10 Ways to Make Money Offline

পড়ালেখার পাশাপাশি অফলাইনে বারতি অর্থ আয় করতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কায়িক পরিশ্রম করতে রাজি থাকতে হবে। এভাবে টাকা আয়ের সহজ কিছু উপায়গুলো মাঝে থাকছে - গ্যাজেট ক্রয়-বিক্রয়, টিউশন করানো, ডেলিভারি পারসন হিসেবে কাজ করা, রাইড শেয়ারিং সার্ভিস প্রদান, ইভেন্ট ফটোগ্রাফি, ইভেন্ট স্টাফ, ইভেন্ট প্ল্যানিং, মিল সিস্টেমে খাবার সরবরাহ, ফুড-স্টক ব্যবসা, কল সেন্টারে চাকরি ইত্যাদি।
Key Points
- আইটেম কালেক্ট করার সময় এমন আইটেমগুলোই কালেক্ট করবেন যেগুলো সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা রয়েছে।
- আপনি যদি একজন কলেজ বা ইউনিভার্সিটি লেভেলের স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য কাজ হবে টিউশন করানো।
- বলে রাখা উচিত যে শুনতে সহজ মনে হলেও ডেলিভারি পারসনদের কাজ মোটেও সহজ নয়।
- নিজের ও যাত্রীর নিরাপত্তা বজায় রাখতে “অ্যাপ” ছেড়ে কখনো “খ্যাপে” যাবেন না।
ভূমিকা
এখন ট্রেন্ড হচ্ছে ‘ঘরে বসে অনলাইনে টাকা আয়’। বাক্যটিকে আমরা মিম বানিয়ে ফেললেও আসলেই কিন্তু অনেকে অনলাইনে বেশ ভালো করছেন। আবার কেউ কেউ অনলাইন আয়কেই নিজের ফুলটাইম ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তবে বাস্তব হচ্ছে, সবাই কিন্তু অনলাইনে ভালো পারফর্ম করতে পারেন না। আবার কেউ কেউ ঘন্টার পর ঘন্টা একটানা টেবিলে বসে থাকতে আগ্রহী নন। তাই অনেকেই পড়ালেখার পাশাপাশি অফলাইনে কিছু করার কথা ভাবেন। আপনি যদি তেমনই একজন হয়ে থাকেন, তবে আপনার জন্যই আজকের লেখায় আমরা তুলে ধরবো এমন ১০টি কাজ, যা আপনি অফলাইনে করতে পারবেন এবং অর্থ আয় করতে পারবেন।
অফলাইনে কিছু অতিরিক্ত অর্থ আয় করার ১০টি উপায়
চলুন তবে জেনে নেয়া যাক কি কি উপায় ব্যবহার করে আপনি অফলাইনে অতিরিক্ত কিছু অর্থ আয় করতে পারবেন। প্রতিটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত লিখতে গেলে লেখাটি অনেক বড় হয়ে যাবে, তাই সংক্ষেপে আলোচনা করা হচ্ছে। আপনার কোনো বিষয় ভালো লাগলে সেটি সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জেনে নিতে ভুলবেন না যেন।
১। পুরনো গ্যাজেট বিক্রয়
আপনার কাছে যদি পুরনো মোবাইল ফোন, অডিও প্লেয়ার, ল্যাপটপ ইত্যাদি পরে থাকে যা আপনি এখন ব্যবহার করছেন না, সেগুলো বিক্রয় করেও আপনি অতিরিক্ত কিছু অর্থ আয় করতে পারবেন। আর শুধু নিজের জিনিসই নয়, আপনি চাইলে এই কাজকে ছোটোখাটো একটি ব্যবসায় রুপান্তর করতে পারেন। এখানে আপনাকে শুধু ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ও গ্রুপগুলো থেকে ব্যবহৃত তবে ভালো গ্যাজেট আইটেমগুলো কালেক্ট করতে হবে যতোটা সম্ভব কম মূল্যে। তারপর সেগুলো আপনি অল্প কিছু লাভে ফেসবুকেই বিক্রয় করে দিতে পারবেন।
