ব্যবসায়কি আইন কি? উদাহরণ সহ বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন

1031
article image

আইনের যে দিক বা শাখা সুষ্ঠ সুন্দরভাবে ব্যবসায় পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রনের জন্য ব্যবহার করা বা অনুসরণ করা হয়, তাকে ব্যবসায়িক আইন বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে আইনের অধিনে একটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয় তাই ব্যবসায় আইন। কারো মতে ব্যবসায় সংক্রান্ত মামলা মোকদ্দমা যে আইনের দ্বারা নিম্পত্তি করা হয় তাকেই ব্যবসায়িক আইন বলে। সর্বশেষে বলা যায়, ব্যবসায় সংক্রান্ত যে কোন লেনদেন এবং লেনদেন হতে সৃষ্ট সমস্যাদি নিয়ন্ত্রন ও নিস্পত্তি সংক্রান্ত বিধি-বিধান বা নিয়মকে ব্যবসায় বা বানিজ্যিক আইন বলে।

Key Points

  • ইংরেজী কমন “ল” হলো বাংলাদেশের ব্যবসায় আইনের অন্যতম উৎস।
  • বিক্রয় আইন ১৯৩০ এ বলা আছে কোন ব্যক্তি অবৈধ কোন পণ্য সরকারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত বিক্রয় করতে পারবে না
  • প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে ন্যূনতম শেয়ারহোল্ডার থাকতে হয় দুই জন। আর সর্বোচ্চ শেয়ারহোল্ডার হতে পারে ৫০ জন।
  • দোকান ও প্রতিষ্ঠান সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য প্রবর্তিত হয় ১৯৬০ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন
  • ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর পূর্ব পাকিস্তান কারখানা আইন ১৯৬৫ কে সামান্য পরিবর্তন করে বাংলাদেশে কারখানা আইন ১৯৬৫ নামে হুবহু গ্রহণ করা হয়
  • কোম্পানী আইন সম্পর্কে ১৯৯৪ এর (১৮ নং আইন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত কোম্পানী (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ২০২০ এর ২৪ নং আইন এ বলা হয়েছে।

ব্যবসায়িক আইনের সংজ্ঞা

সাধারণ অর্থে আইন হলো এমন কতগুলো নিয়মকানুন বা বিধি-বিধান, যা সমাজে বসবাসরত মানুষের জীবনযাত্রাকে সুষ্ঠ, সুন্দর এবং সুশৃংঙ্খলভাবে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রণ করে। ব্যবসা বাণিজ্য বাণিজ্য সুষ্ঠভাবে পরিচালনা করার জন্য প্রয়োজন হয় ব্যবসায়িক আইন।

ব্যবসায়িক আইন হলো এমন আইন, যার অধীনে দেশের ব্যবসায় বাণিজ্য সুশৃঙ্গলভাবে পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায় যথা- একমালিকানা, অংশীদারী, যৌথমূলধনী, সমবায় প্রভৃতি চালু আছে। যদি ইচ্ছে মতো সবাই ব্যবসায় করে তবে অবশ্যই বিঘ্নিত হবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম। রক্ষা করা সম্ভব হবে না মালিক-শ্রমিক ভোক্তা কারো স্বার্থ। তাই একজন সফল উদ্যোক্তা হতে হলে কিংবা একজন সফল ব্যবসায়ী হতে হলে অবশ্যই ব্যবসায়িক আইনের খুঁটিনাটি জানা থাকা জরুরি।

বাংলাদেশের ব্যবসায়িক আইনের উৎস

অতিপ্রাচীন কাল হতেই বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানে মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ রীতি নীতি অনুযায়ী ব্যবসায় লেনদেন সমূহ নিয়ন্ত্রীত হতো। পরবর্তীতে বৃটিশদের শাসনামলে ব্যবসায় বানিজ্যের ক্ষেত্রে এই উপমহাদেশে বৃটিশ আইন যুক্ত হয়। তাই অদ্যবধি এই উপমহাদেশের ব্যবসায় বানিজ্যের ক্ষেত্রে ইংরেজী আইনের ব্যাপক প্রচলন লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশে ব্যবসায়-বানিজ্যে যে সমস্ত আইনের উৎসমূহ প্রচলিত রয়েছে তা নিম্নরূপ-

১. বিধিবদ্ধ আইন (Statutory Law) :

