ফিয়াট মানি কী? এবং ফিয়াট মানি কীভাবে কাজ করে?

আধুনিক সময়ে বিশ্বের অর্থনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে ফিয়াট কারেন্সি। এই কারেন্সি কোনো ফিজিকাল কমোডিটি দ্বারা সমর্থিত নয় এবং এর মান নির্ভর করে সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার উপর। এতে করে সরকার অনেক কম খরচে ও নমনীয়তার সাথে কারেন্সি ম্যানেজ করতে পারে। আবার কোনো ফিজিকাল কমোডিটি দ্বারা সমর্থিত না হওয়ার কারণে সরকারের বিভিন্ন কাজের কারণে এই মুদ্রার গ্রহণযোগ্যতা শেষ হয়ে যেতে পারে। এভাবেই বিভিন্ন দেশ উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়ে দেউলিয়া হয়ে যায়।
Key Points
- ফিয়াট মানির ভ্যালু নির্ধারিত হয় মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অন্য যেকোনো সাধারণ পণ্য বা সেবার মতো, অর্থাৎ সাপ্লাই ও ডিমান্ডের উপর নির্ভর করে।
- ফিয়াট মানি বা কাগজি মুদ্রার সর্বপ্রথম প্রচলন হয়েছিল চীনে দশম শতকে মিং সম্রাজ্যের অধীনে। আর পশ্চিমা বিশ্বে কাগজি মুদ্রার প্রচলন শুরু হয় ১৮ শতকে।
- কেউ যদি অর্থ হিসেবে ফিয়াট মানি গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে সে আসলে আঈন অমান্য করছে।
- উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পেছনে সবচেয়ে কমন ফ্যাক্টরগুলো হচ্ছে - অর্থনৈতিক উৎপাদন একেবারে কমে যাওয়া অথবা দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়া।
ভূমিকা
কেমন বোধ করবেন যদি বলি যে, আপনার এতো কষ্টার্জিত অর্থ যেকোনো দিন মূল্যহীন হয়ে উঠতে পারে? নিশ্চয়ই ভাববেন যে আমি মিথ্যে ভয় দেখাচ্ছি। না, আমি মিথ্যে বলছি না। আধুনিক সময়ে আমরা যেসব মুদ্রাকে লেনদেনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করি, সরকারের ভুলে বা অদক্ষতার কারণে এগুলো যেকোনো সময় মূল্যহীন হয়ে পরতে পারে। কারণ, সরকারের উপর আস্থার কারণেই আমরা এসব মুদ্রাকে গ্রহণ ও প্রদান করি। সরকারের উপর আস্থা না থাকলে এগুলো শুধু কাগজের টুকরো ছাড়া আর কিছুই থাকবে না। জি, কথা বলছি ফিয়াট মানি সম্পর্কেই। আসুন, জেনে নেই এই ফিয়াট মানি কি এবং কেনো এটি আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। আর ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই, আপনার কষ্টার্জিত অর্থ নিকট ভবিষ্যতে মূল্যহীন হয়ে পরের কোনো সম্ভাবনা নেই।
ফিয়াট মানি কী?
ফিয়াট মানিকে বাংলায় বলা হয় হুকমি মুদ্রা। ফিয়াট মানি হচ্ছে এমন অর্থ, যা নির্দিষ্ট কোনো দেশের সরকার ইস্যু করে থাকে। ফিয়াট মানির বিপরীতে কোনো ধরণের ফিজিকাল কমোডিটি যেমন - সোনা বা রুপা জমা করে রাখা হয় না। বরং, যেই সরকার এই অর্থ ইস্যু করছে, তার উপর ভরসা থেকেই এই অর্থ সর্বজনের কাছে স্বীকৃতি পায়।