তবে আইটেম কালেক্ট করার সময় এমন আইটেমগুলোই কালেক্ট করবেন যেগুলো সম্পর্কে আপনার ভালো ধারণা রয়েছে। ভুলে নষ্ট আইটেম কালেক্ট করে ফেললে পরে তা বিক্রয় করতে আপনার সমস্যা ফেইস করতে হতে পারে।
২। শিক্ষার্থী পড়িয়ে অর্থ আয়
বাংলাদেশে কলেজ জীবন থেকেই মোটামুটি সবাই টিউশন করানো শুরু করে। গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে ভালো চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত এভাবেই অনেকে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাই আপনি যদি একজন কলেজ বা ইউনিভার্সিটি লেভেলের স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার জন্য সবচেয়ে সহজলভ্য কাজ হবে টিউশন করানো। হতে পারে আপনি এমন কোনো বিষয়ে পড়ালেখা করছেন, যেটায় টিউশনের চাহিদা খুবই কম অথবা আপনার এরিয়ায় টিউশন পাওয়া মুশকিল।
সেইক্ষেত্রে আপনি অ্যাকাডেমিক টিউশনের বাইরেও ভিন্ন কিছুর চেষ্টা করতে পারেন। আপনার যদি কোনো হবি বা ভালো কোনো স্কিল থাকে, মানুষকে সেটি শিখিয়েও আপনি অর্থ আয় করতে পারবেন, যেমন - ড্রয়িং, গান গাওয়া, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কোডিং, ড্রাইভিং, সাতার কাটা ইত্যাদি।
৩। ফুড অথবা প্যাকেজ ডেলিভারি পারসন হিসেবে অর্থ আয়
মানুষের ঘরে বসে অর্ডার করার প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। বারতি অর্থ আয় করার জন্য আপনি এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারেন। পাঠাও ফুড বা কোনো প্যাকেজ ডেলিভারি কোম্পানীর জন্য ডেলিভারি পারসন হিসেবে সাইন-আপ করে আপনি পার্ট-টাইম কাজ করেও অর্থ আয় করতে পারেন। তবে এই কাজটি করার জন্য আপনার একটি বাইক বা বাইসাইকেল থাকতে হবে। আর বলে রাখা উচিত যে শুনতে সহজ মনে হলেও ডেলিভারি পারসনদের কাজ মোটেও সহজ নয়। রোদ-বৃষ্টির মাঝে প্যাকেজ ডেলিভারি করার জন্য আপনাকে অনেক ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে।
৪। রাইড শেয়ারিং সার্ভিস থেকে টাকা আয়
আপনার কি একটি গাড়ি বা বাইক রয়েছে যা ব্যবহার করে আপনি প্রতিদিন বিশ্ববিদ্যালয় বা অফিসে যাতায়াত করেন? যদি থেকে থাকে, তাহলে আপট্রিপে একজন ও ডাউনট্রিপে একজন করে সাথে নিয়ে নিলেই আপনি বারতি কিছু অর্থ আয় করতে পারবেন। এইক্ষেত্রে আপনি পাঠাও/উবার-এর মতো অ্যাপগুলো ব্যবহার করতে পারেন। আর যদি আপনার অন্য কোনো কাজ না থাকে, তাহলে স্বল্প সময়ের জন্য এই কাজকেই আপনি জীবিকা হিসেবে বেছে নিতে পারেন। এতে করে মাস শেষে আপনি বেশ ভালো একটি অ্যামাউন্ট আয় করতে পারবেন। তবে নিজের ও যাত্রীর নিরাপত্তা বজায় রাখতে “অ্যাপ” ছেড়ে কখনো “খ্যাপে” যাবেন না।