ব্যবসায় আইনের অন্যতম উৎস হলো বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ কর্তৃক প্রনীত আইনসমূহ।

২. ইংরেজী সাধারণ/কমন আইন (English Common Law) :

ইংরেজী কমন “ল” হলো বাংলাদেশের ব্যবসায় আইনের অন্যতম উৎস। যে সমস্ত ক্ষেত্রে বাংলাদেশে প্রচলিত আইন সমূহ কোন সমাধান দিতে পারেনা, সে সমস্ত ক্ষেত্রে বিচারপতিগণ ইংরেজী কমন ‘ল’ এর সাহায্য নেন ও সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত দেন।

৩. স্থানীয় নীতি ও প্রথা (Local Usages and Customs):

বাংলাদেশে ব্যবসায় আইনের অন্যতম একটি উৎস হলো স্থানীয় রীতিনীতি ও প্রথা। যদি কোন স্থানীয় রীতিও প্রথা ব্যবসায়-বাণিজ্যর সাথে বিতর্কিত না হয় তাহলে রীতি ও প্রথা ব্যবসায় আইনের ক্ষেত্রে প্রবর্তিত হয়।

৪. ন্যায়নীতি (Equity):

বাংলাদেশের যে সকল ব্যবসায়ীক সমস্যা স্থানীয় রীতিনীতি ও প্রথা বা অন্যকোন আইন দ্বারা সমাধান না হয় সে সমস্ত ক্ষেত্রে বিচারপতিগণ ন্যায়নীতির উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ সিদ্ধান্তসমূহই পরবর্তিতে ব্যবসায় আইনের উৎস হিসেবে গণ্য হয়।

বিভিন্ন প্রকার ব্যবসায়কি আইন

বর্তমান ব্যবসায় জগতে সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য একজন ব্যবসায়ীকে ব্যবসায় পরিচালনা সম্পর্কিত নানা বিধি-বিধান বা আইন জানা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। ব্যবসায়-বাণিজ্য সুষ্ঠ ও সুন্দর ভাবে পরিচালনা, নিয়ন্ত্রন ও চুক্তিসম্পাদনের জন্য একজন ব্যবসায়ির নিম্নের আইনগুলো জানা থাকা অত্যান্ত জরুরি।

চুক্তি আইন (Law of Contract):

ব্যবসায় বাণিজ্য সুশৃঙ্গলভাবে পরিচালনা করার জন্য চুক্তি আইন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কোন নির্দিষ্ট বিষয়ে দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যে নির্দিষ্ট কতগুলো শর্তপূরণ সাপেক্ষে যে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয় তাকে চুক্তি বা সম্মতি বলে। চুক্তির শর্তগুলো নিয়ে যে আইন আলোচনা করে তাকেই চুক্তি আইন বলে। যেমন- পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার মধ্যে পণ্য ক্রয় বিক্রয় চুক্তি, দর্জির সাথে জামা তৈরির চুক্তি।

পণ্য বিক্রয় আইন (The sale of Goods Acts):

বর্তমান প্রতিযোগীতামূলক বিশ্বে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য একজন ব্যবসায়ীকে পণ্য বিক্রয় আইন জানতে হবে। এই আইন সম্পর্কে অবহিত থাকলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই নিরাপদ ও ঝামেলামুক্ত থাকতে পারবে। যেমন- পণ্য বিক্রয় আইন ১৯৩০ এ বলা আছে কোন ব্যক্তি অবৈধ কোন পণ্য সরকারের লিখিত অনুমতি ব্যতিত বিক্রয় করতে পারবে না। এই আইনের মাধ্যমে মদ, গাঁজা, ইয়াবা বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

অংশীদারী আইন (Partnership Act) :

অংশীদারী ব্যবসায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়। এব্যবসায়টি সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য প্রত্যেক অংশীদারকে অংশীদারী আইন সম্পর্কে জানতে হবে। যেমন- যৌথ মালিকানা ব্যবসা।

কোম্পানী আইন সম্পর্কে ১৯৯৪ এর (১৮ নং আইন) অধিকতর সংশোধনকল্পে প্রণীত কোম্পানী (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন, ২০২০ এর ২৪ নং আইন এ বলা হয়েছে।

বীমা আইন (Insurance Law):

