Financial Markets : A Comprehensive Guide

ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট হচ্ছে এমন একটি স্থান যেখানে বিভিন্ন ক্রেতা ও বিক্রেতাগণ নিজেদের মাঝে বিভিন্ন ফাইন্যান্সিয়াল টুলের লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন। ফাইন্যান্সিয়াল টুল বিভিন্ন ধরণের হয়ে থাকে, যেমন - বন্ড, শেয়ার, বৈদেশিক মুদ্রা ইত্যাদি। আবার ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলো বিনিয়োগকারীদের এমন সব মানুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে সাহায্য করে যাদের আসলে বিনিয়োগ দরকার। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সাহায্য একে অপরের মাঝে রিস্ক ট্রান্সফার করা সম্ভব হয় এবং দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম বুস্ট করা সম্ভব হয়।
Key Points
- ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট হচ্ছে এমন একটি মার্কেটপ্লেস যেখানে বিভিন্ন ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল অ্যাসেট, যেমন - স্টক, বন্ড ক্রয়-বিক্রয় করা হয়।
- বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট দেখা যায়, যেমন - স্টক মার্কেট, বন্ড মার্কেট, ফরেক্স এক্সচেঞ্জ মার্কেট, মানি মার্কেট, ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট, ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট ইত্যাদি।
- ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের বিভিন্ন ফাংশন রয়েছে, যেমন - সঞ্চয়ের ব্যবহার, লিক্যুইডিটি সাপ্লাই, সিকিউরিটির মূল্য নির্ধারণ, ফাইন্যান্সিয়াল তথ্য প্রদান ইত্যাদি।
- ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট বিনিয়োগকারীদের জন্য এমন সব বিনিয়োগের ক্ষেত্র খুজে পেতে সাহায্য করে যেখানে তারা বিনিয়োগ করার মাধ্যমে নিজেদের অর্থসম্পদ বৃদ্ধি করতে পারেন।
ভূমিকা
যেকোনো দেশের আর্থিক লেনদেনের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থান করে ঐ দেশের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলো। কোম্পানীর শেয়ার থেকে শুরু করে সরকারি বন্ড এবং ডিরাইভেটিভ সিকিউরিজ, সবকিছুর লেনদেন হয়ে থাকে এই মার্কেটগুলোতে। বিনিয়োগ প্রত্যাশিগণ বিনিয়োগ পাওয়ার আশায় এখানে আসেন, আর বিনিয়োগকারীরা আসেন বিনিয়োগ করার জন্য। সব মিলিয়ে ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলোতে প্রতিদিন বেশ বড় অংকের লেনদেন হয়ে থাকে। তাই আজকের লেখায় আমরা ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট সম্পর্কে আপনাদের একটি বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। আমরা জানবো ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট কিভাবে কাজ করে, কি কি ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট আছে এবং এগুলোর ফাংশন সম্পর্কে।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট কী?
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট হচ্ছে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের এমন একটি মিলনমেলা যেখানে তারা নিজেদের মাঝে বিভিন্ন আর্থিক সম্পদ যেমন - শেয়ার, বন্ড, বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন সম্পন্ন করতে পারেন। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটকে অনেক সময় ক্যাপিটাল মার্কেট বা শেয়ার মার্কেট’ও বলা হয়।
