ব্র্যান্ডিং কেনো গুরুত্বপূর্ণ?

332
article image

আপনার ব্র্যান্ড বা কোম্পানী সম্পর্কে কাস্টমারদের কি পারসেপশন রয়েছে তা বোঝাতেই ব্র্যান্ডিং শব্দটি ব্যবহার করা হয়। সহজ কথায় ব্র্যান্ডিং হচ্ছে আপনার কোম্পানী সম্পর্কে আপনার কাস্টমারদের ইম্প্রেশন। ভালো ব্র্যান্ডিং অনেকগুলো কারণে গুরুত্বপূর্ণ, যেমন - কাস্টমার আউটরিচ বৃদ্ধি করে, ট্রাস্ট গেইন করতে সাহায্য করে, মার্কেটিং সহজ করে তোলে, কর্মীদের মোটিভেটেড রাখে এবং লয়াল কাস্টমার বেইজ তৈরিতে সাহায্য করে ইত্যাদি।

Key Points

  • ব্র্যান্ডিং হচ্ছে এমন একটি আইডেন্টিটি তৈরি করার প্রসেস, যা আপনার ব্র্যান্ডকে একটি মানবিক রুপ প্রদান করবে এবং প্রতিদ্বন্দীদের থেকে আলাদা হতে সাহায্য করবে।
  • ব্র্যান্ডিং-এর সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুবিধা হচ্ছে এই যে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে আরো বেশি পরিমাণে মানুষ জানতে পারবেন।
  • ভালো ব্র্যান্ডিং স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে আপনার কাস্টমারদের বোঝাতে পারবেন যে আপনার কোম্পানী একটি স্বনামধন্য এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান।
  • ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে কর্মীরা কোম্পানীর সম্পর্কে আরো বেশি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করে এবং এখানে কাজ করে তারা কিছুটা গর্বিত’ও অনুভব করেন।
  • ভালো ব্র্যান্ডিং একটি কোম্পানীকে আরো বেশি হিউম্যান টাচ দিতে পারে এবং এতে করে কাস্টমাররা কোম্পানীর সাথে আরো বেশি রিলেট করতে পারেন।

ভূমিকা

ভালো ব্র্যান্ডিং আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিসকে কাস্টমারদের কাছে আরো বেশি স্মরণীয় করে তোলার পাশাপাশি কাস্টমারদের বুঝতে সাহায্য করে যে তাদের আপনার ব্র্যান্ডের থেকে ঠিক কতোটা আশা করা উচিত। ভালো ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দীদের থেকে সবসময় এগিয়ে থাকা যায় এবং কাস্টমারদের জানানো যায় যে আপনার ব্র্যান্ড কেনো প্রতিদ্বন্দীদের থেকে বেশি ভালো। অ্যাডভার্টাইজিং, কাস্টমার সার্ভিস, সোশ্যাল রেসপনসিবিলিটি এবং রেপুটেশন বৃদ্ধি করে একটি প্রপার ব্র্যান্ডিং করা সম্ভব এবং এই সবগুলো উপাদান আপনার ব্র্যান্ডকে একটি মানবিক রুপ দিতেও খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ব্র্যান্ডিং কী?

ব্র্যান্ডিং হচ্ছে এমন একটি আইডেন্টিটি তৈরি করার প্রসেস, যা আপনার ব্র্যান্ডকে একটি মানবিক রুপ প্রদান করবে এবং প্রতিদ্বন্দীদের থেকে আলাদা হতে সাহায্য করবে। ব্র্যান্ডিং করার উদ্দেশ্য হচ্ছে কাস্টমারদের ব্রেইনে নিজের ব্র্যান্ডের নামকে সেট করে ফেলা যাতে করে পরবর্তী কোনো প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রয়োজন হলে তাদের মাথায় যেন সর্বপ্রথম আপনার ব্র্যান্ডের নামটাই আসে।

ব্র্যান্ডের মাধ্যমে কোম্পানীর ভিশন এবং মিশন সম্পর্কেও কাস্টমারদের জানানো যায়। এতে করে কাস্টমাররা কোম্পানীর উদ্দেশ্য সম্পর্কে একটি ক্লিয়ার ধারণা পায় এবং কোম্পানীর সাথে আরো বেশি রিলেটেড ফিল করেন।

ব্র্যান্ডিং কেনো গুরুত্বপূর্ণ?