বর্তমান ব্যবসায়ে জগতে বীমা একটি গরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ে ক্ষেত্র হিসেবে নিজের স্থান দখল করে নিয়েছে। মানুষ সব সময় নিজেদের ঝুঁকি বা অনিশ্চয়তা হতে দূরে রাখতে চায়। তাই বীমা আইন জানাটাও গুরুত্বপূর্ণ। উদাহরণ- জীবন বীমা, মেয়াদী বীমা, স্বাস্থ্য বীমা ও কার্গো বীমা ইত্যাদি।

কোম্পানী আইন (Company Law):

বৃহদায়তন একটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হলো কোম্পানী ব্যবসায়। বাংলাদেশে প্রচলিত রয়েছে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানী ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী। যেমন- বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ অব কোম্পানী, কর্ণফুলী পেপার মিল, বিআরটিসি বাস সার্ভিস।

কারখানা আইন (Factory Act):

কলকারখানায় শ্রমিকদের কাজের সুবিধা, নিরাপত্তা, উন্নততর কাজের পরিবেশ ইত্যাদি নিশ্চয়তা বিধান কল্পে প্রবর্তন করা হয় কারখানা আইন। যেমন- ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর পূর্ব পাকিস্তান কারখানা আইন ১৯৬৫ কে সামান্য পরিবর্তন করে বাংলাদেশে কারখানা আইন ১৯৬৫ নামে হুবহু গ্রহণ করা হয়

শ্রমিক ক্ষতিপূরণ আইন (Labor Compensation Act):

উৎপাদন কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত নানা ধরনের বিপদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। শ্রমিকের ক্ষতিপূরণ আদায়ই এই আইনের মূল উদ্দেশ্য। যেমন- কর্মরত অবস্থায় কোন শ্রমিক আহত হলে তার চিকিৎসার ভার গ্রহণ, নিহত হলে পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।

মুজুরি পরিশোধ আইন (Payment of Wages Act):

শ্রমিকরা তাদের কাজের বিনিময়ে যা পেয়ে থাকে তাই হলো মজুরী। এ মজুরী সম্পর্কে শ্রকিক ও মালিক পক্ষ সবসময় ভিন্ন ধারনা পোষন করে। ফলে ব্যবসায় ক্ষেত্রে সৃষ্ট হয় নানান সমস্যা। তাই উভয়েরই প্রকৃত আইন জানতে হবে। কর্মঘন্টা অনুযায়ী ন্যায্য মুজুরি, ঈদ বোনাস, ওভার টাইম মুজুরি হচ্ছে এই আইনের উদাহরণ।

শ্রমিক নিয়োগ আইন (The Employment of Labor Act):

১৯৬৫ সালে সর্বপ্রথম দোকান, বানিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও শিল্পে চাকুরিরত শ্রমিকদের চাকুরীর শর্তাবলী নিয়ন্ত্রনের উদ্দেশ্যে প্রনীত হয় শ্রমিক নিয়োগ আইন। চাকুরীতে নিয়োগ, ছুটি, অপসারণ, ছাঁটাই, জরিমানা, লে-অফ, ধীরে কাজ করা ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে এই আইনের উদাহরণ।

দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন (The Shops and Establishment Act):

ব্যবসায় বানিজ্যের ক্ষেত্রে দোকান ও প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই এদের কার্যাবলীকে সুষ্ঠও সুন্দরভাবে পরিচালনার জন্য প্রবর্তিত হয় ১৯৬০ সালের দোকান ও প্রতিষ্ঠান আইন

সমবায় সমিতি আইন (Law of Co-operative Societies):

সমবায়কে অধিকতর সুসংগঠিত ও ফলপ্রসু করার জন্য এ উপ-মহাদেশের তৎকালীন ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিস এর খ্যাতনামা সদস্য মিঃ ফ্রেডারিক নিকলসন এর সুপারিশের ভিত্তিতে ১৯০৪ সালে ভারতে সর্বপ্রথম সমবায় সমিতি আইন পাশ করা হয়।

মুল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ (Value Added Tax Act-1991):

সরকার কর কাঠামো আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে দ্বৈত করের অবসান ঘটিয়ে মূল্য সংযোজন কর আইন ১৯৯১ প্রবর্তন করেছে। মূল্য সংযোজন করের বৈশিষ্ট্য হলো এই যে, এই করের প্রায় সকল পণ্য ও সেবার ক্ষেত্রে প্রয়োগযোগ্য। ভ্যাট, ট্যাক্স হচ্ছে এই আইনের উদাহরণ।