তবে যেই নামেই ডাকা হোক না কেনো, ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট মূলত ব্যবসায়ীদের নিজেদের ব্যবসায় সম্প্রসারণ করার জন্য প্রয়োজনীয় মূলধন পেতে সাহায্য করে। আর অপরদিকে এই মার্কেট বিনিয়োগকারীদের জন্য এমন সব বিনিয়োগের ক্ষেত্র খুজে পেতে সাহায্য করে যেখানে তারা বিনিয়োগ করার মাধ্যমে নিজেদের অর্থসম্পদ বৃদ্ধি করতে পারেন।
বিভিন্ন ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট
পৃথিবীজুড়ে বহু ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের দেখা পাওয়া যায়। কোনো কোনোটা বেশ বড় এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন। আবার কোনোটার কার্যক্রম বেশ সংক্ষিপ্ত। তবে প্রধাণত ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলোকে নিম্নোক্ত ভাগে ভাগ করা যায়।
১। স্টক মার্কেট
স্টক মার্কেটে বিভিন্ন পাবলিক কোম্পানীর শেয়ারের লেনদেন করা হয়। বিনিয়োগকারীরা এসব শেয়ার ক্রয় করার মাধ্যমে কোম্পানীতে বিনিয়োগ করেন। কোম্পানী ভালো পারফর্ম করলে শেয়ারের মূল্য বৃদ্ধি পায় এবং এতে করে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হোন। স্টক মার্কেটকে তাই শেয়ার মার্কেট নামে’ও অভিহিত করা হয়। শেয়ার ক্রয় করা বেশ সহজ কাজ হলেও, ভালো শেয়ার সিলেক্ট করাই হচ্ছে মূল চ্যালেঞ্জ।
ভালো শেয়ার সিলেক্ট করার জন্য বিনিয়োগকারীরা অনেক ধরণের ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে থাকেন। ভালো কোম্পানীতে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা নিয়মিত লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন, আবার শেয়ারের দাম বাড়লে বিনিয়োগকারীরা তা বিক্রয় করার মাধ্যমে ক্যাপিটাল গেইন পান।
২। বন্ড মার্কেট
বন্ড মার্কেটে মূলত বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি বন্ডের ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। সরকার বা কোনো জনপ্রিয় কোম্পানী সাধারণত নিজেদের নতুন কোনো প্রজেক্টের ফাইন্যান্সিং-এর জন্য বন্ড মার্কেটে বন্ড বিক্রয় করে থাকেন। বিনিয়োগকারীরা এসব বন্ড ক্রয় করেন।
শেয়ারের মতো বন্ড ক্রয় করলে বিনিয়োগকারীরা সাধারণত কোম্পানীর মালিকানা পান না। বরং বন্ডের টাকা কোম্পানী বিনিয়োগকারীদের নিকট হতে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে। প্রতিটি বন্ডের বিপরীতে কোম্পানীকে নির্দিষ্ট পরিমাণ সুদ প্রদান করতে হয় এবং বন্ডের মেয়াদশেষে কোম্পানী বন্ডের টাকা বিনিয়োগকারীকে পরিশোধ করে দেয়।
৩। ফরেক্স মার্কেট
ফরেক্স মার্কেটে সাধারণত বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন করা হয়। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলোর মাঝে ফরেক্স মার্কেট সবচেয়ে বেশি লিক্যুইডিটি অফার করে থাকে। ফরেক্স মার্কেট সাধারণত বিকেন্দ্রীভূত, অর্থাৎ এখানে নির্দিষ্ট কোনো স্থানে লেনদেন হয় না। বরং এখানে লেনদেন হয় বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন কম্পিউটারের মাঝে। ফরেক্স মার্কেটের প্লেয়াররা হলেন সাধারণত বিভিন্ন কমার্শিয়াল ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক, বেসরকারি কোম্পানী, ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট ফার্ম, হেজ ফান্ড ও রিটেইল ফরেক্স ব্রোকাররা।
৪। ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেট
ক্রিপ্টোকারেন্সি মার্কেটে সাধারণত বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সি টোকেনের লেনদেন করা হয়। ফরেক্স মার্কেটের মতো এই মার্কেট’ও বেশ বিকেন্দ্রীভূত। সাধারণত এক ক্রিপ্টো ওয়ালেট থেকে অন্য ওয়ালেটে এই ধরণের লেনদেন হয়ে থাকে। লেনদেনকারীরা এক ক্রিপ্টোকারেন্সির সাথে অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সি বা কোনো রিয়াল কারেন্সি যেমন ডলার বা ইউরোর এক্সচেঞ্জ করতে পারেন।
