। এই পর্বে থাকছে, ১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকটের প্রভাব, প্রাথমিক পর্যায়ের সংস্কার কার্যক্রম (১৯৯৮-২০০২) এর বিস্তারিত বর্ণনা
ভূমিকা
১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকটের আগে ইন্দোনেশিয়া দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্রুত প্রবৃদ্ধিশীল অর্থনীতির মধ্যে অন্যতম ছিল, যেখানে ১৯৯০ এর দশকের শুরুর ভাগে বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় ৭%। ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি মূলত তেল, গ্যাস এবং কৃষির উপর নির্ভরশীল ছিল। তবে দুর্বল শাসন ব্যবস্থা এবং উচ্চ ঋণের মতো কাঠামোগত দুর্বলতাগুলো ইন্দোনেশিয়াকে বাহ্যিক শকের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে।
১৯৯৭ সালের সংকট ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রার বড় ধরনের অবমূল্যায়নের কারণ হয়, যেখানে রুপিয়াহ তার মানের ৮০ শতাংশেরও বেশি হারায়। ব্যাংকিং খাত ভেঙে পড়ে, মুদ্রাস্ফীতি ৭৭ শতাংশে পৌঁছে যায় এবং দারিদ্র্য ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। এই সংকট রাজনৈতিক অস্থিরতাও সৃষ্টি করে, যার ফলে ৩১ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট সুহার্তোর পতন ঘটে।
এই ধ্বংসাত্মক প্রভাবগুলোর পর অর্থনৈতিক সংস্কার অপরিহার্য হয়ে ওঠে। সংস্কারগুলোর মাধ্যমে মূলত মুদ্রার স্থিতিশীলতা, ঋণ পুনর্গঠন এবং শাসন ব্যবস্থার উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করা হয়। ধারণা করা হয় যে, এই সংস্কারমূলক কার্যক্রমগুলো পরবর্তীতে ইন্দোনেশিয়ার দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি স্থাপন করে, যা দেশটিকে সংকটের পরবর্তী দশকে ধীরে ধীরে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার এবং স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা করে। চলুন, আজকের লেখায় জেনে নেয়া যাক, প্রায় ভেঙে পরা অর্থনীতি কিভাবে ঢেলে সাজিয়ে ইন্দোনেশিয়া আজকের স্থিতিশীল পর্যায় পর্যন্ত এসেছে।
১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকটের প্রভাব
১৯৯৭ সালের এশিয়ান আর্থিক সংকট শুরু হয় থাইল্যান্ড থেকে, যখন সরকারকে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে বাহাত মুদ্রাকে ভাসমান রাখতে বাধ্য হতে হয়। এর ফলে পুরো দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এক বিশাল আর্থিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়, এবং ইন্দোনেশিয়া সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি হয়ে ওঠে। সে সময় ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি মূলত স্বল্পমেয়াদী বৈদেশিক বিনিয়োগের প্রবাহ এবং ডলার-প্রধান ঋণের উপর নির্ভরশীল ছিল, যা সংকটের সময় দেশটিকে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।
ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রা রুপিয়াহ এক ভয়ংকর পতনের সম্মুখীন হয়। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে ১ মার্কিন ডলারের বিনিময় হার ছিল প্রায় ২৪৫০ রুপিয়াহ। কিন্তু ১৯৯৮ সালের জানুয়ারির মধ্যে এই রেট নেমে দাঁড়ায় ১৪,৮০০ রুপিয়াহ, অর্থাৎ ৮০ শতাংশেরও বেশি অবমূল্যায়ন হয় রুপিয়াহর। এই মুদ্রা সংকট দেশের অর্থনীতিতে এক মারাত্মক প্রভাব ফেলে, কারণ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের খরচ সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি কর্পোরেশনগুলোর জন্যও অসম্ভব হয়ে ওঠে। ফলস্বরুপ, মুদ্রাস্ফীতি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়, যা ১৯৯৮ সালে ৭০ শতাংশের উপরে পৌঁছে যায়। এতে করে জনসাধারণের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় এবং ব্যাপকভাবে দারিদ্র্য ছড়িয়ে পড়ে।