আয়কর আইন (Income Tax Act):

যে কোন দেশের সরকারের আয়ের একটি প্রধান উৎস আয়কর। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয় একটি নির্দিষ্ট অংকের চেয়ে বেশি হলে আয়কর আইন অনুযায়ী আয়কর প্রদান অপরিহার্য্য।



প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে ন্যূনতম শেয়ারহোল্ডার থাকতে হয় দুই জন। আর সর্বোচ্চ শেয়ারহোল্ডার হতে পারে ৫০ জন।

পাবলিক লিমিটিডে কোম্পানি

পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি একধরনের সসীম দায়বদ্ধ কোম্পানি যারা জনগনের কাছে শেয়ার ছাড়তে পারে। যুক্তরাজ্য ও কমনওয়েলথভুক্ত দেশে এই ধরনের প্রতিষ্ঠান পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বা পিএলসি নামে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটি পাবলিক কোম্পানি নামে পরিচিত। পৃথিবীব্যাপী জনপ্রিয় কোম্পানি সংগঠন হলো পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি (Public Limited Company/PLC)।

এসকল কোম্পানী বাজারে শেয়ার ছাড়ার মাধ্যমে মূলধন জোগাড় করে থাকে। কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার তাদের পছন্দমাফিক যে কারো কাছে শেয়ার বিক্রি করতে পারেন। কোম্পানি আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করে জনসাধারণের কাছে শেয়ার ও বন্ড বিক্রি করতে পারে। বাংলাদেশে এধরনের কোম্পানির সদস্য সংখ্যা সর্বনিম্ন ৭ জন এবং সর্বোচ্চ শেয়ার দ্বারা সীমাবদ্ধ থাকে, শেয়ার অবাধে হস্তান্তরযোগ্য এবং কোম্পানি শেয়ার ও ঋণপত্র জনগণের উদ্দেশ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের আহবান জানায়। মালিকানার ভিত্তিতে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিকে দুইভাগে এবং নিয়ন্ত্রণের ভিত্তিতে আরো দুভাগে ভাগ করা যায়:

১. সরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি:

কোনো কোম্পানির মালিকানা বা এর শেয়ার মালিকানার কমপক্ষে ৫১% শেয়ার যদি সরকারি মালিকানায় থাকে এবং এর পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব সরকারের হাতে থাকে, তবে তাকে সরকারি মালিকানায় পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি বলে।

২. বেসরকারি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি:

কোনো কোম্পানীর শেয়ারের কিয়দংশ সরকার গ্রহণ করলে তাকে আধা-সরকারি কোম্পানি বলে। কোনো কোনো সময় সরকার শেয়ার মূলধনের শতকরা ৩০% বা ৪০% গ্রহণ করে। এতে সরকারি ও বেসরকারি মালিকানার সংমিশ্রণ ঘটে বলে একে আধা-সরকারি কোম্পানি বলে।



১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর পূর্ব পাকিস্তান কারখানা আইন ১৯৬৫ কে সামান্য পরিবর্তন করে বাংলাদেশে কারখানা আইন ১৯৬৫ নামে হুবহু গ্রহণ করা হয়

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে ন্যূনতম শেয়ারহোল্ডার থাকতে হয় দুই জন। আর সর্বোচ্চ শেয়ারহোল্ডার হতে পারে ৫০ জন। এর বেশি শেয়ারহোল্ডার নিতে হলে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিকে পাবলিক লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কোম্পানির সদস্য সংখ্যা ও অবকাঠামোর উপর ভিত্তি করে কোন কোম্পানিকে লিমিটেড কোম্পানি বলা হয়।

যে সীমাবদ্ধ দায় কোম্পানিতে সদস্যের সংখ্যা ন্যূনতম ২ বা সর্বোচ্চ ৫০ জন রাখা হয় এবং সীমাবদ্ধ দায়ের ভিত্তিতে কোম্পানিকে প্রদত্ত আইনের আওতায় নিবন্ধিত করা হয়, তাকে ঘরোয়া মালিকানায় সীমাবদ্ধ কোম্পানি বা প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি (Private Limited Company) বলে। প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর ও ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কিছু বিধিনিষেধ থাকে।

