লোগো ব্যবহারের সুবিধা অসুবিধা (Pros and Cons of Logo Usage)

386
article image

একটি লোগো শুধুমাত্র একটি প্রতীকই নয়। একটি লোগো একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিও। একটি প্রতিষ্ঠানের সমস্ত চিন্তা চেতনার প্রতিফলন ঘটে একটি লোগোতে। একটি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মানুষের সাধারণ ধারণাও আসে এই লোগোর মাধ্যমেই। তাই একটু বিচার বিশ্লেষণের মাধম্যে একটি লোগো তৈরী করাই প্রতিষ্ঠানের জন্যে উত্তম সিদ্ধান্ত।

Key Points

  • লোগো যেই ভয়েস বহন করবে সেইটা হাস্যরসাত্যক, গম্ভীর, রাগ না আনন্দ প্রকাশ করবে।
  • লোগো কোন সময়ে বানানো হচ্ছে বা কোন সময়কে উপস্থাপন করছে তার উপরেও লোগোর রং- ফন্ট- শেপ নির্ভর করে
  • যেসকল বড় এবং সফল কোম্পানি/ ব্র্যান্ড আছে তাদের মাঝে থাকা একটি কমন ফ্যাক্টর হলো সবার একটা আলাদা এবং ইউনিক লোগো আছে

লোগো থেকে প্রাপ্ত সুবিধা অসুবিধা অনেকাংশে নির্ভর করে এর ডিজাইনের উপর আর এই ক্ষেত্রে,

লোগো বানানোর সময় যে বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত:

লোগো বানানোর সময় কিছু কিছু বিষয়ে খেয়াল রাখা এবং একটা নির্দিষ্ট পথ অনুসরন করে এগোনো উচিত।

প্রথমেই লোগো ডিজাইনে রং- শেপ- ফন্ট নির্ধারনে খেয়াল রাখতে হবে,

এই লোগো যে ব্র্যান্ড/ কোম্পানিকে উপস্থাপন করছে তাদের প্রোডাক্ট/ সার্ভিসের টার্গেট কাস্টমার নারী, পুরুষ না শিশুরা।

লোগো যেই ভয়েস বহন করবে সেইটা হাস্যরসাত্যক, গম্ভীর, রাগ না আনন্দ প্রকাশ করবে।

কোম্পানি বা ব্র্যান্ড যেই প্রোডাক্ট/ সার্ভিস কাস্টমারকে দিচ্ছে তার বাজার মূল্য কেমন তার উপর নির্ভর করবে লোগো কেমন হবে। মানে প্রোডাক্ট/ সার্ভিস যদি সস্তা হয় তবে একরকমের লোগো আবার দামী হলে আরেক রকম। আভিজাত্য প্রকাশ করতে সাধারনত ফন্ট হিসবে Serif Font ব্যবহার করা হয়, অনেক সিম্পল লেটারমার্ক/ এমব্লেম ভালো লাগে আর রঙ হিসেবে কালো-গোল্ডেন বা কালোর সাথে অন্য কোন মিশ্রনকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া হয়।

লোগো কোন সময়ে বানানো হচ্ছে বা কোন সময়কে উপস্থাপন করছে তার উপরেও লোগোর রং- ফন্ট- শেপ নির্ভর করে। মর্ডান সময়কে উপস্থাপন করতে সাধারনত বোল্ড ফন্ট ব্যবহার হয়, রঙ এর জন্য ২টা মৌলিক রঙের মাঝে সীমাবদ্ধতা থাকে, কিছু রেখার ব্যবহার করলে ভালো হয় আর

যতটা সম্ভব সিম্পল রাখা হয়।

কেমন এনার্জি প্রকাশ পাবে যেমনঃ বিষণ্ণতা না প্রবলতা; সেটা বুঝতে হবে।

অনেক রকম রঙের মিশ্রন ব্যবহারের জন্য লোগোর মাঝে আকর্ষনের থেকে একটা বিভ্রান্তি প্রকাশ পেতে পারে।

টাইপোগ্রাফি ব্যবহারে দেখতে হবে যেন তা কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট/ সার্ভিসের সাথে একটা সমান্তরাল ভাব বজায় রাখতে পারে।

এখন উপরের সব বিষয় বিবেচনায় রেখে বুঝতে হবে যেই লোগোটা বানানো হচ্ছে তা কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট/ সার্ভিসের সাথে কতটাঃ

উপযুক্ত (Appropriate)