বাজারে থাকা আরো ১০টা কোম্পানীর মাঝে আপনার ব্র্যান্ড যেনো আলাদাভাবে কাস্টমারের নজরে আসে তা এনশিওর করতে ভালো ব্র্যান্ডিং-এর বিকল্প নেই। বিশেষকরে বর্তমান তথ্য-প্রযুক্তির সময় প্রতিদ্বন্দীতা যেন আগের যেকোনো সময়ের চাইতে অনেক বেশি। এই কারণে প্রপার ব্র্যান্ডিং এর পেছনে আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণে ইনভেস্ট করতে হবে। কিন্তু এই ইনভেস্ট করার পেছনে আপনার জন্য কি কি ইনসেন্টিভ রয়েছে? আসুন জেনে নেই ব্র্যান্ডিং-এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কারণ।

১। আরো বেশি মানুষ আপনার ব্যবসায় সম্পর্কে জানবেন

ব্র্যান্ডিং-এর সর্বপ্রথম এবং সবচেয়ে আকর্ষণীয় সুবিধা হচ্ছে এই যে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে আরো বেশি পরিমাণে মানুষ জানতে পারবেন। আর যতো বেশি মানুষ আপনার ব্যবসায় সম্পর্কে জানবেন, আপনার কাস্টমার পুল ততো বেশি বড় হবে। ভালো ব্র্যান্ডিং করলে কাস্টমার নজরে আসার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে।

অপরদিকে আপনার যদি বিশেষ কোনো ব্র্যান্ডিং না থাকে, তাহলে অনেক টাকা মার্কেটিং-এর পেছনে খরচ করলেও আপনি বিশেষ কোনো সুবিধা করতে পারবেন না। স্বল্পমেয়াদে কাস্টমাররা আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে জানবেন ঠিকই, তবে কিছুক্ষণ পরেই আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে তারা সবকিছু ভুলে যাবে। কারণ ততোক্ষণে আরো বেশ কিছু ব্র্যান্ড তাদের নজরে চলে এসেছে।

আবার আপনার ব্র্যান্ডের লোগো, লোগোর রঙ এবং অন্যান্য মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির মাঝে সমন্বয় করার মাধ্যমে এটা এনশিওর করা যায় যে কাস্টমাররা আপনার ব্র্যান্ডকে আরো বেশ কিছু সময় মনে রাখবেন। এখানে নান্দনিকতার কথাটা না বললেই নয়। স্বভাবগতভাবেই মানুষ নান্দনিকতা পছন্দ করে, তাই আপনার ব্র্যান্ডকে যতোটা সম্ভব নান্দনিকতার সাথে তুলে ধরার চেষ্টা করতে হবে।

২। কাস্টমারের বিশ্বাস অর্জন করতে সাহায্য করে

আপনার ব্র্যান্ডের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে কাস্টমারদের বিশ্বাস। কিন্তু কাস্টমারদের বিশ্বাস অর্জন করা খুবই চ্যালেঞ্জিং কাজ। তার উপর আপনার ব্র্যান্ডিং যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে এই কাজ করা আরো বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। কাস্টমারদের বড় একটি অংশ কোনো নতুন ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ক্রয় করার আগে অবশ্যই তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করে নেন। কোনো বিশ্বাসযোগ্য ব্র্যান্ডের সার্ভিস নিতে যদি কিছুটা বেশি’ও খরচ করতে হয়, তাও তারা দ্বিধাবোধ করেন না।

“স্যাটিসফাই ডট কমের একটি সার্ভের মাধ্যমে জানা যায় যে ৪৬% কাস্টমার বেশি দাম দিয়ে পণ্য ক্রয় করতে ইচ্ছুক যদি তারা ব্র্যান্ডকে ট্রাস্ট করেন”।

