কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)

কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ মূলত এক ধরনের টেমপ্লেট বা চার্ট। যা অনেকাংশে একটা স্টোরিবোর্ড এর মতো ও কাজ করে থাকে। নিতান্তই ছোট এবং সংক্ষিপ্ত কিন্তু অর্থবহ এই টেমপ্লেট কিংবা স্টোরিবোর্ড আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
Key Points
- গ্রাহকদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভাবে ধারণা পেতে ব্যবহার করা হয় জনপ্রিয় একটি বিজনেস টুল কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ
- কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ মূলত এক ধরনের টেমপ্লেট বা চার্ট
- বিভিন্ন স্টার্টআপ সহ, ছোট, বড়, মাঝারি সবধরনের প্রতিষ্ঠানই এই টেমপ্লেট ব্যবহার করে আসছে। প্রায় সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর সঠিক ব্যবহারে সাফল্যের গতিকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
- কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপিং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজ এবং সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে গ্রাহক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাবলি সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে পারবেন
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ
যেকোনো ব্যবসায়েই আয়ের উৎস আসে মূলত একটি নির্দিষ্ট ধরনের গ্রাহক থেকে। একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার কাস্টমার অথবা গ্রাহক সম্পর্কে যতটা অবগত হতে পারে। বিপণন থেকে শুরু করে অনেক ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করা ততটাই সহজ এবং লাভজনক হয়ে যায়। ব্যবসায়ে এই গ্রাহকদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভাবে ধারণা পেতে ব্যবহার করা হয় জনপ্রিয় একটি বিজনেস টুল কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ মূলত এক ধরনের টেমপ্লেট বা চার্ট। যা অনেকাংশে একটা স্টোরিবোর্ড এর মতো ও কাজ করে থাকে। নিতান্তই ছোট এবং সংক্ষিপ্ত কিন্তু অর্থবহ এই টেমপ্লেট কিংবা স্টোরিবোর্ড আপনার ব্যবসার উন্নতির জন্য অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে পারে।
গ্রাহকের চাহিদা-প্রয়োজনীয়তা যাচাই করে কোনো একটি সমস্যাকে সুনিপূণভাবে চিহ্নিত করতে আপনাকে সাহায্য করবে কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ। পাশাপাশি এটি আপনাকে গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনো একটি সমস্যার সঠিক সমাধান দিতে সাহায্য করবে।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্যঃ
কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সেবা, পণ্য বা পরিষেবা যারা গ্রহণ করে থাকেন, তাঁদেরকেই মূলত ঐ প্রতিষ্ঠানের গ্রাহক বা কাস্টমার বলা হয়। এই গ্রাহক হতে পারে কোনো ব্যাক্তি আবার হতে পারে কোনো প্রতিষ্ঠান।
ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান কিংবা স্টেকহোল্ডার যাই হোক না কেন, আপনার ব্যবসার আয়ের যোগান আসবে কিন্তু এই গ্রাহকের কাছ থেকেই। তাই গ্রাহক সম্পর্কে জানা কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্যের জন্য অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আর এই কাজটিতে অন্যতম সহায়ক এবং প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করতে পারে কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ।