ব্যাংকিং খাত ছিল সংকটে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। অনেক ইন্দোনেশীয় ব্যাংক বৈদেশিক মুদ্রায় বিপুল পরিমাণ ঋণ নিয়েছিল, এবং রুপিয়াহের অবমূল্যায়নের ফলে তারা ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়ে। সরকার আর্থিক অবস্থাকে স্থিতিশীল করার প্রচেষ্টায় ১৬টি ব্যাংক বন্ধ করে দেয়, কিন্তু এই ব্যাংকগুলো বন্ধ হওয়ার ফলে পুরো ব্যাংকিং খাতে আস্থা হারানোর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ১৯৯৭ সালের শেষে, ইন্দোনেশিয়ার শেয়ারবাজার তার ৫০ শতাংশেরও বেশি মূল্য হারায়, এবং বৈদেশিক বিনিয়োগকারীরা ব্যাপক হারে দেশ থেকে মূলধন প্রত্যাহার করে নিতে থাকে। পরবর্তীতে, ইন্দোনেশিয়ার ব্যাংক পুনর্গঠন এজেন্সি (আইবিআরএ) গঠন করা হয় দেউলিয়া ব্যাংকগুলোর ঋণ পুনর্গঠন ও সমস্যা সমাধানের জন্য, কিন্তু ততক্ষণে অনেক বেশি পরিমাণ ক্ষতি হয়ে গিয়েছে।
অর্থনৈতিকভাবে, দেশটি কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বাজে আর্থিক মন্দায় প্রবেশ করে। ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়ার জিডিপি ১৩.১ শতাংশ সংকুচিত হয়, যা উক্ত অঞ্চলে অন্যতম বৃহত্তম অর্থনৈতিক সংকোচন ছিল। প্রচুর পরিমাণ ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকারত্ব ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়, এবং লক্ষ লক্ষ ইন্দোনেশিয়ান দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যান। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসরত মানুষের সংখ্যা ১৯৯৬ সালের প্রায় ১১ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৯৯৮ সালে ২৪ শতাংশে পৌঁছে যায়। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পায়, এবং অনেক পরিবার তাদের মৌলিক চাহিদা মেটাতে অক্ষম হয়ে পড়ে।
সংকটের সামাজিক-রাজনৈতিক প্রভাবও ছিল অত্যন্ত গুরুতর। খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, বেকারত্ব এবং দুর্নীতির কারণে জনগণের মাঝে ক্ষোভ বাড়তে থাকে, যা ব্যাপক গণবিক্ষোভ এবং অসন্তোষের জন্ম দেয়। ১৯৯৭ সালের এই সংকট সরকার ব্যবস্থায় বিদ্যমান গভীর দুর্নীতি মুখোশ উন্মোচিত করে এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থার প্রতি জনসাধারণের আস্থা নষ্ট করে। ১৯৯৮ সালের পুরোটা জুড়ে ছাত্র নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভ তীব্র হয়, যার ফলে শেষ পর্যন্ত ৩১ বছর ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট সুহার্তো মে মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সুহার্তোর পতন ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে গণ্য করা হয়, যা গণতান্ত্রিক সংস্কারের পথ তৈরি করে এবং একটি নতুন রাজনৈতিক যুগের সূচনা করে।
অর্থনৈতিক পতন ও রাজনৈতিক অস্থিরতার সম্মিলিত প্রভাব সংকটের গভীরতা স্পষ্ট করে তোলে। এটা স্পষ্ট হয় যে, শুধু অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাই নয়, বরং ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি জনসাধারণের আস্থা পুনর্গঠন করাও অপরিহার্য।
প্রাথমিক পর্যায়ের সংস্কার কার্যক্রম (১৯৯৮-২০০২)
১৯৯৭ সালের সংকটের পর, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি ছিল একেবারে বিশৃঙ্খল অবস্থায়। সরকারের প্রথম এবং প্রধান লক্ষ্য ছিল মুদ্রার মান স্থিতিশীল করা, ব্যাংকিং ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং দেশের বিপুল পরিমাণ ঋণের বোঝা সামাল দেয়া। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইন্দোনেশিয়াকে ৪৩ বিলিয়ন ডলার সহায়তার একটি প্যাকেজ দেয়, তবে এর সঙ্গে কঠোর শর্ত জড়িত ছিল। এই প্রাথমিক সংস্কারমূলক কার্যক্রমগুলো আরও ভয়াবহ পরিস্থিতি এড়াতে এবং অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের ভিত্তি স্থাপনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।