৫। মানি মার্কেট
মানি মার্কেটে সাধারণত স্বল্পমেয়াদি সব সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ করা হয় যাদের মেয়াদ সাধারণত ১ বছর বা তার কম হয়ে থাকে। এই মার্কেটে সাধারণত বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করে থাকে। বাংলাদেশের মানি মার্কেটের কিছু সিকিউরিটি হচ্ছে - আন্তঃব্যাংক রিপো, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপো, বাংলাদেশ ব্যাংকের বিল, ট্রেজারি বিল ইত্যাদি।
৬। ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট
ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেটে সাধারণত এমন সব কোম্পানীর স্টক ক্রয়-বিক্রয় করা হয় যা গতানুগতিক স্টক মার্কেটে নিবন্ধিত নয়। এসব কোম্পানীর শেয়ার সাধারণত খুব কম দামে ক্রয়-বিক্রয় হয় এবং এসব কোম্পানীর উপর স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষের বেশ কম নজরদারি থাকে।
৭। ডিরাইভেটিভ মার্কেট
ডিরাইভেটিভ মার্কেটে সাধারণত বিভিন্ন ডিরাইভেটিভ কন্ট্র্যাক্ট যেমন অপসনস এবং ফিউচারস-এর ট্রেডিং করা হয়। ডিরাইভেটিভ ইন্সট্রুমেন্ট হলো এমন সব আর্থিক সিকিউরিটি যেগুলোর নিজস্ব কোনো ভ্যালু থাকে না, বরং এগুলোর ভ্যালু অন্য কোনো স্টক বা বন্ড থেকে ডিরাইভ করে নির্ধারণ করা হয়।
৮। কমোডিটি মার্কেট
কমোডিটি মার্কেটে বিভিন্ন ধরণের নন-ফাইন্যান্সিয়াল কমোডিটি যেমন - গোল্ড, তেল, গম, চাল ইত্যাদির ক্রয়-বিক্রয় করা হয়। কমোডিটি মার্কেট সাধারণত আন্তর্জাতিকভাবে স্থাপন করা হয় এবং বিশ্বজুড়ে প্রায় ৫০টি মেজর কমোডিটি মার্কেট রয়েছে।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট কীভাবে কাজ করে?
একটি ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে অনেক ধরণের মানুষ অংশগ্রহণ করে থাকেন, যেমন - ইনভেস্টর, ট্রেডার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কোম্পানী ও সরকার। এই অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের ফাইন্যান্সিয়াল কমোডিটির লেনদেন হয়ে থাকে, যেমন - স্টক, বন্ড, নন-ফাইন্যান্সিয়াল কমোডিটি, ফরেন কারেন্সি ইত্যাদি।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট সাধারণত ফাইন্যান্সিয়াল সিকিউরিটির ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মাঝে ম্যাচ করানোর কাজ করে। প্রতিটি মার্কেটে প্রতিটি সিকিউরিটির একটি সর্বনিম্ন মূল্য নির্ধারণ করে দেয়া থাকে। ক্রেতারা ঐ প্রাইসে বা তার থেকে বেশি প্রাইসে নিজেদের বিড স্থাপন করেন, যদি বিক্রেতাদের ভালো লাগে তাহলে তারা সিকিউরিটি বিক্রয় করে দেন।
একটি সর্বনিম্ন প্রাইস নির্ধারণ করে দেয়া থাকলেও এখন সিকিউরিটির আসল প্রাইস নির্ধারিত হয় সাপ্লাই ও ডিমান্ডের সূত্র অনুযায়ী। যেই সিকিউরিটির ডিমান্ড যতো বেশি, সেই সিকিউরিটির প্রাইস’ও ততো বেশি হয়ে থাকে।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে বিভিন্ন ধরণের ইন্টারমিডিয়ারি বা মধ্যস্থতাকারীর’ও উপস্থিতি থাকে, যেমন - ব্রোকার, এক্সচেঞ্জ ও ইলেক্ট্রনিক ট্রেডিং প্লাটফর্ম। তারা মূলত ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নিজেদের মাঝে এফিশিয়েন্টলি ট্রেডিং করার সুযোগ করে দেন।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের আরো দুটি ভাগ দেখা যায়, একটি হচ্ছে প্রাইমারি মার্কেট এবং অন্যটি সেকেন্ডারি মার্কেট। প্রাইমারি মার্কেটে সাধারণত সব নতুন সিকিউরিটির লেনদেন হয়ে থাকে। কোনো কোম্পানী নতুন আইপিও লঞ্চ করলে তার লেনদেন প্রাইমারি মার্কেটে হয়ে থাকে। আর সেকেন্ডারি মার্কেটে সাধারণত পুরনো সিকিউরিটির লেনদেন হয়ে থাকে।
