মুদ্রা কী? এবং অর্থ ও মুদ্রার মাঝে সম্পর্ক

833
article image

আমরা কোনো ব্যাক্তি বা ব্যবসায় থেকে কোনো ধরণের ভ্যালু পাওয়ার বিপরীতে মুদ্রা দ্বারা অর্থ পরিশোধ করি। যেই দেশের গন্ডির মাঝে লেনদেনটি সম্পাদন করা হচ্ছে, সাধারণত সেই দেশের মুদ্রাতেই লেনদেন করা হয়। তবে কিছু ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদাতেও লেনদেন হতে পারে। বর্তমান সময়ে মুদ্রার সবচেয়ে কমন রুপগুলো হচ্ছে ব্যাংক নোট ও কয়েন। অর্থ ও মুদ্রার মাঝে পার্থক্য হচ্ছে এই যে, অর্থ বলতে যেকোনো ধরণের নোট, কয়েন, ডিমান্ড ডিপোজিট ও তরল সম্পদকে বোঝানো হয়, যা দ্বারা লেনদেন করা যায়। আর মুদ্রা বলতে শুধু ব্যাংক নোট ও কয়েনকে বোঝানো হয়।

Key Points

  • বিনিময় প্রথার কিছু স্পেসিফিক অসুবিধা কারেন্সি ব্যবহার করার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হয়েছিল বলেই মানুষ বিনিময় প্রথা বাদ দিয়ে মুদ্রা ব্যবহার করা শুরু করেন।
  • বর্তমান সময়ের মুদ্রার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, এইসব মুদ্রার কোনো ধরণের অন্তর্নিহিত মূল্য নেই।
  • ‘মুদ্রা’ দৈনন্দিন লেনদেনে সহায়তা করে এবং ‘অর্থের’ অন্যান্য ফর্ম অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদের হার ও মনিটারি পলিসিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যেকোনো পণ্য বা সেবার মতো মুদ্রার মান’ও নির্ধারিত হয় সাপ্লাই ও ডিমান্ডের সূত্র মেনে।

ভূমিকা

একটি দেশের অর্থনীতি আসলে কিসের উপর দাড়িয়ে থাকে? শুধু কি অন্যান্য দেশ থেকে আসা রেমিট্যান্স? নাকি দেশের ভেতর চলা মাল্টি-মিলিয়ন ডলার ভ্যালুর মেগা প্রজেক্ট? এই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে আমরা সবসময় অনেক বড় স্কেলে চিন্তা করার চেষ্টা করি। কিন্তু অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে ছোট স্কেলের কি কোনো অবদান নেই? আছে, অবশ্যই আছে। আর ‘ছোট স্কেলের চিন্তা’ বলতে আসলে ঠিক কতোটা ছোট? এলাকার মুদি দোকান? নাকি কাচাঁবাজার? যদি আরো ছোট স্কেলে যেতে চাই তখন চলে আসবে ইনডিভিজুয়াল লেনদেনের কথা। যেখানে একজন ব্যাক্তি অন্য একজন ব্যাক্তির সাথে ভ্যালুর পরিবর্তে মুদ্রার লেনদেন করে থাকেন।

জি, অর্থনীতিতে ছোট থেকে বড়, সকল ধরণের লেনদেনেরই গুরুত্ব রয়েছে। তবে এই সব ধরণের লেনদেনের মাঝে একটি বিষয় বেশ কমন, সেটি হচ্ছে মুদ্রা। আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমের পুরোটাই টিকে রয়েছে ‘মুদ্রা’ এই ছোট্ট শব্দটির উপর। তাই আসুন, আজকের লেখায় মুদ্রা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাক।

মুদ্রা কী?