ফিয়াট মানির ভ্যালু নির্ধারিত হয় মুক্তবাজার অর্থনীতিতে অন্য যেকোনো সাধারণ পণ্য বা সেবার মতো, অর্থাৎ সাপ্লাই ও ডিমান্ডের উপর নির্ভর করে। এছাড়া যেই সরকার এই অর্থ ইস্যু করছে, তার স্থিতিশীলতার উপরেও এই অর্থের ভ্যালু নির্ভর করে। বর্তমান সময়ের যেকোনো কাগজি মুদ্রা সাধারণত ফিয়াট কারেন্সি বা ফিয়াট মানির আওতাভুক্ত, যেমন - বাংলাদেশের টাকা, আমেরিকার ডলার ইত্যাদি।
দেশ হিসেবে সর্বপ্রথম চীন ফিয়াট মানি ব্যবহার করেছিল ১০০০ সালের দিকে। এরপর পৃথিবীর অন্যান্য স্থানে এটি ছড়িয়ে পরে। ফিয়াট মানি মূলত সবার কাছে পরিচিত হয়ে ওঠে ১৯৭১ সালে যখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ঘোষণা করেন যে, আমেরিকান ডলার এখন আর স্বর্ণে কনভার্ট করা যাবে না এবং ডলারের ভ্যালু স্বর্ণের দ্বারা আর সমর্থিত থাকবে না। এই ঘটনাকে ইতিহাসে নিক্সন শক হিসেবে ডাকা হয়।
ফিয়াট মানি কীভাবে কাজ করে?
ফিয়াট শব্দটি ল্যাটিন ভাষা থেকে এসেছে যার ইংরেজি অর্থ হয়, "let it be done"। যেহেতু সরকার এই অর্থ ইস্যু করে থাকে তাই সরকারের হুকুম থেকেই এই অর্থ সবাই লেনদেনে ব্যবহার করে। অন্য যেকোনো কমোডিটি মানি যেমন - সোনা বা রুপা ইত্যাদির কিছু অন্তর্নিহিত ভ্যালু থাকে, তবে ফিয়াট মানির কোনো ধরণের অন্তর্নিহিত ভ্যালু থাকে না। ফিয়াট মানিকে মূল্যবান মনে করা হয় শুধু এই কারণে যে সরকার এই অর্থের ভ্যালু মেইনটেইন করছে। সরকার যদি দেউলিয়া হয়ে যায় অথবা ভেঙে পরে তাহলে কাগজি মুদ্রা শুধু কাগজের টুকরো ছাড়া আর কিছুই থাকবে না।
ফিয়াট মানি ব্যবহার করার আগে মানুষ বিভিন্ন কমোডিটি মানি যেমন - সোনা বা রুপার কয়েন লেনদেন করার কাজে ব্যবহার করতো। এই কমোডিটি মানি দিয়েই ক্রয়-বিক্রয় করা হতো এবং ঋণের অর্থ পরিশোধ করা হতো। কমোডিটি মানির যেহেতু নিজস্ব ভ্যালু ছিল, তাই সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে এখানে কোনো সরকারের হুকুম প্রয়োজন ছিল না। তবে ফিয়াট মানির যেহেতু কোনো অন্তর্নিহিত ভ্যালু নেই এবং কোনো ফিজিকাল রিজার্ভ যেমন - সোনা বা রুপার রিজার্ভ দ্বারা ফিয়াট মানি সমর্থিত নয়, তাই মুদ্রাস্ফীতির কারণে এই অর্থের মূল্য একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার একটি ঝুকিঁ সর্বদাই থেকে যায়।
আবার দেশের মানুষ যদি দেশের মুদ্রার উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে, তাহলেও ফিয়াট মানি অকেজো হয়ে যেতে পারে।
ফিয়াট মানির ইতিহাস
ফিয়াট মানি বা কাগজি মুদ্রার সর্বপ্রথম প্রচলন হয়েছিল চীনে দশম শতকে মিং সম্রাজ্যের অধীনে। এর আগে ট্যাং সম্রাজ্যের (৬১৮ - ৯০৭) সময়ে ধাতব মুদ্রার চাহিদা সরবরাহের তুলনায় অনেক বেড়ে গিয়েছিল। আর চীনের মানুষ আগে থেকেই ক্রেডিট নোট কনসেপ্টের সাথে পরিচিত ছিল। তাই যখন মিং সম্রাজ্যে কাগজি মুদ্রার প্রচলন করা হয়, তখন সাধারণ জনগণ তা সাদরে গ্রহণ করে নেয়।
পশ্চিমা বিশ্বে কাগজি মুদ্রার প্রচলন করা হয় ১৮ শতকে। মূলত আমেরিকার বিভিন্ন কলোনি, ফ্রান্স ও ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোতে লেনদেন করার সুবিধার্থে ক্রেডিট বিল ইস্যু করার মাধ্যমে কাগজি মুদ্রার প্রচলন শুরু হয়। এই নোট বা বিল ব্যবহার করেই সাধারণ মানুষ সরকারকে কর প্রদান করতেন। তবে কাগজি মুদ্রা অযথাযথ ব্যবহারের কারণে ইউরোপের অনেক অংশেই এই সময়ে মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেড়ে যায় এবং সরকার দেউলিয়া হতে শুরু করে।