আমরা ইতোপূর্বেই জেনেছি যে, কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এক ধরনের টেমপ্লেট। এই টেমপ্লেট বা চার্ট এমনভাবে সাজানো যা আপনাকে ক্রমশ বিভিন্ন ধাপে আপনার গ্রাহক সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্যটি খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
অতঃপর এই তথ্য, তত্ত্ব কিংবা উপাত্তগুলো সংগ্রহের মাধ্যমে দরকারী সব বৈশিষ্ট্য কিংবা উপাত্ত গুলো খুব সহজেই নিরূপণ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি যেমন খুব নিখুঁতভাবে উদ্ভুত কোনো সমস্যা চিহ্নিত করতে পারবেন। ঠিক তেমনি ঐ সমস্যার জন্য দরকারী এবং গ্রহণযোগ্য সমাধানটাও খুব সহজেই দিতে পারবেন।
উক্ত সম্পুর্ন প্রক্রিয়াটিই কিন্তু একটি কাঠামোগত এবং সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে সম্পন্ন হয়। গ্রাহকরা সচরাচর যে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয় তা বের করতে পারা এবং একটি নির্দিষ্ট কাঠামোগত উপায়ে সমাধানের পথটাও খুঁজে পাওয়ার জন্যই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ অনেক বেশি জনপ্রিয়।
বিভিন্ন স্টার্টআপ সহ, ছোট, বড়, মাঝারি সবধরনের প্রতিষ্ঠানই এই টেমপ্লেট ব্যবহার করে আসছে। প্রায় সকল ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর সঠিক ব্যবহারে সাফল্যের গতিকে ত্বরান্বিত করতে পারে।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ ব্যবহারের আপনি যদি সফল হতে চান, তবে আপনাকে এর বিভিন্ন ধাপগুলো সম্পর্কে স্পষ্টভাবে জানতে হবে। চার্ট বা টেমপ্লেটটির এসব ধাপ গুলো জানার মাধ্যমে আপনি খুব সহজে, অল্প সময়েই তৈরী করে ফেলতে পারবেন আপনার কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ টি। তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন কোন বিষয়গুলো আপনাকে জানতে হবেঃ
কারা আপনার গ্রাহক, ব্যবহারকারী কিংবা বিনিয়োগকারো?(Who is your customer / user / stakeholder)
যেকোনো প্রতিষ্টানের সার্বিক সাফল্য নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহকের উপর। তাই সর্বপ্রথম আপনাকে খুঁজে বের করতে হবে, আপনার পণ্যের গ্রাহক বা ব্যবহারকারী কারা। আর ঐ গ্রাহকদের বয়স, বাসস্থান, পেশা, কর্মক্ষেত্র একেবারে আলাদা আলাদা করে সুনির্দিষ্ট ভাবে খুঁজে বের করতে হবে। যদি আপনার গ্রাহক কোনো ব্যক্তি না হয়ে প্রতিষ্ঠান হয়, তবে সেক্ষেত্রে ঐ প্রতিষ্ঠানের ধরন, আকার, উদ্দেশ্য, লক্ষ্য ইত্যাদি ক্ষেত্র সমূহ সুশৃঙ্খল ভাবে চিহ্নিত করতে হবে।
আপনার গ্রাহক কারা? তাদের পছন্দ এবং অপছন্দ ( What are his / her likes and dislikes)
গ্রাহকদের ব্যাপারে উপরে আলোচ্য বিভিন্ন তথ্যাদি জানার পাশাপাশি আপনাকে গ্রাহকদের পছন্দ, অপছন্দের ক্ষেত্র সমূহ খুঁজে বের করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে গ্রাহকের আচার-ব্যবহার পর্যবেক্ষণ, পর্যালোচনা করতে হবে। যেমন, তাঁর সামাজিকীকরণ, জীবনযাত্রার মান ও ধরন, অভ্যাস, মনোভাব, উপলব্ধি ইত্যাদি নানাবিধ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। অর্থাৎ একজন গ্রাহকের স্বাভাবিক আচার-ব্যবহার, বৈশিষ্ট্যসমূহ জানতে হবে।