স্বতন্ত্র আর স্বরনীয় (Distinctive and Memorable)

এবং সাধারণ (Simple)

এই সম্পুর্ন বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে পারলেই একটা সুন্দর এবং যথাযথ লোগো ডিজাইন করা যাবে।

একটি লোগো বিভিন্ন উদ্দেশ্যে কাজ করে, যার সবকটিই কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর জন্য অবদান রাখে। লোগোর সঠিক ব্যবহারে পাওয়া সুবিধাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ

সুবিধাসমূহ

ব্র্যান্ডের পরিচিতি (Brand Identity): কোন ব্র্যান্ড/ কোম্পানি সম্পর্কে জানতে গেলে একজন কাস্টমার প্রথমে লোগোটা দেখে। আর একটা কথা আছে, “ A picture is worth a thousands words.” আর মার্কেটিং এর ক্ষেত্রেও এই কথাটা সঠিক। একটা সফল মার্কেটিং এর কাজ হলো একটা গল্পের মাধ্যমে কাস্টমারদের প্রভাবিত করা। একটা লোগো যেহেতু ব্র্যান্ডের পরিচয় বহন করে তাই এর প্রধান কাজ ব্র্যান্ড সম্পর্কে একটা ধারনা দেওয় আর সেই লোগোর মাঝে থাকা রঙ- টেক্সচার- ফন্টের মাধ্যমে বোঝা যায় কোম্পানি/ ব্র্যান্ড কি স্টোরি বলার চেষ্টা করছে।

একটা শক্তিশালী ও মেমোরেবল লোগো অনেক সহজেই মানুষকে প্রভাবিত করতে পারে। একটি কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের দীর্ঘায়ু অর্জনের জন্য অন্যান্য ফ্যাক্টরের মতো লোগোও অনেক গুরুত্বপূর্ন ভুমিকা পালন করে। লোগো যতো বেশি আকর্ষনীয় ও মেমোরেবল করা যাবে ততোই প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে যাওয়া যাবে।

পেশাদারিত্বের পরিচয় (Professionalism): যেসকল বড় এবং সফল কোম্পানি/ ব্র্যান্ড আছে তাদের মাঝে থাকা একটি কমন ফ্যাক্টর হলো সবার একটা আলাদা এবং ইউনিক লোগো আছে। কোম্পানির লোগো কাস্টমার আর সাপ্লাইয়ারকেও অনেক ভাবে প্রভাবিত করতে পারে।

মানুষের মনে সাধারনত এমন ধারনা থাকে যে মার্কেটে থাকা পুরোন কোম্পানি বা ব্র্যান্ডেরই লোগো থাকে। তাই মার্কেটে অনেকদিন থাকার পরেও যদি কোন লোগো না থাকে তবে নতুন ক্লায়েন্টরা কোম্পানিকে নতুন ভাবতে পারে।

ব্র্যান্ডের বৈশিষ্ট্য বোঝায় (Visualise Brand’s Personality): কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের পার্সনালিটি কেমন তা বোঝাতে লোগো ব্যবহার করা যায়। আর এইজন্য কাস্টমারকে আলাদাভাবে আকর্ষিতও করা যায়।

যেমনঃ উজ্জ্বল কোন রঙ বা ইউনিক ডিজাইনের মাধ্যমে উদ্ভাবন এবং ব্র্যান্ডের অরিজিনালিটি বোঝায়। আবার লোগোর মাঝে সুন্দর প্রানীর ছবি বা কার্টুন রাখলে কাস্টমাররা কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের উপর সহজে আস্থা রাখতে পারে এবং সাচ্ছন্দ বোধ করে। এমনকি এটা পুরোন কাস্টমার ধরে রাখতেও সাহায্য করে।

তাছাড়া একটা লোগো কাস্টমারের কাছে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের প্রথম পরিচয় হওয়ায় এর স্টাইল বা ডিজাইনটা ভালো হওয়া উচিত। এখন যদি লোগো ভালো হয় তো কাস্টমারের মাঝে অবশ্যই কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের সম্পর্কে কৌতুহল জাগবে। আর লোগো যদি ভালো করা সম্ভব না হয় তবে এটা কোম্পানির ব্যর্থতা হিসেবে ধরা হয়।

ব্র্যান্ড/ কোম্পানি কেমন, কোন সেক্টর নিয়ন্ত্রন করছে তা প্রথমে সাধারনত লোগো দিয়েই বোঝানোর চেষ্টা করা হয়।