প্রথম যে পদক্ষেপ নেয়া হয় তা ছিল রুপিয়াহের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা। মুদ্রাটি তার ৮০ শতাংশের বেশি মূল্য হারিয়েছিল, যার ফলে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় এবং শিল্প ও সরকার উভয়ের পক্ষেই বৈদেশিক ঋণ শোধ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে ওঠে। প্রেসিডেন্ট বি. জে. হাবিবির অধীনে সরকার কঠোর আর্থিক নীতি গ্রহণ করে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং মুদ্রার স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার জন্য। সুদের হার ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি করা হয় মূলত বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণ করার উদ্দেশ্যে এবং রুপিয়াহকে রক্ষা করতে। এর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক, ব্যাংক ইন্দোনেশিয়া, তারল্য নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থ সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ১৯৯৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে রুপিয়াহ কিছুটা স্থিতিশীল হয়, যদিও মুদ্রার মানের অস্থিরতা কয়েক বছর ধরে অব্যাহত থাকে।
ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক সংকটের একেবারে কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করা ব্যাংকিং খাত সংস্কার করা ছিল সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অনেক ব্যাংক তাদের বৈদেশিক ঋণের বোঝায় ধ্বসে পড়ে, এবং যেগুলো টিকে ছিল সেগুলোর অবস্থাও ছিল বেশ দুর্বল। এর প্রতিক্রিয়ায়, সরকার ১৯৯৮ সালে ইন্দোনেশিয়া ব্যাংক পুনর্গঠন সংস্থা (আইবিআরএ) গঠন করে। আইবিআরএর কাজ ছিল ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাংকগুলোতে পুনরায় বিনিয়োগ করা এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোর পুনর্গঠন কার্যক্রম পরিচালনা করা। সংস্থাটি দেউলিয়া হয়ে যাওয়া ব্যাংকগুলোর সম্পদ অধিগ্রহণ করে, নন-পারফর্মিং লোনগুলো বিক্রি করে দেয় এবং প্রধান আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মূলধনের যোগান দেয়। এই প্রক্রিয়া ছিল অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক, এতে করে অনেক ব্যাংক বন্ধ হয়ে যায় এবং কিছু ব্যাংক একীভূত বা জাতীয়করণ করা হয়। তবে আর্থিক ব্যবস্থায় আস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য এই কার্যক্রম ছিল অত্যন্ত অপরিহার্য। ২০০২ সালের দিকে ইন্দোনেশিয়ার ব্যাংকিং খাত সংকট থেকে অনেকটাই বেরিয়ে আসলেও তখনো ছিল বেশ দুর্বল অবস্থানে।
ঋণ পুনর্গঠন ছিল ইন্দোনেশিয়ার প্রাথমিক সংস্কারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ১৯৯৮ সালের মধ্যে, দেশের মোট বেসরকারি খাতের ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ৮০ বিলিয়ন ডলার, যার বেশিরভাগই ছিল বৈদেশিক মুদ্রায় গ্রহণ করা ঋণ। রুপিয়াহর বড় ধরনের অবমূল্যায়ন এই ঋণ শোধ করা অনেকটাই অসম্ভব করে তোলে, যার ফলে অনেক প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হয়ে পরে। সরকার, আইএমএফ এবং বিশ্ব ব্যাংকের সহায়তায় একটি ঋণ পুনর্গঠন কর্মসূচি গ্রহণ করে, যার মাধ্যমে বৈদেশিক ঋণের শর্তগুলো আবারো নেগোশিয়েট করা হয় এবং ঋণগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান করা হয়। আন্তর্জাতিক ঋণদাতাদের সংগঠন লন্ডন ক্লাব এবং প্যারিস ক্লাব ইন্দোনেশিয়াকে তার বৈদেশিক ঋণ পুনর্গঠনে সাহায্য করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অভ্যন্তরীণভাবে, আইবিআরএ কর্পোরেট ঋণ পুনর্গঠন এবং অকেজো সম্পদগুলো বিক্রয়ের কাজ করে।