প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির কোনো শেয়ারহোল্ডার শেয়ার বিক্রি করতে চাইলে তাকে বিদ্যমান শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যই তা বিক্রি করতে হয়। তবে তাদের সম্মতি সাপেক্ষে বাইরের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছে শেয়ার বিক্রি বা হস্তান্তর করা যায়। কোম্পানি জনসাধারণের কাছে শেয়ার এবং ডিবেঞ্চার ও বন্ডসহ কোনো ধরনের ঋণপত্র বিক্রি করতে পারে না।



পরিসংহার

উপরোক্ত ব্যবসায়িক আইনগুলো ব্যবসায়ের মূল কার্যাবলীর সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত না হলেও আইন আদালত বা ক্ষতিপূরণ, ব্যবসায়ীক বৈধতা নিশ্চিতকল্পে খুবই প্রয়োজনীয়। শুধু পণ্য উৎপাদন থেকে বিপণন পর্যন্তই ব্যবসায়ের পরিধি নয়। বরং পণ্যের বৈধতা, রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতা এমনকি পণ্য সংশ্লিষ্ঠ শ্রমিক, কারখানা, মুজুরি সর্বক্ষেত্রেই জ্ঞান রাখা ব্যবসায়িক সফলতার পূর্বশর্ত। তাই বর্তমানে একজন আদর্শ ব্যবসায়ী হওয়ার জন্য ব্যবসায়িক আইন জানা কোন অংশেই অগুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই ব্যবসায়িক আইন জেনে এবং মেনে ব্যবসা করা প্রতিটি ব্যবসায়ীর একান্ত কর্তব্য।

  • ব্যবসায় আইনের বিভিন্ন দিক ও সফল উদ্যোক্তাদের কেস স্টাডি
  • শিল্পোদ্যোগ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা- মোঃ মোশাররফ হোসেন, বেদার উদ্দিন আহমেদ, আতাউর রহমান
  • ব্যবস্থাপনা- ড. আব্দুল আউয়াল খান ও আবু বকর সিদ্দীক
  • কারবারের ব্যবস্থাপনা- দূর্গাদাস ভট্টাচার্য
  • Entrepreneurship Development- Prof. Dr. Nazrul Islam
  • কর্মী ব্যবস্থাপনা- প্রফেসর এম ওমর আলী
  • উৎপাদন ব্যবস্থাপনা- প্রফেসর. ড. নাসিম আনজুম
  • Entrepreneurship Development- Prof. Dr. Md. Ataur Rahaman
  • Entrepreneurship Development- Brain Debson.
  • Entrepreneurship Development System- W.K. Kellogg.
  • Entrepreneurship and Small Business Development- Northeast Mississipi Daily Journal
  • গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান (সপ্তদশ সংশোধনী)
Next to read
Business Models
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)

শেয়ারিং ইকোনমি মূলত দুই পক্ষের (Peer to Peer) সমন্বয়ে গঠিত এমন একটি বিজনেস মডেল, যেখানে মূল প্রতিষ্ঠানটি একটি মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। এক্ষত্রে প্রতিষ্টান গুলো মূলত দুই পক্ষ অর্থাৎ সেবা প্রদানকারী এবং সেবা গ্রহণকারীদের মাঝে প্রযুক্তির সহায়তায় নিজস্ব কৌশলে সংযোগ করে দেয়।

মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
Business
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
ব্রান্ডিং (Branding)
Branding
ব্রান্ডিং (Branding)
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)
Branding
রিব্র্যান্ডিং (Rebranding)
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
Sales
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
Sales
বিক্রয়ের ১০টি ভুল যেগুলো প্রতিটি বিক্রয়কর্মীর এড়ানো উচিৎ
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
পঞ্জি স্কিম সংজ্ঞা এবং উদাহরণ
Crime and Fraud
পঞ্জি স্কিম সংজ্ঞা এবং উদাহরণ
Startup funding Pre-seed to series A, B, C brief discussion
Investment
Startup funding Pre-seed to series A, B, C brief discussion
সিঙ্গেল ব্রান্ডেড ই-কমার্স (Single Branded E-commerce)
E-Commerce
সিঙ্গেল ব্রান্ডেড ই-কমার্স (Single Branded E-commerce)