কারেন্সি’কে বাংলায় বলা হয় মুদ্রা। সহজ ভাষায়, মুদ্রা হলো পণ্য বা সেবা লেনদেন করার একটি মাধ্যম। অর্থাৎ, কারেন্সি বলতে অর্থকেই বোঝানো হয়, তবে শুধু কাগজি মুদ্রা ও কয়েনের রুপে। যেকোনো ধরণের কারেন্সি সাধারণত দেশের সরকার দ্বারা ইস্যু ও নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং লেনদেন করার সময় উক্ত মুদ্রার ফেইস ভ্যালুতে লেনদেন করা হয়।

আধুনিক জগতে তাই মুদ্রা বা কারেন্সিকে লেনদেনের প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করা হয়। প্রাচীন যুগে এই মুদ্রার মাধ্যমেই বিনিময় প্রথার অবসান হয়েছিল। মূলত বিনিময় প্রথার কিছু স্পেসিফিক অসুবিধা এই কারেন্সি (তখন মূলত কয়েন) ব্যবহার করার মাধ্যমে সমাধান করা সম্ভব হয়েছিল বলেই মানুষ লেনদেন করার সময় বিনিময় প্রথা বাদ দিয়ে মুদ্রা ব্যবহার করা শুরু করেন।

একবিংশ শতকে এক নতুন ধরণের কারেন্সি আমাদের কাছে পরিচিত হয়ে উঠেছে যা আমাদের ‘কারেন্সি’ সম্পর্কে সকল ধারণাকে বদলে দিতে চেয়েছে এবং অনেকটা পেরেছে বলা যায়। একে বলা হয় ভার্চুয়াল কারেন্সি বা ক্রিপ্টোকারেন্সি। বিটকয়েন বা ইথিরিয়ামের মতো ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোর উপর কোনো সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকে না এবং এগুলো সরকার ইস্যু’ও করে না, এদের কোনো ফিজিকাল ফর্ম’ও নেই। তাই অনেকেই ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলোকে এখনো বৈধ কারেন্সি হিসেবে মেনে নিতে চান না। এমনকি অনেক দেশেই ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহার করা এখন নিষিদ্ধ।

মুদ্রা কিভাবে কাজ করে

মানবসভ্যতার ইতিহাসে আমরা প্রায় ৩০০০ বছর ধরে কোনো না কোনো ধরণের মুদ্রা ব্যবহার করে চলেছি, যার শুরু হয়েছিল কয়েনের হাত ধরে। তখন কয়েন তৈরি করা হতো শুধু স্বর্ণ, রুপা বা ব্রোঞ্জ দিয়ে। আর এইসব পদার্থের কদর সারা পৃথিবীতেই ছিল, কোথাও একটু বেশি, কোথাও একটু কম। তাই তখন মানুষ কয়েন নিয়ে বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে গিয়েই বাণিজ্য করতে পারতো। এইসব মুদ্রার একটি অন্তর্নিহিত মূল্য ছিল, আর এক স্থানের মুদ্রার অন্য স্থানে কোনো দাম না থাকলেও মূলত কয়েন যেই পদার্থ থেকে তৈরি করা হয়েছে সেই পদার্থের অন্তর্নিহিত মূল্যের কারণেই তখন দুর-দুরান্তে গিয়েও লেনদেন করা সম্ভব হতো।

তবে বর্তমান সময়ের মুদ্রার একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, এইসব মুদ্রার কোনো ধরণের অন্তর্নিহিত মূল্য নেই। কখনো কি ভেবে দেখেছেন যে আমরা কাগজি মুদ্রা ও কয়েন দিয়ে কেনো লেনদেন করি এবং কেনো অর্থ পরিশোধের উপায় হিসেবে এগুলো ব্যবহার করি? কারণ, এইসব মুদ্রা সরকার দ্বারা স্বীকৃত এবং সরকারই এসব মুদ্রার মান নিশ্চিত করে। আপনি যাতে করে দেশের গন্ডির ভেতর এই মুদ্রা দ্বারা অবাধে ও বৈধ উপায়ে লেনদেন করতে পারেন তা নিশ্চিত করার কাজ সরকারের। তাই তো আমরা অর্থ পরিশোধের উপায় হিসেবে কাগজি মুদ্রা ও ধাতব কয়েন ব্যবহার করি। অথচ সরকারের গ্যারান্টি ছাড়া কাগজি মুদ্রা ও ধাতব কয়েনের বিশেষ কোনো নিজস্ব মূল্য নেই।