প্রোডাক্ট ব্র্যান্ডিং (Product Branding): কোন কোম্পানি/ ব্র্যান্ড যদি তাদের লোগো অন্য কোন প্রোমশনাল প্রোডাক্টের মাধ্যমে ব্যবহার করে তবে তা কোম্পানির মার্কেটিং ও বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।

যেমনঃ ব্যাগ/ কলমের উপর যদি এই লোগো ব্যবহার করা হয় তবে কেউ যখন এই প্রোডাক্ট ব্যবহার করবে ততবার মার্কেটিং হবে।

প্রতিযোগি থেকে আলাদা করে (Seperates from Competitor): মার্কেটে থেকে অন্য কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের থেকে যদি আলাদাভাবে কাস্টমারের মনোযোগ আকর্ষণ করা না যায়, তবে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট যতোই ভালো হোক না কেন এতে কোন লাভ হবে না। আর এখানে একটা সুন্দর লোগোই পারে প্রতিযোগীদের থেকে আলাদা হয়ে কাস্টমারদের মনোযোগ আকর্ষণ করতে।

একটা সুন্দর লোগো যেটা কোম্পানির ওয়েবসাইটে/ সোশাল মিডিয়ার পেজে অনেক সুন্দর লাগবে তা কাস্টমারদের কাছে পৌছাতে অনেক গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করবে। আর একবার কাস্টমারের কাছে পৌছাতে পারলেই কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের ভালো প্রোডাক্ট/ সার্ভিস দিয়ে চুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া যায়।

যেমনঃ একই মার্কেটে অনেক রকম কফিশপ থাকা সত্ত্বেও একটা দোকানে কেনো ভীড় বেশি থাকে। এখানে এমনও হতে পারে কফির স্বাধ থেকে প্রথমে এই শপের লোগো কাস্টমারের মাঝে বেশি প্রভাব ফেলতে পেরেছিলো। একটা সুন্দর ডিজাইনের লোগো তার সঠিক রঙ- আইকন- ফন্ট এর কম্বিনেশন দিয়ে কোম্পানির ব্যাকগ্রাউন্ড (পেশাদারিত্ব, টোন, টার্গেট কাস্টমার) এবং প্রোডাক্ট/ সার্ভিসের মান (নতুনত্ব, দক্ষতা) বোঝাতে পারে।

সহজ কথায় একটা সুন্দর লোগো কোম্পানির মান বোঝাতে এবং কেন এই কোম্পানি/ ব্র্যান্ড তার প্রতিযোগিদের থেকে ভালো এই ম্যাসেজটা দিতে সক্ষম।

গ্রাহককে জানান (Informs Customers): একটা ভালো লোগো কাস্টমারদেরকে কোম্পানি/ ব্র্যান্ড মার্কেটের কোন সেক্টরে আছে বা তাদের প্রোডাক্ট/ সার্ভিস কি সেই সম্পর্কে একটা ধারনা নিতে সাহায্য করে। লোগো ডিজাইনে অ্যাবস্ট্র্যাক্ট বা ট্র্যাডিশনাল ডিজাইন যাই ব্যবহার হোক না কেন এই কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের সার্ভিস কিভাবে তাদের সাহায্য করবে এটা জানতে সাহায্য করে।

আর লোগো যেহেতু কাস্টমাররা প্রথমে দেখছে তাই তাদের সাথে কমিউনিকেশনের প্রথম মাধ্যম লোগোটাকে বলা যায়। আর সকল প্রকার মার্কেটিং ম্যাটেরিয়াল যেমন, বিজিনেস কার্ড, ফ্লেয়ার্স, এডভার্টাইজমেন্ট এর সূচনা বা কেন্দ্র হিসেবে লোগোই অনেক বড় একটা ভুমিকা রাখতে পারে।

সহজ মার্কেটিং (Makes Marketing Easy): কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের মার্কেটিং এর জন্য লোগো এর ভুমিকা অনেক।প্রায় সকল প্রকার ওয়েবসাইটে একটা নির্দিষ্ট জায়গা থাকে এডভার্টাইজমেন্ট এর জন্য। আর এই নির্দিষ্ট জায়গায় কোম্পানি এর পুরো বিবরন দেওয়া থেকে কোম্পানি এর লোগো আর কোথায় পাওয়া যাবে এইটা লেখা সুবিধা এবং অনেক লেখা থেকে একটা সুন্দর লোগো এই কাজটা আরও সুন্দর ভাবে করতে পারে।

