ডিজিটাল মানি: সংজ্ঞা এবং কিভাবে কাজ করে

1000
article image

ডিজিটাল অর্থ বলতে মূলত বিভিন্ন দেশের মুদ্রার ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশন ও বিভিন্ন ধরণের ক্রিপ্টোকারেন্সিকে বোঝানো হয়ে থাকে। ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলো সাধারণত ডিসেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্মে তৈরি করা হলেও বর্তমানে সেন্ট্রাল ব্যাংক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অনেক ধরণের ডিজিটাল অর্থ দেখা যাচ্ছে। একদিকে ডিজিটাল অর্থের ব্যবহারের দরুন আর্থিক লেনদেনের স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে, অপরদিকে সেন্ট্রাল ব্যাংকের রেগুলেশনের কারণে ডিজিটাল অর্থের স্বকীয়তা হারানোর সম্ভাবনা’ও দেখা যাচ্ছে।

Key Points

  • ডিজিটাল অর্থের আগমন সর্বপ্রথম দেখা যায় বিংশ শতাব্দীর মাঝের দিকে যখন ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) সিস্টেমের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন বাস্তব রুপ পায়।
  • একবিংশ শতাব্দীতে এসে বিটকয়েনের মতো ডিসেন্ট্রালাইজড ব্লকচেইন টেকনোলজির মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থ নতুন মাত্রা পায়।
  • ডিজিটাল অর্থ অন্য যেকোনো বাস্তব মুদ্রার মতোই লেনদেনের মাধ্যম ও হিসাবের একক হিসেবে কাজ করে।
  • সাধারণ ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে স্টেবল কয়েনের পার্থক্য এই যে, সাধারণ ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য অনেক অস্থিতিশীল হয়ে থাকে।

ভূমিকা

ডিজিটাল দুনিয়ায় অর্থ এখন আর শুধু ফিজিকাল ফর্মেই সীমাবদ্ধ নয়। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় ট্রান্সফর্মেটিভ ফোর্সগুলোর একটি হচ্ছে ডিজিটাল অর্থ। গতানুগতিক লেনদেনের পুরো কন্সেপ্টটাই যেন ডিজিটাল অর্থ পরিবর্তন করে দিতে চাইছে। যেসব দেশে ডিজিটাল অর্থের ব্যবহার উৎসাহিত করছে, তারা অর্থনৈতিক গতিশীলতা অর্জন করছে, আর যারা ডিজিটাল অর্থকে সীমিত করে রাখছে তারা পিছিয়ে যাচ্ছে। তাই আজকের লেখায় আমরা ডিজিটাল অর্থের কনসেপ্ট সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা অর্জন করার চেষ্টা করবো।

ডিজিটাল অর্থ কী?

ডিজিটাল অর্থ বলতে এমন অর্থকে বোঝানো হয় যা শুধু ইলেক্ট্রনিক রুপে পাওয়া যায়। অর্থাৎ, এই অর্থের কোনো বাস্তব রুপ নেই এবং কাগজি নোট বা কয়েনের মতো এগুলো স্পর্শ করা যায় না। সাধারণত বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে এই অর্থের লেনদেন করা হয়। তবে ডিজিটাল অর্থ বলতে কিন্তু অন্য কোনো ‘মুদ্রা’ ভেবে ভুল করবেন না। আমরা আমাদের আশেপাশে গতানুগতিক যেসব মুদ্রা দেখি যেমন - টাকা এবং ডলার, ডিজিটাল অর্থকে’ও এইসব মুদ্রাতেই প্রকাশ করা হয়। শুধু পার্থক্য হচ্ছে এই যে, কাগজি নোট বা কয়েনের মাধ্যমে আমরা হাতে-হাতে লেনদেন করছি। অপরদিকে, ডিজিটাল অর্থের লেনদেন আমরা ইলেক্ট্রনিক উপায়ে করে থাকি।

ডিজিটাল অর্থের আগমন সর্বপ্রথম দেখা যায় বিংশ শতাব্দীর মাঝের দিকে যখন ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) সিস্টেমের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেন বাস্তব রুপ পায়। বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ও একবিংশ শতাব্দীর শুরুর দিকে এসে যখন ইন্টারনেট ও ইলেক্ট্রনিক পেমেন্ট সিস্টেমের ব্যবহার বৃদ্ধি পেতে থাকে তখন ডিজিটাল অর্থ লেনদেনের বেশ সহজ একটি মাধ্যমে হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।