তবে এই ব্যবস্থার অসুবিধা হচ্ছে এই যে সরকারের নিশ্চয়তা শুধু দেশের গন্ডির মাঝেই সীমাবদ্ধ। অর্থাৎ, আপনি যদি দেশের গন্ডির বাইরে যেতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই অন্য কোনো একটি ‘দেশে’ যাবেন? আর সেই দেশের সরকারের’ও নিশ্চয়ই নিজস্ব স্বীকৃত মুদ্রা আছে যা দ্বারা ঐ দেশের গন্ডির ভেতর লেনদেন করা হয়। তাই তো এক দেশের মুদ্রা অন্য দেশে গিয়ে হয়ে পরে অচল। কাজ চালানোর জন্য আমাদেরকে এক্সচেঞ্জ ব্রোকারদের থেকে মুদ্রা এক্সচেঞ্জ করে নিতে হয়।

অর্থ ও মুদ্রার মাঝে সম্পর্ক

মুদ্রা নিয়ে জানার সময়, মুদ্রা ও অর্থের মাঝে সম্পর্ক ও পার্থক্য সম্পর্কে ডিটেইলড ধারণা রাখা প্রয়োজন। কারণ, দৈনন্দিন জীবনে আমরা ‘অর্থ’ ও ‘মুদ্রা’ শব্দ দুটিকে একই হিসেবে ব্যবহার করলেও বাস্তবে এদের মাঝে কিছু পার্থক্য আছে। মুদ্রা বলতে মূলত অর্থের ফিজিকাল ফর্মগুলোকে বোঝানো হয়। অর্থাৎ, অর্থ হচ্ছে শুধু একটি অবাস্তব ধারণা; যার মাঝে যেকোনো ধরণের অর্থ, যা দিয়ে ভ্যালু এক্সচেঞ্জ করা যায় চলে আসে। অপরদিকে, মুদ্রা হচ্ছে সেই অর্থের বাস্তব উদাহরণ। উদাহরণস্বররুপ, মুদ্রা বলতে মূলত বিভিন্ন ব্যাংক নোট ও কয়েনকে বোঝানো হয়। অপরদিকে, অর্থের ডোমেইন আরো অনেক বেশি বিস্তৃত, যেখানে ব্যাংক নোট ও কয়েনের পাশাপাশি আরো কিছু ধারণা অ্যাড হয়, যেমন - ডিমান্ড ডিপোজিট, ডিজিটাল মানি ও অন্যান্য তরল সম্পদ।

অর্থাৎ, এখানে আমরা মুদ্রাকে ‘অর্থের’ একটি সাবসেট হিসেবে চিন্তা করতে পারি যা দ্বারা দৈনন্দিন লেনদেন সম্পাদন করা যায় এবং যা দেশের মনিটারি সিস্টেমের বাস্তবিক প্রতিনিধিত্ব করে। ‘মুদ্রা’ যেখানে দৈনন্দিন লেনদেনে সহায়তা করে, ‘অর্থের’ অন্যান্য ফর্ম সেখানে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সুদের হার ও মনিটারি পলিসিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। অতীতে অর্থ ও মুদ্রার মাঝে পার্থক্য চিন্তা করতে পারা ছিল বেশ কঠিন, কারণ তখন লেনদেন করার মাধ্যমের সংখ্যা ২টি বা ৩টিতে সীমাবদ্ধ ছিল; তাই এখন ‘অর্থ’ ও ‘মুদ্রা’ বলতে একই জিনিস বোঝানো হতো। তবে আধুনিক যুগে লেনদেনের মাধ্যম বৃদ্ধি পাওয়ায় অর্থ ও মুদ্রার মাঝে পার্থক্য ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে।

বিভিন্ন ধরণের মুদ্রা

আধুনিক বিশ্বে মূলত ৩ ধরণের মুদ্রা দেখতে পাওয়া যায়।

১। ফিয়াট কারেন্সি -

বর্তমান বিশ্বে মুদ্রার সবচেয়ে পরিচিত রুপ হচ্ছে এই ফিয়াট কারেন্সি বা সরকারি মুদ্রা। এগুলো সরকার দ্বারা ইস্যু করা হয় এবং সরকার এগুলোর মান নিয়ন্ত্রণ করে। সরকারি নিশ্চয়তা ছাড়া এই ধরণের মুদ্রার কোনো নিজস্ব মূল্য নেই।

২। কমোডিটি মানি -

কিছুদিন আগেও বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন মূল্যমান কমোডিটি বা পণ্যকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করতে দেখা যেতো। যেমন - স্বর্ণ ও রুপা। এখন আর মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করা না হলেও এসব পণ্যের নিজস্ব ভ্যালু রয়েছে।