৫। ফটোগ্রাফি থেকে টাকা আয়
আপনার যদি একটি মোটামুটি মানের ক্যামেরা থাকে, তাহলেও আপনি প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন। তবে ক্যামেরা ছাড়া এই কাজ করা সম্ভব নয়। শুরুতে বন্ধু-বান্ধবদের বিভিন্ন ইভেন্ট যেমন - জন্মদিন, গেট-টুগেদার, পিকনিক ইত্যাদির দায়িত্ব নিতে পারেন। সেখানে ভালো কাজ করলে পরবর্তীতে আপনাকে আর নতুন কাজ পেতে কোনো সমস্যা ফেইস করতে হবে না। চাইলে শুরুতে ২-৩টি ইভেন্টে ফ্রি কাজ করে দিলেন, এতে করে আপনার ভালো মার্কেটিং হয়ে যাবে।
৬। ইভেন্ট স্টাফ হিসেবে কাজ করা
আমাদের আশেপাশে প্রতিনিয়ত প্রচুর ইভেন্ট হচ্ছে, যেমন - মেলা, কনসার্ট, উৎসবের আয়োজন ইত্যাদি। এসব ইভেন্ট যারা আয়োজন করেন, তাদের প্রচুর পরিমাণ সাময়িক কর্মীর প্রয়োজন হয়। আপনি চাইলে এই ধরণের কাজ করেও বারতি কিছু অর্থ আয় করতে পারেন। তবে এই কাজের সমস্যা হলে, আপনি চাইলেও এই ধরণের কাজকে কখনো ফুলটাইম হিসেবে নিতে পারবেন না, যেহেতু সবসময় ইভেন্ট থাকে না। তাই আপনার হাতে যদি বেশ কিছু ছুটি থাকে বা আপাতত একেবারেই কোনো কাজ না থাকে, তাহলে এই উপায়টি কনসিডার করতে পারেন। ফেসবুকে ইভেন্ট স্টাফদের প্রচুর গ্রুপ রয়েছে, সেগুলোতে জয়েন হয়ে থাকলেই আশা করি আর কাজ পেতে সমস্যা হবে না।
৭। ইভেন্ট-প্ল্যানার হিসেবে কাজ করা
কেমন হয় যদি শুধু ইভেন্ট স্টাফ হিসেবে কাজ না করে পুরো ইভেন্টটাই আপনি নিজে প্ল্যান করেন? শুনতে বেশ এক্সাইটিং মনে হলেও, কাজটি কিন্তু বেশ কঠিন। তবে যদি ছোট একটি টিম নিয়ে কাজটি শুরু করতে পারেন, তাহলে এই ফিল্ডে বেশ ভালো করা সম্ভব আর কাজের সুযোগ’ও অনেক। আপনি চাইলে পরবর্তী সময়ে এটাকে ফুল-টাইম পেশা হিসেবেও বেছে নিতে পারবেন। এই কাজে আপনার কোনো অভিজ্ঞতা না থাকলে অনলাইন থেকে কিছু কোর্স করে নিতে পারেন, আর বাস্তব-অভিজ্ঞতা অর্জনের উদ্দেশ্যে শুরুতে ইভেন্ট-স্টাফ হিসেবে কিছুদিন কাজ করে দেখতে পারেন।
৮। মিল সিস্টেমে খাবার সরবরাহ
এটিও একটি ছোট পরিসরের ব্যবসা। আপনি চাইলে বাসায় নিজে বা বাবুর্চি রেখে রান্না করে সেই খাবার বেলা-হিসেবে আশেপাশের অফিস, দোকান বা ব্যাচেলরদের বাসায় সরবরাহ করতে পারেন। শুরুতে গ্রাহক পেতে কিছুটা সময় লাগলেও, কিছু গ্রাহক পাওয়ার পর, যদি আপনি রান্না ভালো হয়, তাহলে তারাই অন্যদের কাছে আপনাকে রেফার করবে। এভাবে খুব অল্প সময়েই ভালো পরিমাণ গ্রাহক পাওয়া সম্ভব। আর খাবারের ব্যবসায় মূল লাভের জায়গা হচ্ছে কাচাবাজার। তাই আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক স্থান থেকে কাচাবাজার সংগ্রহ করতে পারেন, তাহলে আপনার মিলের খরচ অনেক কমে আসবে এবং আপনি খুব অল্প টাকায় গ্রাহকদের মিল অফার করতে পারবেন।