একবিংশ শতাব্দীতে এসে বিটকয়েনের মতো ডিসেন্ট্রালাইজড ব্লকচেইন টেকনোলজির মাধ্যমে ডিজিটাল অর্থ নতুন মাত্রা পায়। ক্রিপ্টোকারেন্সির সাহায্যে এখন ট্রেডিশনাল মধ্যস্ততাকারী যেমন - ব্যাংকের সাহায্য ছাড়াই বিভিন্ন লেনদেন করা সম্ভব হচ্ছে।

ডিজিটাল অর্থের বৈশিষ্ট্য

ডিজিটাল অর্থের কিছু স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা একে গতানুগতিক অর্থের থেকে ভিন্ন হতে সাহায্য করে। যেমন -

১। ডিজিটাল ফর্ম

ডিজিটাল অর্থ সম্পূর্ণ ডিজিটাল ফর্মে থাকে এবং এর স্টোরেজ ও লেনদেন করা হয় বিভিন্ন ডিজিটাল মাধ্যম ও ডিভাইসের সাহায্যে।

২। ডিসেন্ট্রালাইজেশন

বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি যেমন - বিটকয়েনের লেনদেন সম্পূর্ণ ডিসেন্ট্রালাইজড উপায়ে হয়ে থাকে এবং এগুলোর হিসাব রাখা হয় ব্লকচেইন টেকনোলজির মাধ্যেমে।

৩। নিরাপত্তা

ডিজিটাল অর্থের নিরাপত্তা এনশিওর করার জন্য বিভিন্ন ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনিক ব্যবহার করা হয়। এতে করে অর্থের জালিয়াতি ও অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত প্রবেশ বন্ধ করা যায়।

৪। তাৎক্ষনিক লেনদেন

ডিজিটাল অর্থের ব্যবহার করে অনেক দূরের কারো সাথেও তাৎক্ষনিক লেনদেন করা সম্ভব, যা ফিজিকাল অর্থের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়।

৫। আন্তর্জাতিক লেনদেন

দেশের বাইরে লেনদেন করার জন্য ডিজিটাল অর্থকে মানি এক্সচেঞ্জ অফিসে গিয়ে কনভার্ট করতে হয় না। বরং এই ক্ষেত্রে তা অটোমেটিক বা অল্প কিছু ইলেক্ট্রনিক ইন্সট্রাকশন দিয়েই করা সম্ভব।

ডিজিটাল অর্থ কীভাবে কাজ করে?

ডিজিটাল অর্থ অন্য যেকোনো বাস্তব মুদ্রার মতোই লেনদেনের মাধ্যম ও হিসাবের একক হিসেবে কাজ করে। তাই সেই হিসেবে এই অর্থকে গতানুগতিক অর্থের ডিজিটাল বা ইলেক্ট্রনিক ফর্মের বেশি কিছু বলা যায় না। উদাহরণস্বরুপ, আপনি যখন আপনার ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট টাকা জমা দেন, তখন সেই টাকা ব্যাংক এখন আর ফিজিকালি স্টোর করে না। এখন সেই ফিজিকাল টাকা ব্যাংক কি করে তা সম্পূর্ণ ভিন্ন আলোচনা হওয়ায় আমরা সেই দিকে আর না যায়। তবে আপনি টাকা জমা দেয়ার পর ব্যাংক আপনার হিসাবে কিছু অংক যোগ করে দেয়। অর্থাৎ, আপনার হিসাবে যদি পূর্বে শূণ্য টাকা থেকে থাকে, তাহলে ৫০০ টাকা জমা দেয়ার পর আপনার হিসাবে ৫০০ টাকা দেখাবে। এখানে আপনার হিসাবে ‘৫০০’ অংকটি যোগ করা হয়েছে মাত্র।

আবার আপনি যদি হিসাব থেকে টাকা উত্তোলন করেন, তাহলে ব্যাংক আপনার হিসাব থেকে সমপরিমাণ অংক বিয়োগ করে বাকি টাকা আপনার ব্যালেন্স হিসেবে দেখায়। এভাবে যেকোনো ধরণের আর্থিক লেনদেনের খরচ অনেক কমে যায় এবং সহজে লেনদেন করা যায়। এখন আপনি জিজ্ঞাসা করতে পারেন যে, তাহলে ব্যাংক বা বিকাশে/নগদে ক্যাশ ইন করার পর আপনার টাকা কোথায় যায়? সহজ ভাষায় বললে, তারা আপনার টাকার একটি নির্দিষ্ট অংশ নিজেদের কাছে জমা রেখে বাকি অংশ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে দেয়। এতে করে অর্থনীতিতে সার্বিকভাবে বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