কাজ সম্পাদনা এবং চ্যালেঞ্জ( Jobs to be done & challenge)
গ্রাহকের নানাবিধ বিষয়ে প্রয়োজনীয়তা এবং চাহিদার ক্ষেত্র সমূহ খুঁজে বের করতে হবে। অর্থাৎ গ্রাহকের সামাজিক, ব্যবহারিক, মানসিক বিভিন্ন চাহিদা বা প্রয়োজনীয়তা গুলোর সন্ধান করতে হবে। এক্ষেত্রে একদম নির্দিষ্ট ভাবে কোনো পরিস্থিতিতে বা অবস্থানে গ্রাহকের কি চাহিদা থাকতে পারে বা কোন প্রয়োজন উদ্ভব হতে পারে কিংবা যে সকল প্রতিকূলতার সম্মুখীন গ্রাহক হচ্ছে সে ব্যাপারটি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা অর্জন করতে হবে।
অনুমান (Assumptions)
গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা বা চাহিদা জানার পর জানতে হবে যে, উক্ত পরিস্থিতির জন্য গ্রাহক কোন পদক্ষেপটি গ্রহণ করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে। এবং কখন এবং কেন কোনো পরিস্থিতি প্রতিকূলতা হতে পারে কিংবা ভাল অভিজ্ঞতা হতে পারে। এক্ষেত্রে সমসম্ভাব্য ফলাফল গুলোকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তথ্য উপাত্ত গুলো যাচাই করে একটি সম্ভাবনা নিয়ে এগুতে হবে।
পূর্ববর্তী সমাধান ( Existing Solution)
অতঃপর এসব তথ্য, তত্ত্ব, উপাত্ত সমূহের ভিত্তিতে সমস্যাটি সমাধানের পথ খুজতে হবে। অর্থাৎ এমন একটি সমাধান বের করতে হবে যেন তা গ্রাহকের চাহিদা বা প্রয়োজনীয়তাটিকে সম্পূর্ণরূপে পূরণ করতে পারে। তাই উদ্ভুত ঐ সমস্যার জন্য কি কি সমাধান থাকতে পারে সেগুলো খুঁজবেন এবং যাচাই-বাছাই করবেন।
গ্রাহক, ব্যবহারকারী এবং স্টেকহোল্ডার সম্পর্কে বুঝতে পারা ( Empathize Your Customer / User / Stakeholders)
পুরো ঘটনার প্রেক্ষিতে আপনি আপনার কাল্পনিক কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন আর বাস্তবের মাঝে তফাত বুঝতে সক্ষম হবেন। ফলে ইতোমধ্যেই আপনি গ্রাহকের দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে শুরু করবেন। তাই এই তথ্য, উপাত্ত গুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা, সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি যাচাইয়ের মাধ্যমে সঠিক সমাধানটি নিয়ে গ্রাহকদের নিকট হাজির হতে পারবেন। পাশাপাশি গ্রাহক টাচ পয়েন্ট, সেলস, মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ করতে পারেন।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ কেন গুরুত্বপূর্ণ?
প্রথমত এটি একটি ছোট টেমপ্লেট বা চার্ট। আর এর মাধ্যমেই খুব সহজেই একটি ভিজ্যুয়াল রিপ্রেজেন্টেশন পাওয়া যায়। আর তাছাড়া হাতে কলমে কোনো কাগজে না লিখলেও চলে এটি। বিভিন্ন সফটওয়্যার মাধ্যমেও এটি তৈরী করা যায়, ফলে কোনো কিছু সংযোজন, বিয়োজন বা সংশোধনের কাজটাও তুলনামূলক সহজ। তাছাড়া এটি একটি পার্যায়ক্রমিক ধাপ অনুসারে তৈরী হয়, ফলে প্রক্রিয়াটাও সহজ এবং সঠিক হয়। আবার বিভিন্ন ধাপ অনুযায়ী হওয়ায় কোনো মৌলিক এবং প্রয়োজনীয় বিষয়াদিও বাদ পড়ে না।