৩। ক্রিপ্টোকারেন্সি -

এগুলো হলো ডিজিটাল বা ভার্চুয়াল কারেন্সি যার নিরাপত্তার জন্য ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করা হয়। মূলত বিকেন্দ্রীভূত ব্লকচেইন প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে এই কারেন্সির লেনদেন করা হয়।

মুদ্রার মান কিভাবে নির্ধারিত হয়

মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যেকোনো পণ্য বা সেবার মতো মুদ্রার মান’ও নির্ধারিত হয় সাপ্লাই ও ডিমান্ডের সূত্র মেনে। সাপ্লাই বেশি ও ডিমান্ড কম হলে মান কমে যায় আবার সাপ্লাই কম ও ডিমান্ড বেশি হলে মান বেড়ে যায়। দেশের বাইরে এবং ভেতরে, উভয় ক্ষেত্রেই বিষয়টি একইভাবে কাজ করে। বলে রাখা উচিত যে, মুদ্রার সাপ্লাই ও ডিমান্ড একাধিক ফ্যাক্টরের কারণে প্রভাবিত হতে পারে। দেশের সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি ব্যবহার করার মাধ্যমে এই ফ্যাক্টরগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে।

১। সুদের হার

যেসব দেশে অন্যান্য সকল ফ্যাক্টর স্থির রেখে বেশি সুদের হার অফার করা হয় সেসব দেশের মুদ্রার মান সাধারণত বেশি হয়ে থাকে। কারণ বিনিয়োগকারীরা তখন উচ্চ সুদের হারের আশায় বেশি বেশি বিনিয়োগ করেন, এতে করে মুদ্রার ডিমান্ড বেড়ে যায়।

২। মুদ্রাস্ফীতি

যেসব দেশে মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেশি হয়, সেসব দেশের মুদ্রার মান সাধারণত অনেক দ্রুত কমে যায়। কারণ, মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি পেলে মুদ্রার ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং এতে করে ডিমান্ড কমে যায়।

৩। বৈদেশিক বিনিয়োগ

যেসব দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ অনেক বেশি আসে সেগুলোর মুদ্রার মান বৃদ্ধি পায়। আবার দেশের বাইরে বিনিয়োগ চলে যাওয়া শুরু করলে মুদ্রার মান হ্রাস পায়।

৪। মুদ্রার সরবরাহ

অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে মুদ্রার সাপ্লাই বেড়ে গিয়ে মান হ্রাস পায়। আবার মুদ্রার সরবরাহ নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে মুদ্রার মান স্থিতিশীল থাকে বা বৃদ্ধি পায়।

মুদ্রার মান কিভাবে পরিমাপ করা হয়

মুদ্রার মান পরিমাপ করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে উক্ত মুদ্রার সাথে অন্যান্য মুদ্রা কি হারে বিনিময় করা যাচ্ছে তা দেখা - যাকে বলা হয় এক্সচেঞ্জ রেট। গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড বিলুপ্ত হওয়ার পর থেকে বিশ্বে প্রধানত দুই ধরণের এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম লক্ষ্য করা যায়।

১। স্থায়ী এক্সচেঞ্জ রেট

ফিক্সড এক্সচেঞ্জ রেটের ক্ষেত্রে দেশের মুদ্রার মানকে অন্য একটি দেশের মুদ্রার মানের সাথে স্থির করে নির্ধারণ করে দেয়া হয়। সাধারণত বিভিন্ন উন্নয়নশীল দেশ, যাদের মুদ্রার মান তেমন স্থির নয়, তারা ফিক্সড এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম ফলো করে যাতে করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা যায়।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মুদ্রার মান আমেরিকান ডলারের সাথে বেধে দেয়া। কারন, আমেরিকান ডলারকে অনেক বেশি স্থিতিশীল মনে করা হয় এবং এটি প্রায় দেশেই গ্রহনযোগ্য। তবে এই ব্যবস্থার খারাপ দিক হচ্ছে এই যে, দেশগুলোকে নিজেদের পলিসি তৈরি করার ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ত্যাগ করতে হয় এবং আমেরিকান ডলারের পলিসি দ্বারা তারা অনেক বেশি প্রভাবিত হয়। তাই তাদেরকে অনেক সময় তারল্য সংকটেও পরে যেতে হতে পারে।