৯। ফুড-স্টল ব্যবসা
আমাদের দেশের শহরাঞ্চলে বিনোদন কেন্দ্রের বড়ই অভার। তাই মানুষজন শপিংমল, স্কুল-কলেজ বা অফিসের আশেপাশেই সাধারণত আড্ডা দেয়। আপনি চাইলে এসব লোকেশনে একটি ছোট ফুড-স্টল দিয়ে সেখানে বিভিন্ন ফাস্ট-ফুড আইটেম বিক্রয় করতে পারেন। তবে এইক্ষেত্রে আপনাকে শুরুতে কিছু পরিমাণ টাকা বিনিয়োগ করতে হবে। আর লোকেশন ও খাবারের মান ভালো হলে সেই বিনিয়োগকৃত টাকা উঠে আসবে খুব শীঘ্রই।
১০। কল-সেন্টার রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে কাজ
আমাদের দেশে এখন প্রচুর কোম্পনী তাদের কাস্টমার সার্ভিসের কাজগুলো আউটসোর্স করছে। তাই গড়ে উঠেছে ছোট-বড় অনেক কল সেন্টার। আপনি চাইলে সেগুলোতে কল-সেন্টার রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে চাকরি করতে পারেন। এসব প্রতিষ্ঠানে সাধারণত উচ্চ-মাধ্যমিক পাশ থাকলেই জয়েন করা যায় এবং ঘন্টা-প্রতি হারে সেলারি হয়ে থাকে। আপনি ঠিকভাবে কাজ করে গেলে ও মাস শেষে টার্গেট অর্জন করতে পারলে ১৫-২০ হাজার টাকা অনায়াসে আয় করতে পারবেন।
পরিসংহার
আমাদের দেশে বেকার যুবকদের সংখ্যা প্রচুর। তবে একটু চেষ্টা করলেই উপরিউক্ত যেকোনো কাজ করে আমরা অর্থ আয় করতে পারি। কিছু কিছু কাজে স্বল্প পরিমাণ মুনাফার প্রয়োজন হতে পারে, তবে তার পরিমাণ ইনিশিয়ালি অনেক বেশি হওয়ার কথা নয়। আর আমরা চাইলে পড়ালেখার পাশাপাশিও এই কাজগুলো করতে পারি। এতে করে আমরা আমাদের পড়ালেখার খরচ মিটিয়ে পরিবারেও কিছুটা কন্ট্রিবিউট করতে পারবো।
- https://www.nerdwallet.com/article/finance/how-to-make-money
- https://www.bankrate.com/banking/savings/how-to-make-money/
- https://www.linkedin.com/pulse/13-unique-ways-earn-money-online-offline-from-home-kamrul-islam-yqtic
- https://millennialmoney.com/ways-to-make-money/
- https://www.geeksforgeeks.org/ways-to-make-money/
- https://socialbuzzhive.com/100-creative-ways-to-make-money-on-and-offline/
- https://financebuzz.com/how-to-make-money
Next to read
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)


সাবস্ক্রিপশন মডেল (Subscription Model)

অ্যাড অন মডেল (Add On Model)

ডিজিটাল মার্কেটিং কি এবং কেন গুরুত্বপূর্ণ? ডিজিটাল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রসমূহ

সারোগেট মার্কেটিং (SURROGATE MARKETING)

লোগোর উদাহরন (Example of Logos)

হোরেকা (HORECA)

অর্থনীতি কী?

সামষ্টিক অর্থনীতি বা ম্যাক্রো ইকোমিক্স ( Macro Economics ) কী?