উদাহরণস্বরুপ, আজকে কোনো কোম্পানী নতুন আইপিও লঞ্চ করলে তার শেয়ার ক্রয় করতে আপনাকে প্রাইমারি মার্কেটে যেতে হবে। আর আইপিও শেষ হয়ে গেলে যদি আপনি ঐ কোম্পানীর শেয়ার ক্রয় করতে চান, তাহলে আপনাকে যেতে হবে সেকেন্ডারি মার্কেটে।
বাংলাদেশের সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বাংলাদেশের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের নিয়ন্ত্রক। তারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আর্থিক তথ্য, অ্যানালিসিস ও রিসার্চ ডেটা পাবলিশ করে থাকেন। এতে করে বিনিয়োগকারীরা জেনে বুঝে ভালো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারেন। আবার খবর, ফাইন্যান্সিয়াল রিপোর্ট ও ইকোনমিক ডেটা যেকোনো সিকিউরিটির মূল্য ও পাবলিক সেন্টিমেন্টের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
স্বচ্ছতা ধরে রাখা ও প্রতাড়না প্রতিরোধের উদ্দেশ্যে যেকোনো ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট খুব কঠোরভাবে মনিটর করা হয়। কোনো প্রতাড়নামূলক লেনদেন কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে সেই কোম্পানীর আইপিও বা ব্রোকারের লাইসেন্স বাতিল করে দেয়া হয়।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের ফাংশন
একটি দেশের অর্থনীতির শক্তি ও সফলতা অনেকটাই ঐ দেশের ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের উপর নির্ভর করে। দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখার জন্য ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলো নিম্নোক্ত ফাংশনগুলো পালন করে থাকে।
১। সঞ্চয়ের ব্যবহার
বিনিয়োগকারীরা নিজেদের জমানো বা অর্জিত অর্থ ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে নিয়ে এসে বিনিয়োগ করেন। এতে করে অর্থনীতিতে মুদ্রার হাতবদল বৃদ্ধি পায়। যাদের বিনিয়োগ প্রয়োজন, তারা ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহ করেন। এতে করে সঞ্চয়কারীদের সঞ্চিত ও অর্জিত অর্থ অলস পরে না থেকে অর্থনীতি প্রবৃদ্ধিতে কাজে লাগে।
২। সিকিউরিটির মূল্য নির্ধারণ
অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণত সাপ্লাই ও ডিমান্ডের উপর নির্ভরশীল হলেও বিভিন্ন আর্থিক সিকিউরিটি যেমন - শেয়ার ও বন্ডের মূল্য নির্ধারণ করে থাকে ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট। এতে করে ব্যবসায় জগতকে একেবারে লাগামহীনভাবে ছেড়ে না দিয়ে নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখা যায়।
৩। লিক্যুইডিটি সাপ্লাই
বিনিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিনিয়োগকারীদের তাদের অর্থ প্রয়োজন হতে পারে। তবে বিনিয়োগের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই তো আর কোম্পানীর থেকে অর্থ তুলে নেয়া যায় না। বরং ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটে গিয়ে এমন কারো কাছে বিনিয়োগটি বিক্রয় করে দেয়া যায় যিনি সেই বিনিয়োগটি করতে আগ্রহী। এতে করে বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকে যেকোনো সময় নগদ অর্থে রুপান্তর করে ফেলতে পারেন।
৪। আর্থিক তথ্য প্রদান
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট বেশ সাজানো গোছানো হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা খুব কম বা একেবারে বিনা খরচেই বিভিন্ন আর্থিক তথ্য পেয়ে যান। এতে করে তাদের লেনদেন করার জন্য আর অতিরিক্ত কোনো অর্থ খরচ করতে হয় না। আবার এসব তথ্য বিনিয়োগকারীদের ভালো বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত গ্রহণে’ও সাহায্য করে।