ভালো ব্র্যান্ডিং স্ট্র্যাটেজির মাধ্যমে আপনার কাস্টমারদের বোঝাতে পারবেন যে আপনার কোম্পানী একটি স্বনামধন্য এবং বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান। আপনার থেকে তারা অবশ্যই একটি ভালো সার্ভিস পাবেন এবং আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস যে তাদের কষ্টের টাকার যোগ্য, এমন একটিও বিশ্বাস’ও আপনি তাদের মনে গেথে দিতে পারবেন। এতে করে আপনি বর্তমান প্রতিদ্বন্দীদের থেকে নিমিষেই অনেকটা এগিয়ে যাবেন।

আপনার কাস্টমারদের বিশ্বাস ‘Word of Mouth’ মার্কেটিং-এ সাহায্য করে। যারা আপনার ব্র্যান্ডকে বিশ্বাস করে, তারা অবশ্যই তাদের পরিচিতদের কাছে আপনাকে রেফার করবে। এতে করে স্বল্পমেয়াদে আপনাকে কিছু ইনভেস্ট করতে হলেও, দীর্ঘমেয়াদে আপনার বিক্রয় বেশ ভালো পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে।

৩। বিজ্ঞাপনের মান বৃদ্ধি করতে পারবেন

আপনি যদি কোনো নতুন ব্র্যান্ড নিয়ে কাজ করে থাকেন, তাহলে এই পয়েন্টের সাথে অবশ্যই রিলেট করতে পারবেন। যেকোনো ব্র্যান্ড যেকোনো বিষয়ে বিজ্ঞাপন দিতে পারে না। বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় অবশ্যই তাদের নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। কারণ আপনার ব্র্যান্ডের ক্রেডিবিলিটিই যদি ভালো না হয়, তাহলে আপনি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার হাজার চেষ্টা করেও কোনো সুফল পাবেন। বরং সম্ভাবনা আছে যে আপনার ব্র্যান্ড হয়ে উঠবে হাসির পাত্র।

“পিডব্লিউসি-এর একটি সার্ভে থেকে জানা যায়, ৬৪% কাস্টমার এমন ব্র্যান্ডকে পছন্দ করেন যারা বিভিন্ন সোশ্যাল ইস্যু নিয়ে সচেতন ভূমিকা পালন করেন।”

আবার বিজ্ঞাপন ছাড়া বেশিদুর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আপনি যদি ব্র্যান্ডের পরিধি বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন কাস্টমারদের রিচ করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই বিজ্ঞাপনের আশ্রয় নিতেই হবে। আর বিজ্ঞাপন দেয়ার সময় সেই বিজ্ঞাপনের ধরণ এবং ম্যাসেজ আপনার ব্র্যান্ডের সাথে অ্যালাইন করছে কি না সেই বিষয়টিও আপনাকে মাথায় রাখতে হবে।

আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু যদি বেশি থাকে এবং কাস্টমারদের মনে আপনার ব্র্যান্ডের ক্রেডিবিলিটি যদি বেশি থাকে তাহলে আপনি যেকোনো বিষয়েই বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন। আপনি যদি সময়মতো প্রোডাক্ট ডেলিভার এবং ভালো কাস্টমার সার্ভিস প্রদান করতে পারেন, তাহলে আপনি অবশ্যই ক্লিয়ারেন্ট সেল-এর অফার নিয়ে আসতে পারেন।

অপরদিকে আপনার যদি ইতোমধ্যেই প্রচুর পরিমাণে পেন্ডিং অর্ডার থাকে এবং কাস্টমারদের থেকে ক্রমাগত এই বিষয়ে কমপ্লেইন আসতে থাকে যে তারা কেনো সময় মতো ডেলিভারি পাচ্ছেন না, তার মানে কাস্টমারদের মনে একটি নেগেটিভ ধারণা তৈরি হয়েছে আপনার ব্র্যান্ড সম্পর্কে। এই সময়ে একটি ক্লিয়ারেন্স সেলের অফার দেয়া মোটেও ভালো কোনো সিদ্ধান্ত হবে না।