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপিং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজ এবং সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে গ্রাহক সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যাবলি সংগ্রহ এবং সংরক্ষণ করতে পারবেন। আর আমরা ইতিপূর্বেই জেনেছি যে, এর প্রাথমিক ধাপে গুলোতেই আপনাকে গ্রাহক কিংবা স্টেকহোল্ডারদের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে নানাবিধ বিষয় বিশ্লেষণ করতে হবে। ফলে এটি আপনাকে আপনার গ্রাহকদের আরো ভালভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। যা আপনার ব্যবসার কার্যক্রম প্রসারে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপিং এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই সমস্যা কে চিহ্নিত করতে পারবেন। ফলে সমাধান বের করাটাও আপনার জন্য তুলনামূলক সহজ হয়ে যাবে। যেহেতু এর মাধ্যমে বাস্তবভিত্তিক নানা তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যায়। ফলে আপনার পক্ষে সহজ ও প্রয়োজনীয় এবং সেইসঙ্গে টেকসই সমাধান দেওয়ার পথটা মসৃণ হয়ে যায়। আপনাকে নানাবিধ বিষয় বিশ্লেষণ করে সঠিক এবং সময়োপযোগী সিদ্ধান্তে পৌছানের ব্যাপারে সহায়তা করবে এই ম্যাপ।
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ অনুসরণ করে কোন বিষয়গুলোতে অধিক লাভবান হতে পারেনঃ
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ ব্যবহার করে যেকোনো সমস্যার সমাধান থেকে শুরু করে গ্রাহক সম্পর্ক স্থাপন এবং বিভিন্ন খাতে ব্যয় কমিয়ে এনে আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি করাও সম্ভব। যেমনঃ
বিক্রয় এবং বিপণন (Sales & Marketing)
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ আপনাকে গ্রাহকদের বৈশিষ্ট্য, প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কিত তথ্যের মাধ্যমে গ্রাহকদের দৃষ্টিভঙ্গী বুঝতে সহায়তা করবে। ফলে গ্রাহক সম্পর্কিত এসব নানাবিধ বিষয় জানার মাধ্যমে, আপনি খুব সহজেই আপনার সুযোগ-সুবিধা কিংবা সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করে বৃদ্ধি করতে পারবেন এবং সেইসঙ্গে সীমাবদ্ধতা গুলোকে কাটিয়ে উঠতে পারবেন। যা আপনার সেলস এবং মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে। ফলে আপনার বিক্রয়ের পরিমাণ যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক সাফল্যের পথও আরো মসৃণ করে তুলবে।
ব্রান্ড তৈরী (Establishing Brand)
কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের দৃষ্টিভঙ্গী, মনোভাব বুঝার মাধ্যমে এটা বুঝা সহজ হয় যে, তাঁদের লক্ষ্য কিংবা প্রয়োজনীয়তা গুলো কি? এবং সমস্যাগুলো জানার মাধ্যমে সমাধান খোজার পথটাও সহজ হয়। এর পাশাপাশি একটি অঞ্চল কিংবা মার্কেটের গ্যাপগুলো খুজে পাওয়া সম্ভব হয়, যেটা কিনা প্রতিযোগি প্রতিষ্ঠানগুলোও কোনো সুরাহা করতে পারে নি। ফলে এটি আপনাকে একটি ইউনিক বা অনন্য সমাধানের পথ খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। যা দ্রুত গ্রাহককে আকৃষ্ট করবে এবং আপনার ব্রান্ডকে শক্ত অবস্থান করে দিবে।
গ্রাহক সম্পর্ক তৈরী (Customer Relationships)
সর্বোপরি, এটি আপনার গ্রাহকের সঙ্গে বোঝাপড়া কিংবা সখ্যতা বৃদ্ধিতে অতুলনীয়। গ্রাহকের অবস্থা, মনোভাব বোঝার মাধ্যমে যথাযথ সতর্কীত ও কৌশলী হয়ে গ্রাহকদের সাথে কমিউনিকেশন করতে পারবেন। ফলে ধীরে ধীরে তাঁদের ভিতর আস্থার জায়গা তৈরী হবে, নির্ভরশীলতা আসবে। এছাড়াও অপ্রোয়জনীয় এবং অহেতুক পদক্ষেপ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে পারবেন। তাছাড়া আপনি বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি খুব সহজেই মোকাবিলা করতে সক্ষম হবেন।