ব্রেটন-উডস চুক্তির মাধ্যমে সর্বপ্রথম এক ট্রয় আউন্স স্বর্ণের দাম ৩৫ আমেরিকান ডলার হিসেবে নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডের সীমাবদ্ধতাগুলোর কারণে ১৯৭১ সালে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন ডলারকে স্বর্ণের মান থেকে মুক্ত করে দেন।
ফিয়াট মানির বৈশিষ্ট্য
ফিয়াট মানির নির্দিষ্ট কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে সংক্ষেপে জানা দরকার।
১। অন্তর্নিহিত মূল্যের অনুপস্থিতি
আমরা ইতোমধ্যেই কয়েকবার উল্লেখ করেছি যে ফিয়াট কারেন্সির কোনো অন্তর্নিহিত ভ্যালু থাকে না। মূলত সরকারের উপর আস্থা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উপর নির্ভর করে এই কারেন্সি গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে থাকে। আর এটিই ফিয়াট মানির সর্বপ্রধান বৈশিষ্ট্য।
২। আঈন স্বীকৃতি
যেকোনো দেশের মুদ্রা সেই দেশের আঈন দ্বারা স্বীকৃত থাকে। অর্থাৎ, উক্ত মুদ্রা দ্বারাই আপনাকে ক্রয়-বিক্রয়, কর প্রদান ও ঋণ পরিশোধের মতো অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পাদন করতে হবে। আপনি চাইলেই অন্য কোনো মুদ্রা ব্যবহার করে লেনদেন করতে পারবেন না। কেউ যদি অর্থ হিসেবে ঐ মুদ্রা গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায় তাহলে সে আসলে আঈন অমান্য করছে।
৩। সরকারি নিয়ন্ত্রণ
যেকোনো দেশের মুদ্রা সেই দেশের সরকার খুব নিবিরভাবে পর্যবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ করে। সরকার নিজে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাহায্যে এই মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ, ইস্যু ও মান রক্ষার কাজ করে। আর এই কাজে মনিটারি পলিসি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ফিয়াট মানির সুবিধা
ফিয়াট মানির বেশ কিছু সুবিধার কারণে এটি বিশ্বব্যাপী এতো পরিচিত হয়ে উঠেছে। যেমন -
১। নমনীয়তা
ফিয়াট মানি যেহেতু কোনো ধরণের ফিজিকাল কমোডিটি দ্বারা সমর্থিত নয়, তাই সরকার বেশ সহজেই মুদ্রার বিষয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। যেমন - মন্দার সময় মুদ্রার সরবরাহ বৃদ্ধি অথবা মুদ্রাস্ফীতির সময় মুদ্রার সরবরাহ হ্রাস।
২। উপযোগিতা
বেশি সংখ্যক ধাতব মুদ্রার তুলনায় বেশি সংখ্যক কাগজি মুদ্রা বহন করা অনেক সহজ বলেই প্রথমে কাগজি মুদ্রা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। আবার বর্তমান সময়ে ডিজিটাইজেশনের ফলে অনেক লেনদেন ইলেক্ট্রনিক উপায়ে হচ্ছে। আর এই ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমগুলোর সাথে ফিয়াট মানি বেশ সহজেই ইন্টিগ্রেট করা যাচ্ছে।
৩। স্থিতিশীলতা