আবার আপনার চাহিদা অনুযায়ী তারা আপনার অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য থাকে, তাই তারা ক্যালকুলেশন করে এমন পরিমাণ অর্থই নিজেদের কাছে জমা রাখে যাতে করে তা দ্বারা সকল গ্রাহকদের চাহিদা পূরণ করতে পারে। তবে এর মাঝেও আপনার কাছে যেহেতু ডিজিটাল অর্থ আছে, তাই চাইলেই আপনি এটিএম থেকে ফিজিকাল ক্যাশ না তুলে ডিজিটাল অর্থ দ্বারা লেনদেন করতে পারেন।

মনে করুন, আপনি কোনো ই-কমার্স প্লাটফর্ম থেকে ১০০০ টাকার পণ্য ক্রয় করলেন এবং পেমেন্ট করলেন আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে। এখন ব্যাংক শুধু আপনার হিসাব থেকে ১০০০ টাকা বিয়োগ করে সেই ই-কমার্স প্লাটফর্মের অ্যাকাউন্টে ১০০০ টাকা যোগ করে দিবে। তাই এখানে ফিজিকাল অর্থের কোনো প্রয়োজন হচ্ছে না ঠিক যতক্ষণ কোনো পক্ষ এটিএম বা ব্যাংকের শাখা থেকে অর্থ উত্তোলন করছে। এই কারণেই ডিজিটাল অর্থ বর্তমান সময়ে এতো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল অর্থ

বর্তমান সময়ে আমরা বিভিন্ন ধরণের ডিজিটাল অর্থ দেখতে পাই। যেমন -

১। সেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল কারেন্সি

এগুলো হচ্ছে গতানুগতিক কাগজি নোটের ডিজিটাল ফর্ম মাত্র। অর্থাৎ, এগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্তৃক ইস্যুকৃত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। এগুলো একটি নির্দিষ্ট ফ্রেমওয়ার্কের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয় এবং এদের সার্কুলেশনের ওপর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ থাকে। তাই এগুলোকে সেন্ট্রাইলাইজড ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি বলা হয়।

২। ডিসেন্ট্রালাইজড ক্রিপ্টোকারেন্সি

এই কারেন্সিগুলো সাধারণত কোনো নেটওয়ার্কের মধ্য থেকে অপারেটেড হয়। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো নিয়ন্ত্রণ এগুলোতে থাকে না। মূলত ব্লকচেইন টেকনোলজির উপর তৈরি করা হয় বলে এই কারেন্সির নিয়ন্ত্রণ সকল ব্যবহারকারীর হাতে সমান পরিমাণে থাকে এবং চাইলেই কেউ এগুলোর মানের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে। যেমন - বিটকয়েন বা ইথিরিয়াম।

৩। স্টেবল কয়েন

সাধারণ ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে স্টেবল কয়েনের পার্থক্য এই যে, সাধারণ ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য অনেক অস্থিতিশীল হয়ে থাকে। অপরদিকে, স্টেবল কয়েন কোনো ফিয়াট কারেন্সি বা কমোডিটি কারেন্সির বিপরীতে স্থিতিশীল মান বজায় রাখে। অর্থাৎ, ক্রিপ্টোকারেন্সির অস্থিতিশীলতার সমস্যাটি স্টেবল কয়েন সমাধান করে।

৪। টোকেনাইজড অ্যাসেট

এই সিস্টেমে বিভিন্ন ফিজিকাল অ্যাসেট যেমন - বাড়ি, স্টক বা জমির টোকেন ভার্শন তৈরি করে সংরক্ষণ করা হয়। টোকেন হিসেবে এগুলোর লেনদেন করার সুবিধা হচ্ছে এই যে, এগুলোর ফ্র্যাকশনাল মালিকানা পাওয়া যায়, বেশি লিক্যুইডিটি প্রদান করে এবং খুব এফিশিয়েন্টলি মালিকানা ট্রান্সফার করা যায়।