৪। ব্র্যান্ডিং আপনার কর্মীদের জন্য ইতিবাচক

ব্র্যান্ডিং আপনার প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ কাঠামোতে’ও ভ্যালু যোগ করে। আপনাকে কোম্পানীর ভেতর এমন একটি পরিবেশ গঠন করতে হবে যেখানে কর্মীরা সাচ্ছন্দ্যে কাজ করবেন এবং প্রতিষ্ঠানকে নিজের আপন বলে মনে করবেন। ভালো ব্র্যান্ডিং এই কাজটি অনেক সহজ করে দেয়। ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে কর্মীরা কোম্পানীর সম্পর্কে আরো বেশি ইতিবাচক মনোভাব পোষন করে এবং এখানে কাজ করে তারা কিছুটা গর্বিত’ও অনুভব করেন।

ভালো ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে এটা এনশিওর করা যায় যে আপনার কর্মীরা সবসময় মোটিভেটেড আছেন এবং তারা যেই প্রজেক্টেই কাজ করেন না কেনো, সেটাতে তারা তাদের সর্বোচ্চ ঢেলে দিবেন।

“এক্সেনচার-এর একটি রিসার্চে জানা যায় যে, ৬৫% মানুষ কোনো ব্র্যান্ডের পণ্য ক্রয় করবেন কি না করবেন না, এই সিদ্ধান্তে উক্ত ব্র্যান্ডের সিইও এবং কর্মীদের মনোভাব প্রত্যক্ষভাবে প্রভাব ফেলে।”

কর্মীদের মোটিভেটেড রাখার জন্য এবং কোম্পানীর সাথে আরো বেশি কানেক্টেড ফিল করানোর জন্য আপনি তাদেরকে আপনার ব্র্যান্ডের লোগোসহ অ্যাপারেল বা মার্চেন্ডাইজ গিফট করতে পারেন। এতে করে কর্মীরা’ও খুশি থাকবেন এবং পরোক্ষভাবে আপনার মার্কেটিং’ও হয়ে যাবে। আবার ভালো ব্র্যান্ডিং টপ কোয়ালিটি ট্যালেন্ট আকর্ষণ করতেও সাহায্য করে।

আপনার ব্র্যান্ড ভ্যালু যদি বেশি থাকে তাহলে দেশের মেধাবী এবং কর্মঠ মানুষরা আপনার ব্র্যান্ডে চাকরি করতে চাইবেন। এতে করে আপনি শুরু থেকেই স্কিলফুল কর্মী বাছাই করে নিতে পারবেন এবং দীর্ঘমেয়াদে তারা আপনার ব্র্যান্ডের জন্য বেশ ভালো ভূমিকা পালন করবেন।

৫। ভালো ব্র্যান্ডিং লয়াল কাস্টমার বেইজ তৈরিতে সাহায্য করে

আপনি অবশ্যই এমন কাস্টমারদের প্রিফার করবেন না, যারা কি না মাত্র একবার আপনার পণ্য ক্রয় করেই চলে যাবেন। সব প্রতিষ্ঠানই এমন কাস্টমারদের চায় যারা বাজারের অন্যান্য ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বাদ দিয়ে শুধু তার ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস ব্যবহার করবেন। ভালো ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে এই রিটার্নিং কাস্টমার পাওয়া খুব সহজ হয়ে যায়।

ভালো ব্র্যান্ডিং একটি কোম্পানীকে আরো বেশি হিউম্যান টাচ দিতে পারে এবং এতে করে কাস্টমাররা কোম্পানীর সাথে আরো বেশি রিলেট করতে পারেন। ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে কাস্টমারদের সাথে একটি সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে তোলা যায়, যা আলটিমেটলি একটি লয়াল কাস্টমার বেইজ তৈরিতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৬। ব্র্যান্ডিং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের খুশি রাখে

এতোক্ষণ আমরা শুধু কাস্টমার এবং কর্মীদের নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু আপনি কি জানেন যে কাস্টমার এবং কর্মী ছাড়া আপনার ব্র্যান্ডের আরো অনেক স্টেকহোল্ডার রয়েছেন যারা পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে আপনার ব্র্যান্ডের সাথে জড়িত?