অর্থনীতিবিদদের মতে ঠিক ভাবে ম্যানেজ করতে পারলে ফিয়াট মানি কমোডিটি মানির চাইতেও বেশি স্থিতিশীলতা অফার করতে পারে। আবার ফিয়াট মানির মূল্য খুব সহজেই প্রেডিক্ট করা যায়।
ফিয়াট মানির অসুবিধা
সুবিধার পাশাপাশি ফিয়াট মানির বেশ কিছু অসুবিধা’ও রয়েছে। যেমন -
১। মুদ্রাস্ফীতির ঝুকিঁ
মন্দার প্রভাব হ্রাস করতে অথবা অসৎ উদ্দেশ্যে সরকার অনেক বেশি পরিমাণে কারেন্সি ইস্যু করে ফেলতে পারে, এতে করে অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতির মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুকিঁ থাকে।
২। জাল নোট
আসল মুদ্রাকে নকল মুদ্রা থেকে আলাদা করার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও জাল নোট প্রস্তুতকারী অসৎ ব্যাক্তিগণ আরো নতুন নতুন উপায় খুজে বের করে ফেলে।
৩। জনগণের আস্থা
ফিয়াট মানিকে জনগণ মূল্যবান মনে করে বলেই এটি সর্বজনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়। কোনো কারণে মুদ্রার উপর থেকে জনগণের আস্থা সরে গেলে এই মুদ্রার অকেজো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়।
আধুনিক অর্থনীতির জন্য ফিয়াট মানি কেনো উপযুক্ত?
বিংশ শতাব্দির পূর্বে, বিশ্বের প্রায় সকল দেশ গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ফলো করতো অথবা কোনো ফিজিকাল কমোডিটির সাথে নিজেদের কারেন্সিকে বেধে রাখতো। তবে বিশ্বায়নের ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং লেনদেন অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। এই ক্রমবর্ধমান লেনদেনের সাথে মাইন থেকে বের হওয়া স্বল্প পরিমাণ স্বর্ণ তাল মেলাতে পারছিল না। আবার একই কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোও নিজেদের রিজার্ভে এতো বেশি পরিমাণ স্বর্ণ জমা রাখতে পারছিল না।
ফলে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড এক সময় গিয়ে গ্লোবাল মার্কেটগুলোর জন্য অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এবং গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড ফলো করে এমন দেশগুলোর জন্য এই সিস্টেম হয়ে দাঁড়ায় অর্থনৈতিক বাধা। তাই বিংশ শতকের মাঝের এবং শেষের দিকে এসে বেশিরভাগ দেশ গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড থেকে বেরিয়ে আসতে শুরু করে।
ফিয়াট মানি সরকারগুলোর কাছে তাদের নিজেদের কারেন্সি ম্যানেজ করা, মনিটারি পলিসি নির্ধারণ করা ও অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখার অন্য অনেক বেশি নমনীয়তা এনে দেয়, যা গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডে ছিল না। আবার এই ফিয়াট কারেন্সির মাধ্যমে ফ্র্যাকশনাল রিজার্ভ ব্যাংকিং চালু করা সম্ভব হয়, যার ফলে কমার্শিয়াল ব্যাংকগুলো তাদের হাতে থাকা অর্থ একের অধিক মানুষের কাছে ঋণ হিসেবে প্রদান করে ক্রমবর্ধ্মান অর্থনীতির চাহিদা পূরণ করতে পারে। তাই গোল্ড স্ট্যান্ডার্ডের চেয়ে ফিয়াট মানির পদ্ধতি আধুনিক অর্থনীতির জন্য অনেক বেশি কার্যকর হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পেছনে কি ফিয়াট মানি দায়ী?