আবার বিলবোর্ডে লোগো না দিয়ে কোম্পানির অন্যান্য এথিক্সের কথা আর প্রোডাক্ট/ সার্ভিস এর বিবরন দেওয়াটাও ঝামেলা। তাছাড়া একটা রাস্তার পাশে একটা লোগো যেভাবে সহজে একটা ম্যাসেজ দিবে ঠিক তেমনি ভাবে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের বিবরন লিখে সেটা প্রকাশ করা সম্ভব না।

ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে (To follow Consistency): ব্র্যান্ডের পরিচিতি বজায় রাখতে প্রোডাক্ট/ সার্ভিসের সাথে যত ব্যতিক্রমী বৈশিষ্ট্য যোগ করা যায় ততই ভালো। তাছাড়া একটা ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হয় সকল মিডিয়া প্লাটফর্মে। একটা জরীপে দেখা গেছে সকল মিডিয়া প্লাটফর্ম জুড়ে ধারাবাহিকতা বজায় রাখলে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের রেভিনিউ প্রায় ২৩% বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আর লোগো এইখানে সব থেকে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে কারন সব স্থানেই লোগোকে সমান গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করা যায়।

এইজন্য সবার আগে নিশ্চিত করা দরকার কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের কাছে ভালো মানের একটি লোগো আছে। একটা ভালো লোগো নতুন একটা কোম্পানিকেও কাস্টমারের কাছে পেশাদার, বিশ্বাসযোগ্য ও নির্ভরশীল করে তুলতে পারেও।

ইন্টারনেট এ্যপিল (Internet Appeal): অনলাইনে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের একটা দৃঢ় উপস্থিতি এর জন্য একটা স্বতন্ত্র লোগো অনেক সহজে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। ওয়েবসাইটের ডিজাইন থেকে কতটা উদ্ভাবনি ও সৃজনশীল লোগো ব্যবহার করা হচ্ছে, সেই ফ্যাক্টরের গুরুত্ব অনেক বেশি থাকে। কারন প্রতিযোগিদের থেকে আলাদা করতে ও এগিয়ে রাখতে একটা লোগোর ভুমিকা এখানে একটু হলেও বেশি কাজ করে। লোগো ডিজাইন এমনভাবে করা উচিত যেন এক-দুই সেকেন্ডের মাঝেই ভিজিটরের মনোযোগ আকর্ষন করতে পারে। কারন এখনের সময়ে সকল ক্ষেত্রেই প্রতিযোগিতা

বেশি থাকায় এবং কাস্টমারের মনোযোগ আকর্ষনের জন্য অনেক রকম অপশন থাকার কারনে অনেক বেশি হলে কাস্টমাররা ২সেকেন্ড সময়ের মাঝে একটা জিনিসের সম্পর্কে ধারনা নেওয়ার ইচ্ছা পোষনের জন্য ব্যয় করে থাকে। একজন ওয়েবসাইট ভিজিটরকে কাস্টমারে পরিবর্তন করতে ওয়েবসাইটের ডিজাইন থেকে লোগো এর গুরুত্ব এখানে বেশি কাজ করে কারন লোগো এখানে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের প্রথম পরিচিতি হিসেবে কাজ করে। আর এই লোগোর মাধ্যমেই কাস্টমারের অবচেতন মনে একটা উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে যে কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের এই প্রোডাক্ট/ সার্ভিস তার দরকারে আসতে পারে এবং এটার সম্পর্কে আরও জানা যায়। আর এই সুযোগকে তখনই কাজে লাগানো যাবে যখন কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের একটা সুন্দর লোগো থাকবে।

তাছাড়া ইমেইলে সিগনেচারের সাথে কোম্পানির লোগো ব্যবহার করলে আরও প্রমোশন পাওয়া সম্ভব।

কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের আনুগত্যতা পেতে (Fosters Brand Loyalty): কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের পরিধি মার্কেটে বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এর লোগোর পরিচিতিও বাড়তে থাকে। এতে কোম্পানি/ ব্র্যান্ড এবং এর প্রোডাক্ট/ সার্ভিস কেমন তা সম্পর্কে সকলে লোগোর মাধ্যমেই বুঝতে পারে। আর এর মাধ্যমেই সকলের বিশ্বাস ও আনুগত্যতা পাওয়া সম্ভব হয়।