সরকার ব্যবস্থায় সুশাসন ও যেকোনো কার্যক্রমে স্বচ্ছতার সংস্কার ছিল আরেকটি অগ্রাধিকার। সংকট সরকারের এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্যাপক দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা উন্মোচন করে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট করেছিল। আইএমএফের সংস্কার প্যাকেজের অংশ হিসেবে, ইন্দোনেশিয়া শাসন ব্যবস্থার উন্নতি এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা বাড়াতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। সরকারি খাতের সংস্কারের মধ্যে দুর্নীতি হ্রাস করা, রেগুলেটরি নজরদারি উন্নত করা এবং সরকারি ব্যয়ে স্বচ্ছতা প্রচার অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই সংস্কারগুলো ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতিতে আন্তর্জাতিক আস্থা পুনরুদ্ধার এবং বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
আর্থিক নীতির সংস্কারগুলো সরকারি বাজেটকে স্থিতিশীল করার এবং বৈদেশিক ঋণের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর লক্ষ্যে গৃহীত হয়। সরকার বিশেষ করে জ্বালানি খাতে ভর্তুকি কমায়, যার পেছনে জনসাধারণের অর্থের একটি বড় অংশ খরচ হতো। এর পাশাপাশি সরকার ব্যয় হ্রাস করে এবং রাজস্ব বাড়াতে নতুন করনীতি প্রবর্তন করে। এই পদক্ষেপগুলো বাজেট ঘাটতি কমাতে এবং অর্থনীতিতে আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
২০০২ সালের মধ্যে, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতি স্থিতিশীল হতে শুরু করে। মুদ্রাস্ফীতি একক অংকে নেমে আসে, রুপিয়াহ কিছুটা স্থিতিশীল হয় এবং ব্যাংকিং খাত ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হতে থাকে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি পুনরায় শুরু হয়, যদিও তা প্রতি বছর ৩-৪ শতাংশ হারে ছিল। সংকট কাটলেও অর্থনীতি তখনও দুর্বল ছিল এবং দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আরও বিস্তৃত সংস্কারের প্রয়োজন ছিল। এই প্রাথমিক সংস্কারগুলো কষ্টকর হলেও, ইন্দোনেশিয়ার অর্থনীতির পুনরুদ্ধার এবং ভবিষ্যত উন্নয়নের ভিত্তি স্থাপন করেছিল।
- https://www.adb.org/news/op-ed/20-years-after-asian-financial-crisis-what-have-we-learned
- https://www.hks.harvard.edu/sites/default/files/centers/cid/files/publications/faculty-working-papers/100.pdf
- https://eh.net/encyclopedia/the-economic-history-of-indonesia/
- https://www.business.hsbc.com/en-gb/insights/growing-my-business/indonesia-a-rising-global-economy-thats-open-for-business
- https://www.britannica.com/place/Indonesia/Economy
- https://www.bbc.com/news/stories-46529582
- https://setkab.go.id/indonesia-matters-emerging-market-to-economic-powerhouse/
- https://www.aljazeera.com/news/2023/5/24/timeline-key-events-since-fall-of-indonesias-soeharto
- https://www.bbc.com/news/world-asia-28422179
- https://eastasiaforum.org/2023/05/22/covid-19-sparks-economic-reform-in-indonesia/
Next to read
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ


হোরেকা (HORECA)

CSR বা Corporate Social Responsibility কী?

অর্থনীতি কী?

ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?

‘SWOT’ Analysis

ডিমার্কেটিং (DeMarketing)

MTNUT কাটিয়ে কিভাবে একটি সেলস ডিল ক্লোজ করবেন?

বিজনেস অ্যানালিসিস কী, কেনো, কীভাবে করবেন?