২। ভাসমান এক্সচেঞ্জ রেট

ভাসমান এক্সচেঞ্জ রেট সিস্টেম অনুযায়ী মুদ্রার মান স্থায়ীভাবে নির্ধারণ না করে এক্সচেঞ্জ মার্কেটের সাপ্লাই ও ডিমান্ডের উপর ছেড়ে দেয়া হয়। এইক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের মুদ্রার সাপ্লাই ও ডিমান্ড’ও দেশের মুদ্রার মানের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এই সিস্টেমের সুবিধা হচ্ছে এই যে, দেশগুলো নিজেদের পলিসি তৈরির ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে এবং তারল্য ঝুকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।

অপরদিকে অসুবিধা হচ্ছে এই যে, এসব মুদ্রার মান সাধারণত বেশ অস্থিতিশীল হয়ে থাকে। তবে মুদ্রার মান অনেক বেশি অস্থিতিশীল হয়ে উঠলে বা অনেক হ্রাস পেলে সরকার তখন হস্তক্ষেপ করে মুদ্রার মানকে একটি গ্রহণযোগ্য সীমার মাঝে রাখার চেষ্টা করে।

পরিসংহার

সরকারি নোট থেকে শুরু করে ক্রিপ্টোকারেন্সি, আমাদের অর্থনীতিকে একটি সুন্দর শেইপ দেয়ার পেছনে সকল ধরণের ‘অর্থ’ ও ‘মুদ্রা’র অবদান রয়েছে। তাই মুদ্রা কিভাবে কাজ করে এবং কতো ধরণের হয় সেগুলো সম্পর্কে আমাদের বিস্তারিত ধারণা রাখা প্রয়োজন। এতে করে আমাদের দৈনন্দিন লেনদেনগুলোকে আরো ইফেক্টিভ করে তোলা সম্ভব। আবার বিভিন্ন দেশের এক্সচেঞ্জ রেট কিভাবে কাজ করে এবং মুদ্রার উপর এক্সচেঞ্জ রেটের প্রভাব কি তা বোঝার মাধ্যমে আমরা আমাদের বৈদেশিক লেনদেনগুলোকে আরো বেশি ইফেক্টিভ করে তুলতে পারে।

  • https://www.investopedia.com/articles/investing/092413/how-currency-works.asp
  • https://economictimes.indiatimes.com/definition/currency
  • https://www.iexpats.com/how-currency-works/
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/economics/how-is-currency-valued/
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/economics/currency/
  • https://www.dailyforex.com/forex-articles/what-is-a-currency/182576
Next to read
Canvas & Methods
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)

ইম্প্যাথি ম্যাপিং মূলত একধরনের ট্যুলস। এটি গ্রাহকদের ভাবনা-চিন্তা, দৃষ্টিভঙ্গি, অনুভব, উপলব্ধি সহ নানাবিধ তথ্য, উপাত্ত এর সমন্বয়ে গঠিত সুশৃঙ্খল এবং সুবিন্যস্ত একটি চার্ট। উল্লেখিত বিষয় সমূহ সম্পর্কিত তথ্য উপাত্তের খুব চমৎকার একটা ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন পাওয়া যায় এই ইম্প্যাথি ম্যাপিং এর মাধ্যমে। যা মূলত আপনার কাঙ্ক্ষিত গ্রাহককে ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করে।

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
মার্কেটিং এর ৭'পি (7P’s of Marketing)
Marketing
মার্কেটিং এর ৭'পি (7P’s of Marketing)
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
Business
Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)
অর্থনীতি কী?
Economics
অর্থনীতি কী?
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
Sales
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
SEO (Search Engine Optimization for Websites)
Digital Marketing
SEO (Search Engine Optimization for Websites)
কর্পোরেট ট্যাক্সেশন এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা (Corporate Tax)
Accounting
কর্পোরেট ট্যাক্সেশন এবং আন্তর্জাতিক সমস্যা (Corporate Tax)
চাহিদাবিধি (Law of Demand) কী?
Economics
চাহিদাবিধি (Law of Demand) কী?