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সীমাবদ্ধতা
দেশের অর্থনীতির জন্য ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এগুলোর বেশ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন -
১। তথ্যের অসম বন্টন
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের সকল অংশগ্রহণকারীদের কাছে সমান গুরুত্বের তথ্য থাকে না। অনেক সময় ইনসাইডার এবং বড় বড় কোম্পানীগুলোর কাছে এমন সব তথ্য থাকে যা সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে থাকে না।
২। মার্কেটে অস্থিরতা
অনেকসময় অর্থনৈতিক ঘটনা, পাবলিক সেন্টিমেন্ট বা কোনো অপ্রত্যাশিত খবরের কারণে মার্কেটে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। এতে করে হঠাৎ কোম্পানীর শেয়ার দাম কমে যেতে পারে।
৩। স্বচ্ছতার অভাব
ডিরাইভেটিভ মার্কেটের কিছু ফাইন্যান্সিয়াল সিকিউরিটি অনেক বেশি জটিল হতে পারে এবং সেগুলোতে সাধারণত স্বচ্ছতার অভাব থাকে। এতে করে বিনিয়োগকারীরা সহজে বুঝতে পারেন না যে তারা কি পরিমাণ ঝুকিঁ নিচ্ছেন।
৪। মার্কেট ম্যানিপুলেশন
যাদের কাছে অতিরিক্ত এবং স্পর্শকাতর তথ্য থাকে, তারা চাইলেই অসৎ কাজের দ্বারা বাজারকে ম্যানিপুলেট ও অস্থিতিশীল করে তুলতে পারেন। ইনসাইডার ট্রেডিং এই ধরণের কাজের একটি উদাহরণ।
৫। হার্ড (Herd) বিহেভিয়ার
বিনিয়োগকারীরা অনেকসময় অন্যরা যা করছেন, তাই করার চেষ্টা করেন। আসলে কোনটা করা উচিত বা কোনটা করলে ভালো হবে তা তারা বিবেচনা করেন না। এতে করে মার্কেটে বাবল তৈরি হয়ে পরবর্তীতে মার্কেট ক্র্যাশ করতে পারে। ২০০০ সালের ডট কম বাবল এবং ২০০৮ সালে আমেরিকার হাউজিং মার্কেটের ক্র্যাশ হার্ড বিহেভিয়ারের সক্রিয় উদাহরণ।
পরিসংহার
ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট থেকে ক্যাপিটাল ও লিক্যুইডিটি পাওয়া যায়, যা যেকোনো দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেট ছাড়া মূল্ধনের সঠিক বন্টন করা সম্ভব হতো না এবং এতে করে অর্থনৈতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত হতো। আবার ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটগুলোকে ঘিরে প্রচুর পরিমাণ কর্মসংস্থান তৈরি হয়, যা দেশের বেকারত্ব সমস্যা সমাধানে ভূমিকা পালন করে। তবে যেকোনো অর্থনৈতিক কার্যক্রমের মতোই ফাইন্যান্সিয়াল মার্কেটের কার্যক্রম’ও বেশ জটিল। তাই এখানে প্রবেশ করার আগে ভালোভাবে সবকিছু বুঝে শুনে নেয়া উচিত।
- https://www.investopedia.com/terms/f/financial-market.asp
- https://www.bb.org.bd/en/index.php/financialactivity/finmarket
- https://www.britannica.com/money/what-are-financial-markets
- https://byjus.com/commerce/what-is-financial-market/
- https://unacademy.com/content/bank-exam/study-material/general-awareness/financial-markets-an-overview-types-and-functions/
- https://www.wallstreetmojo.com/financial-market/
Next to read
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)


কাস্টমার ডাটা মনেটাইজেশন মডেল (Customer Data Monetization Model)

সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)

অ্যাড অন মডেল (Add On Model)

ব্যষ্টিক অর্থনীতি বা Micro Economics কী?

ই-কমার্স: অনলাইন ব্যবসা

সেলস টার্গেট অর্জনের জন্য ১০টি বডি ল্যাঙ্গুয়েজ টিপস

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (Affiliate Marketing)

সম্পদ, দায় এবং ইক্যুইটি