উদাহরন দিয়ে বললে, কেউ যদি একটা ট্রাউজার/ কনভার্স কিনতে চায় তবে মার্কেটে থাকা অনেক কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের প্রোডাক্টের মাঝে Adidas এর Three Stripe বা Nick এর Shoows দেখে প্রোডাক্ট কিনতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবে কারন এই লোগোগুলো তার পূর্ব পরিচিত এবং কোম্পানির মান কেমন এবং বিশ্বস্ততা এই লোগোর সাথেই জড়িয়ে আছে।

ব্র্যান্ডের প্রতি বিশ্বাস তৈরিতে যদি লোগোকেও সাথে রাখা হয় তবে এখানে ব্র্যান্ডের বিশ্বস্থতা ও আনুগত্যতা তৈরি অনেক সহজ ও সুনিশ্চিত থাকে। এরপর একটা প্রোডাক্ট/ সার্ভিস থেকে যদি কাস্টমার তার চাহিদা অনুযায়ী ফলাফল পেয়ে থাকে এবং তৃপ্তি পায় তবে পরবর্তিতেও তারা এই কোম্পানি/ ব্র্যান্ডকে খুজে বের করবে আর এই খোজার জন্য এই লোগোকে প্রাধান্য দিবে।

লোগো ডিজাইনিং বা ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু ভুল হলে নিম্নে উল্লেখিত কিছু অসুবিধা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

অসুবিধা সমূহ

ডিজাইন একটু ইউনিক করতে গেলে রঙ এর জন্য কিছু সীমাবদ্ধতা দেখা যেতে পারে। আর এই অবস্থায় ফলাফল হিসেবে দেখা যায় গতানুগতিক কিছু লোগোর ডিজাইনের মতই হয়ে গেছে। আর এই প্রভাব পড়বে কাস্টমারদের উপর।

অনেক ডিজাইনারের ক্ষেত্রেই দেখা যায় র‍্যান্ডমলি কিছু কালার পছন্দ করে লোগোতে ব্যবহার করেন। এইখানে লোগো কাস্টমারদের উদ্দেশ্যে ভুল ম্যাসেজ দিতে পারে আর কাজটা অপেশাদারিত্বের উদাহরন হয়ে যাবে আর এই প্রভাব সরাসরি কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের উপর পড়বে।

টাইপফেস ব্র্যান্ডের পার্সনালিটি বোঝানর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ন মাধ্যম। কিন্তু অনেক সনামধন্য কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের ব্যবহার করা লোগো যদি একটা নতুন কোম্পনি/ ব্র্যান্ড ব্যবহার করা শুরু করে তবে হিতে বিপরিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

একটা ছোট এরিয়া কভাররেজ দেওয়ার সময় ব্র্যান্ডের লোগো ঐ এরিয়ার জন্য কাজ করলেও একই লোগো বৃহৎ এরিয়ার জন্য কাজ নাও করতে পারে। যেমন স্যামসাং যখন সাউথ কোরিয়ায় তাদের বিজিনেস করছিলো তখন ট্রাইস্টার লোগো কাজ করলেও পরবর্তিতে বিজিনেস বড় করার সাথে সাথে তাদের লোগোকেও পরিবর্তন করতে হয়েছিলো।

ছোট বা নতুন কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের ক্ষেত্রে অ্যাবস্ট্র্যাক্ট মার্ক বা সিঙ্গেল ওয়ার্ড মার্কস ব্যবহার না করাই ভাল। কারন বড় ব্র্যান্ড বা কোম্পানি তাদের লোগো প্রকাশেরে সুচনা সাধারনত কম্বিনেশন লোগো, এমব্লেম মার্কস বা ওয়ার্ড মার্কস দিয়ে করেছিলো কারন প্রথমে মার্কেটে একটা প্রভাব রাখতে গভীর অর্থের লোগো ব্যবহারে লাভ হয় না। যেমনঃ NICK এর SWOOSH মার্ক যেভাবে প্রভাব ফেলবে, নতুন কোন কোম্পানি এসে অবশ্যই কোন অ্যাবস্ট্র্যাক্ট মার্ক লোগো ব্যবহার করে সেই প্রভাব ফেলতে পারবে না।