এক্সটার্নাল স্টেকহোল্ডারদের মাঝে সরকার, বিনিয়োগকারী এবং সরবরাহকারীরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ব্র্যান্ড ইমেজ যদি পজিটিভ হয়, তাহলে আপনি সহজেই সরকারি বিভিন্ন কাজের সুবিধা পেয়ে যাবেন। ভালো নেটওয়ার্কিং-এর মাধ্যমে আপনি দেশের সরকারের সাথে কাজ করার সুযোগ’ও পেয়ে যেতে পারেন।

আবার আপনার যদি এক্সটার্নাল ইনভেস্টর থাকে অথবা ভবিষ্যতে আপনার আইপিও লঞ্চ করার চিন্তা করেন, তাহলে ভালো ব্র্যান্ডিং-এর কোনো বিকল্প নেই। এতে করে সাধারণ মানুষ আপনার শেয়ার ক্রয় করার প্রতি আরো বেশি আগ্রহী হবেন এবং শেয়ারের মূল্য সবসময় উর্ধগতিতে থাকবে। ভালো সরবরাহকারী বা সাপ্লাইয়ার পেতেও ব্র্যান্ডিং বেশ ভালো প্রভাব রাখে।

পজিটিভ ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে আপনার মানসম্মত সাপ্লাইয়ারদের সাথে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এতে করে আপনার প্রোডাক্ট বা সার্ভিস মান বৃদ্ধি পাবে এবং কাস্টমাররা’ও খুশি থাকবেন।

ভালো ব্র্যান্ডিং-এর উদাহরণ

বাস্তব জীবনের কিছু ভালো ব্র্যান্ডিং দেখে নেয়া যাক।

১। অ্যাপল (Apple)

বর্তমান জেনারেশনের সবচেয়ে সফল ব্র্যান্ডগুলোর একটি হচ্ছে অ্যাপল। পৃথিবীর যে প্রান্তেই আপনি যান না কেনো, অ্যাপলকে চেনে না এমন মানুষ খুজে পাওয়া বেশ কঠিন। সবচেয়ে ভালো মানের প্রোডাক্ট, সেরা কাস্টমার সার্ভিস এবং ইউনিক ডিজাইন দিয়ে তারা নিজেদের ব্র্যান্ডিং করেছেন।

একই সাথে তারা নিজেদের স্টোরকে’ও একটি ভিন্ন রুপ দিয়েছে। অ্যাপলের স্টোরগুলো তৈরির ক্ষেত্রে কোম্পানীর প্রিফারেন্সকে প্রাধান্য না দিয়ে বরং লোকাল কালচারকে প্রাধান্য দেয়া হয় বেশি।

২। কোকা কোলা (Coca Cola)

সফল ব্র্যান্ডিং-এর সবচেয়ে চমৎকার উদাহরণ হচ্ছে কোকা কোলা। ধারাবাহিকতার সাথে কোয়ালিটি মেইনটেইন করা এবং চমৎকার সব মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি ফলো করার মাধ্যমে তারা নিজেদের ব্র্যান্ডিং করেছে। নিজেদের ব্র্যান্ডিং-এর ক্ষেত্রে অ্যাপলের মতো কোকা কোলা’ও লোকাল কালচারকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। আকর্ষণীইয় সব অ্যাডস-এর মাধ্যমে তারা এমনভাবে ব্র্যান্ডিং করেছে যে ফ্যামিলি, উৎসব, খুশি - এই সব শব্দ মাথায় আসলেই কোকা কোলার কথা মাথায় চলে আসে।

৩। স্টারবাকস (Starbucks)

ব্র্যান্ডিং-এর ক্ষেত্রে কিভাবে কাস্টমারদের প্রিফারেন্স দিতে হয় তা স্টারবাকস-এর থেকে শেখা উচিত। নিজেদের স্টোরগুলোকে তারা আরামদায়ক, ইউনিক এবং ফ্রেন্ডলিভাবে তৈরি করেছেন যাতে কাস্টমাররা স্টোরে আসতে এবং কফি উপভোগ করতে কোনো ধরণের দ্বিধাবোধ না করেন।

৪। এয়ারবিএনবি (Airbnb)