একটি দেশ যখন নিজের অর্থ নিজেই প্রিন্ট করা শুরু করে, তখন সবসময়ই উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। তবে ‘’উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পেছনে ফিয়াট মানিই দায়ী’’ - এমনটা ঠিক বলা যায় না। কারণ ইতিহাসে দেখা যায় যে, যখন বিভিন্ন মূল্যবান উপাদান যেমন - সোনা বা রুপা কমোডিটি মানি হিসেবে ব্যবহার করা হতো, তখনো বিভিন্ন দেশে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিতো।
উচ্চ মুদ্রাস্ফীতি যেহেতু অনেকগুলো ফ্যাক্টরের কারণে হতে পারে, তাই এখানে কোনো একক স্টেটমেন্ট দিয়ে ফেলা যায় না। তবে উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির পেছনে সবচেয়ে কমন ফ্যাক্টরগুলো হচ্ছে - অর্থনৈতিক উৎপাদন একেবারে কমে যাওয়া অথবা দেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয়া।
আধুনিক সময়ে বেশিরভাগ উন্নত দেশ বেশ হালকা পরিমাণের মুদ্রাস্ফীতির মধ্য দিয়ে গিয়েছে। আর অর্থনীতিবিদদের তে, অর্থনীতিতে সামান্য পরিমাণ মুদ্রাস্ফীতি থাকা অর্থনীতির জন্য ভালো। কারণ, এতে করে মানুষ তাদের অর্থ জমা করে না রেখে বিভিন্ন স্থানে কাজে লাগা ও এতে করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বৃদ্ধি পায়। তবে আধুনিক সময়ে যেকোনো দেশের জন্য নিজেদের মুদ্রাকে স্থিতিশীল রাখা ও শক্তিশালী করে তোলার কোনো বিকল্প নেই।
পরিসংহার
পরিশেষে বলা যায় যে, ফিয়াট মানির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে কারেন্সির স্থিতিশীলতা মেইনটেইন করা ও মুদ্রার সরবরাহকে নিয়ন্ত্রণ করা। ফিয়াট মানির কোনো অন্তর্নিহিত মূল্য না থাকলেও, এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে, যেমন - নমনীয়তা, উপযোগিতা ও স্থিতিশীলতা। ফিয়াট মানিকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটারি পলিসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
- https://www.investopedia.com/terms/f/fiatmoney.asp
- https://www.creditkarma.com/money/i/what-is-fiat-currency
- https://corporatefinanceinstitute.com/resources/economics/fiat-money-currency/
- https://www.financestrategists.com/financial-advisor/fiat-money/
- https://boycewire.com/fiat-money-definition/
- https://www.bankrate.com/investing/what-is-fiat-money/#fiat-money-failures
- https://www.wallstreetmojo.com/fiat-money/
Next to read
ফ্রিমিয়াম মডেল (Freemium Model)


Needs, Wants, Demands (প্রয়োজন, চাওয়া এবং চাহিদা)

বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ

সেলস এবং মার্কেটিং কিভাবে একসাথে কাজ করে

বিক্রয় বৃদ্ধি করার ৬টি নীতি

ব্যাংক ব্যবস্থার ইতিহাস

বাংলাদেশ ব্যাংক

চাহিদাবিধি (Law of Demand) কী?

হর্ষদ মেহেতা স্ক্যাম (1992 Indian Stock Market Scam)