ডাইনামিক মার্কস লোগো ব্যবহারেও অনেক ঝামেলা হতে পারে। যেমনঃ খরচ বেশি, ব্যবহারের জন্য ঝামেলা, কাস্টমারদের মাঝে কনফিউশন তৈরী, বানানোর জন্য খরচ বেশি। এইজন্যই MIT Media Lab ৩বছরের মাঝেই তাদের ডায়নামিক লোগো মার্কস ব্যবহার বন্ধ করে দেয়।

উপরের সকল অসুবিধা থেকেও বড় রকমের অসুবিধা তৈরি হয় যখন অসঙ্গত কিছু লোগো ডিজাইন করা হয়।

এখানে HERSHEY তাদের চকচিপ্সের একটা আইকন দিতে চেয়েছিলো কিন্তু অনেক বড় একটা মার্কেটিং ফ্লপ ছিলো তাদের এই লোগোর জন্য।

KIDS EXCHANGE এর লোগোর মাঝে একটা স্পেস না দেওয়ার জন্য অনেক ঝামেলায় পড়তে হয়েছিলো।

খারাপ একটা ম্যাসেজ দেয়।

ভ্যাক্সিন ক্যাম্পেইনের জন্য খুবই বাজে একটা লোগো।

উপসংহার (Conclusion):

লোগো থেকে প্রাপ্ত সুবিধা অসুবিধা পুরোটাই নির্ভর করে ডিজাইন এবং ব্যবহারের উপর। এখন কোম্পানি/ ব্র্যান্ডের জন্য যে লোগোর ব্যবহার করা হবে, তার ডিজাইনের সময় সবসময় সম্ভাব্য কাস্টমারদের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে যে তারা কোন মানসিকতার আর কিভাবে লোগোটি দেখবে এবং লোগোর মাধ্যমে দেওয়া ম্যাসেজ ধরার ক্ষমতা তাদের আছে নাকি। এই সকল বিষয় মাথায় রাখলেই লোগোর থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নেওয়া সম্ভব হবে এবং এই অসুবিধাগুলো এড়ানো সম্ভব।

  • https://www.freelogoservices.com/blog/2019/05/01/10-business-logo-benefits/
  • https://www.tailorbrands.com/logo-maker/why-a-logo-is-important
  • https://www.boredpanda.com/worst-logo-fails-ever/?utm_source=google&utm_medium=organic&utm_campaign=organic
  • https://www.businessinsider.com/15-worst-corporate-logo-fails-2012-1#pride-in-oldham-15
  • https://thelogocompany.net/top-20-rude-logos/
  • https://smallbusiness.chron.com/advantages-disadvantages-allusive-logos-39319.html
  • https://smallbusiness.chron.com/disadvantages-brand-identity-24599.html
Next to read
Canvas & Methods
বিজনেস মডেল ক্যানভাস ( Business Model Canvas)
বিজনেস মডেল ক্যানভাস ( Business Model Canvas)

মূলত ব্যবসা শুরু করার আগে যেকোনো উদ্যোক্তাকে একটা স্ট্র‍্যাটেজিক প্ল্যান নিয়ে আগাতে হয়, তার ব্যবসার সকল কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে কিভাবে পরিচালনা করবেন! সনাতনী পদ্ধতি অনুসরণ করে পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখার চেয়ে বিজনেস মডেল ক্যানভাস অনুসরণ করা অধিকতর সহজ এবং কার্যকর। কারণ এই মডেল ব্যবহার করে আপনি নয়টি ব্লক তৈরি করে একটা পৃষ্ঠায় সবকিছু আলোকপাত করতে পারবেন যা আপনার নিজের এবং ব্যবসায় সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যাক্তির বুঝতে অনেকটা সহজ হবে।

বেইট এন্ড হুক মডেল  (Bait & Hook Model)
Business Models
বেইট এন্ড হুক মডেল (Bait & Hook Model)
অ্যাড অন মডেল (Add On Model)
Business Models
অ্যাড অন মডেল (Add On Model)
সারোগেট মার্কেটিং (SURROGATE MARKETING)
Marketing
সারোগেট মার্কেটিং (SURROGATE MARKETING)
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)
Logo
লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
Business
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
ব্রান্ডিং (Branding)
Branding
ব্রান্ডিং (Branding)
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
Sales
সেলস কি এবং কিভাবে তা কাজ করে?
সেলস ফানেল বা বিক্রয় ফানেল কি?
Sales
সেলস ফানেল বা বিক্রয় ফানেল কি?
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ
Investment
বিনিয়োগ কি? বিনিয়োগের ধরণ এবং উদাহরণ