ঘুড়তে গিয়ে অপরিচিত মানুষদের বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে ওঠার জন্য কোম্পানীর প্রতি ঠিক কতোটা বিশ্বাস থাকা দরকার বলুন তো? জি, এতো কঠিন কাজটিও এয়ারবিএনবি খুব সহজে করে দেখিয়েছে। সফল ব্র্যান্ডিং-এর জন্য ট্রাভেলারদের কাছে এখন পরম আস্থার নাম এয়ারবিএনবি।

৫। ম্যাকডোনাল্ডস (McDonald’s)

অনেক চেষ্টার পর ম্যাকডোনাল্ডস এমন একটি ব্র্যান্ডিং স্ট্র্যাটেজি তৈরি করেছে, যেখানে আপনার পৃথিবীর যেই প্রান্তেই তাদের খাবার খান না কেনো, একই রকম স্বাদ এবং এক্সপিরিয়েন্স পাবেন। এই কারণে পৃথিবীর সকল প্রান্তের কাস্টমাররা ভালো মানের খাবার খেতে সবসময় ম্যাকডোনাল্ডস-এ চলে আসেন।

উপসংহার

ভালো ব্র্যান্ডিং করতে চাইলে আপনাকে প্রোডাক্ট ডিজাইন, লোগো এবং রঙ ছাড়াও আরো অনেক কিছু নিয়ে ভাবতে হবে। জি, প্রতিষ্ঠান টিকিয়ে রাখার পেছনে ব্র্যান্ডিং ঠিক এতোটাই গুরুত্বপূর্ণ। কোম্পানী কালচার, কাস্টমার এক্সপিরিয়েন্স এবং ব্র্যান্ড ফিলোসফি পরিবর্তন করার মাধ্যমে আপনি চাইলেই ব্র্যান্ডকে একটি নতুন লুক দিতে পারেন। ভালো ব্র্যান্ডিং-এর জন্য আপনার ব্র্যান্ডকে আরো বেশি মানবিক করে তোলার চেষ্টা করতে হবে। এতে করে কাস্টমাররা আপনার ব্র্যান্ডের সাথে আরো বেশি কানেক্ট করতে পারবেন এবং প্রতিদ্বন্দীদের থেকে আপনি সর্বদা এগিয়ে থাকবেন।

  • https://www.thebrandingjournal.com/2016/06/why-is-branding-important-business/
  • https://www.brandingmag.com/2015/10/14/what-is-branding-and-why-is-it-important-for-your-business/
  • https://blog.hubspot.com/marketing/branding
  • https://www.appypie.com/why-is-branding-important
  • Satisfy Survey
  • https://www.salsify.com/resources/report/content-2022-salsify-consumer-research-the-value-of-building-brand-trust
  • PWC Survey
  • https://www.pwc.com/us/en/advisory-services/publications/consumer-intelligence-series/pwc-consumer-intelligence-series-customer-experience.pdf
  • Accenture Survey
  • https://www.accenture.com/_acnmedia/Thought-Leadership-Assets/PDF-5/Accenture-The-rise-of-the-purpose-led-brand-Accenture-Strategy-Infographic.pdf#zoom=50
Next to read
Canvas & Methods
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)

অধিক শ্রম ও অর্থ খরচের এই ঝুঁকি এড়াতে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন ধরনের বিজনেস স্ট্র‍্যাটেজি যেখানে পণ্য প্রয়োজনীয় কিছু ফিচার দিয়ে বাজারজাত করা হয়। পরবর্তীতে গ্রাহকদের চাহিদা পর্যালোচনা করে ধীরে ধীরে এই পণ্যের উন্নয়ন করা হয় এবং নতুন নতুন উপাদান/ফিচার যুক্ত করা হয়। ব্যবসায়িক জগতে একে বলা হয় মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট।

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)
Business Models
সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)
নিট মুনাফা (net profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং কিভাবে হিসাব করবেন
Business
নিট মুনাফা (net profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং কিভাবে হিসাব করবেন
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)
Branding
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)
ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?
Economics
ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
Sales
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
ব্রেটন উডস এগ্রিমেন্ট
Agreement
ব্রেটন উডস এগ্রিমেন্ট
Startup funding Pre-seed to series A, B, C brief discussion
Investment
Startup funding Pre-seed to series A, B, C brief discussion