সুযোগ-সুবিধা
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ব্যবহারে যথেষ্ট সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। যা আপনার ব্যবসার উন্নতিতেও সহায়ক।
- প্রথমত এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর মাধ্যমে একটা কাঠামোগত তত্ত্ব উপাত্ত পাওয়া যায়। ফলে সেলস, মার্কেটিং কিংবা অপারেশনস এর মতো ভিন্ন ভিন্ন ডিপার্টমেন্ট বা ক্ষেত্র গুলোর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা তুলনামূলক সহজ হয়।
- কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপের মাধ্যমে সহজেই গ্রাহকদের "টাচপয়েন্ট" বুঝা যায়। আর তাছাড়া গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া গুলো বুঝে আপনি আপনার ভুল গুলো সংশোধনও করতে পারবেন। এবং তাঁদের প্রয়োজনীয়তা, চাহিদা উপলব্ধি করে সমাধানটি দিতে পারবেন।
- গ্রাহকদের উপলব্ধি কিংবা মনোভাব বুঝার ফলে আপনার গ্রাহকদের সাথে ইমোশনাল কানেকশন করাটাও সহজ হয়ে যায়। আর এটি যেমন সার্ভিস গ্যাপ এবং গ্রাহকের বায়িং বিহ্যাভিয়ার বা প্রোসেস বুঝতে সহায়তা করবে। ফলে অন্যান্য প্রতিযোগি প্রতিষ্ঠানের থেকে ভাল সমাধান দেওয়া সহজতর হবে আপনার জন্য।
সীমাবদ্ধতা
নানান সুযোগ-সুবিধা কিংবা সম্ভাবনা থাকার পাশাপাশি এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর কিছুটা সীমাবদ্ধতাও কিন্তু রয়েছে।
- আপনার গ্রাহক কিংবা স্টেকহোল্ডার যদি ভিন্ন ভিন্ন দলের হয়ে থাকে এবং তাঁদের নানাবিধ বৈশিষ্ট্যে যদি অমিল দেখা যায়, তবে আপনাকে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হবে। এক্ষেত্রে তাদের ভিতর সংযোগ স্থাপন করার ব্যাপারটি মূলত আপনার বুঝতে অসুবিধা হতে পারে । আর যা একটি নির্দিষ্ট সমস্যা এবং সমাধান উভয়টি বোঝার ক্ষেত্রে মুশকিল হয়ে দাড়ায়।
- হঠাৎ কোনো পরিস্থিতি কিংবা জরুরী অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই গ্রাহকের প্রয়োজনীয়তা বা চাহিদা অন্য সাধারণ অবস্থার চেয়ে তফাত হয়। কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপে গ্রাহক সম্পর্কে একটি সুশৃঙ্খল তত্ত্ব উপাত্ত পাওয়া গেলেও এই সব ব্যাপারে আশানুরূপ বা গতানুগতিক সমাধান দেওয়া সম্ভবপর হয় নাহ।
উপসংহার
আপনি ক্ষুদ্র-মাঝারি যে ধরনের উদ্যোক্তাই হন না কেন এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ এর ব্যবহার আপনাকে লাভবান করতে পারে। তাই নানাবিধ বিষয় যাচাই-বাছাই বিশ্লেষণ পূর্বক এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করুন। সর্বোপরি এই কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ ব্যবহারে আপনার প্রতিষ্ঠানের সার্বিক সাফল্যের পথ উম্মোচন করুন।
Next to read
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)


শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)

অ্যাড অন মডেল (Add On Model)

মার্কেটিং এর ৭'পি (7P’s of Marketing)

সারোগেট মার্কেটিং (SURROGATE MARKETING)

বি-টু-বি, বি-টু-সি এবং বি-টু-জি কি? (B-to-B, B-to-C, B-to-G)

লোগোর প্রকারভেদ (Types of Logos)

মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ

নিট মুনাফা (net profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং কিভাবে হিসাব করবেন