ডিজিটাল অর্থের উদাহরণ

চলুন ডিজিটাল অর্থের কিছু বাস্তব উদাহরণ সম্পর্কে জেনে নেই।

১। বিটকয়েন

বিটকয়েন হচ্ছে একটি ডিসেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল কারেন্সি যা ২০০৯ সালে ‘সাতোশি নাকামোতো’ নামের এক বা একাধিক ব্যাক্তির দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল। মূলত বিভিন্ন লেনদেনে ব্যাংকের মধ্যবর্তী ভূমিকা পালন করা বন্ধ করার উদ্দেশ্যে এবং Peer-to-Peer ট্রান্সফার আরো সহজ করে তোলার লক্ষ্যে বিটকয়েন যাত্রা শুরু করে। ব্লকচেইন নামক পাবলিক খতিয়ানে বিটকয়েনের সকল লেনদেন লিপিবদ্ধ হয় এবং হিসাবের অ্যাক্সেস সবার কাছে থাকে।

২। ইথিরিয়াম

ইথিরিয়াম হচ্ছে একটি ডিসেন্ট্রালাইজড প্লাটফর্ম যেখানে বিভিন্ন স্মার্ট কন্ট্র্যাক্ট এক্সিকিউট করা হয়। স্মার্ট কন্ট্র্যাক্ট হচ্ছে দুই বা ততোধিক ব্যাক্তির মাঝে কোনো অ্যাগ্রিমেন্ট যার কিছু পূর্বশর্ত থাকে এবং শর্ত পূরণ হলে কন্ট্র্যাক্ট নিজে থেকেই এক্সিকিউটেড হয়। ইথিরিয়াম তাদের ব্লকচেইনে বিভিন্ন ডিসেন্ট্রালাইজড অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করার সুবিধা প্রদান করে যেমন - ডিসেন্ট্রালাইজড ফাইন্যান্স (DeFi), নন-ফাঞ্জিবল টোকেন (NFTs), ডিসেন্ট্রালাইজড এক্সচেঞ্জ (DEXs) ইত্যাদি।

৩। স্টেবল কয়েন

টেথার ও ইউএসডি কয়েন হচ্ছে স্টেবল কয়েনের সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি উদাহরণ। উভয় কয়েন আমেরিকান ডলারের বিপরীতে পেগ করা এবং ডলারের মূল্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে এগুলো নির্দিষ্ট মান বজায় রাখে। টেথার কয়েন টেথার লিমিটেড দ্বারা এবং ইউএসডি কয়েন সেন্টার কনসোর্টিয়াম দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

৪। সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি

অনেক দেশই বর্তমানে নিজেদের সেন্ট্রালাইজড ডিজিটাল কারেন্সি তৈরি করার পরিকল্পনা করছে এবং কিছু দেশ ইতোমধ্যে তাদের ডিজিটাল কারেন্সি পাবলিকলি অ্যাভেইলএবল করে দিয়েছে।

চীন - চীনের পিপলস ব্যাংক অব চায়না ইতোমধ্যে তাদের ডিজিটাল ইউয়ান (e-CNY) এর পাইলট টেস্টিং শুরু করেছে।

সুইডেন - সুইডেনের রিস্কব্যাংক ২০১৭ সালে তাদের ডিজিটাল কারেন্সি (e-krona) লঞ্চ করার পরিকল্পনা ও ফেইস-১ টেস্টিং শুরু করে। তারই ধারাবাহিকতায় তারা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ফেইজ-২ বা পাইলট টেস্টিং প্রোগ্রাম চালু করে।

বাহামাস - বাহামাসের কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের বাহামিয়ান ডলারের ডিজিটাল রিপ্রেজেন্টেশন (Sand Dollar) ইতোমধ্যে দেশের ভেতরে লঞ্চ করেছে এবং পাবলিক তার বেশ সুবিধা ভোগ করছে।

ডিজিটাল কারেন্সির সুবিধা

অন্তর্ভুক্তি

যারা ট্রেডিশনাল ব্যাংকিং সিস্টেমের বাইরে থেকে গিয়েছিলেন, তাদেরকেও ডিজিটাল কারেন্সির মাধ্যমে ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসে ইনক্লুড করা সম্ভব।

এফিশিয়েন্সি

ডিজিটাল কারেন্সির সাহায্যে খুব কম সময় ও এফোর্টে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব। আবার ট্রেডিশনাল ব্যাংকিং সার্ভিসের তুলনায় এই পন্থায় খরচ অনেক কম হয়।

স্বচ্ছতা ও নিরাপত্তা

ব্লকচেইনের মতো পাবলিক খতিয়ানে ডিজিটাল কারেন্সির লেনদেনগুলো লিপিবদ্ধ হওয়ায় আর্থিক লেনদেনে স্বচ্ছতা বজায় রাখা সম্ভব হয়। আবার অ্যাডভান্সড ক্রিপ্টোগ্রাফিক টেকনিকের ব্যবহারের দরুন লেনদেনের নিরাপত্তা’ও বৃদ্ধি করা সম্ভব।

ডিজিটাল কারেন্সির অসুবিধা

রেগুলেশন

ডিজিটাল কারেন্সির পুরো কনসেপ্টটাই দাঁড়িয়ে রয়েছে ডিসেন্ট্রালাইজেশনের উপর। তাই এগুলোকে রেগুলেট করা সরকারি সংস্থাগুলোর জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

অস্থিতিশীলতা

বিটকয়েন ও ইথিরিয়ামের মতো ডিজিটাল কারেন্সিগুলো তাদের মূল্যের অস্থিতিশীলতার জন্য বেশ পরিচিত। এটি বিনিয়োগকারীদের জন্য বেশ বড় একটি অসুবিধা।

প্রাইভেসি

ডিজিটাল কারেন্সিগুলো ব্লকচেইন পদ্ধতি ব্যবহার করায় ট্রান্সপেরেন্সি অনেক বেশি থাকে, তবে এই বৈশিষ্ট্য কিছু গ্রাহকদের জন্য সমস্যার কারণ হয়ে উঠতে পারে। কারণ সবাই চাইবে না যে তাদের আর্থিক লেনদেন ও পারসোনাল ডেটা পাবলিকলি অ্যাভেইলএবল থাকুক।

পরিসংহার

পরিশেষে, ডিজিটাল অর্থ যেকোনো অর্থনীতির জন্য একটি ট্রান্সফর্মেটিভ ফোর্স যা ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্তি, এফিশিয়েন্সি এবং স্বচ্ছতার মতো বিভিন্ন সুবিধা এনে দিচ্ছে। তবে ডিজিটাল অর্থের অসুবিধাগুলোকে ইগনোর করলে চলবে না। প্রযুক্তি যতো উন্নত হবে, ডিজিটাল অর্থ ও এই রিলেটেড প্লাটফর্মগুলো আরো নানা সম্ভাবনার দুয়ার খুলে দিবে যেগুলো হয়তো আমরা এখন ভাবতেও পারছি না। তবে একটি বিষয়ে বেশ শিওর হয়ে বলা যায়, তা হচ্ছে আগামীতে আমাদের ফাইন্যান্সিয়াল সেক্টর কেমন হবে, তা নির্ধারিত করবে ডিজিটাল অর্থের প্লাটফর্মগুলোই।

  • https://www.investopedia.com/terms/d/digital-money.asp
  • https://www.investopedia.com/terms/d/digital-currency.asp
  • https://corporatefinanceinstitute.com/resources/cryptocurrency/digital-money/
  • https://www.forbes.com/advisor/investing/cryptocurrency/digital-currency/
  • https://www.rba.gov.au/education/resources/explainers/cryptocurrencies.html
  • https://www.cbhou.com/Resources/Customer-Corner/entryid/574/what-is-digital-currency
  • https://www.fool.com/terms/d/digital-currency/
Next to read
Logo
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)

লোগো হল একটি গ্রাফিক্স মার্ক বা প্রতীক। কোনো কিছুর প্রতীকী অর্থে লোগো ব্যবহার করা হয়। লোগোর প্রকারভেদ ৫/৬ প্রকার থেকে ১১ প্রকার হতে পারে। কোন শিল্পী যেই প্রকারভেদ ৫ বলেছে তো অন্য কোন শিল্পী এই সিরিজকে আরও প্রস্থ ও বিশ্লেষণ করে ১১ প্রকারে ভাগ করেছেন।

লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
Logo
লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)
হোরেকা (HORECA)
Business
হোরেকা (HORECA)
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
অর্থনীতি কী?
Economics
অর্থনীতি কী?
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
Sales
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
Business Law
ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
Marketing
ডিমার্কেটিং (DeMarketing)
General Agreement on Tariffs and Trade (GATT)
Agreement
General Agreement on Tariffs and Trade (GATT)
World Trade Organization (WTO) Agreements
Agreement
World Trade Organization (WTO) Agreements