অ্যাড অন মডেল (Add On Model)

550
article image

অ্যাড অন মডেলে মূলত কোনো একটি পণ্য বা পরিসেবার জন্য বাজারে অন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম মূল্য (কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনামূল্য) নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রাহক চাহিদা সৃষ্টি করা হয়। আর পণ্য বা সেবাটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন গ্রাহক মনে ঐ নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার বাইরেও ঐ পণ্য সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত ফিচার কিংবা সেবার প্রতি প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়। এর ফলে গ্রাহক ঐ পণ্যটির বাইরেও অন্যান্য পরিষেবা গুলোও অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে। এভাবে এই অ্যাড অন বিজনেস মডেল টি মূলত কাজ করে থাকে।

Key Points

  • একটি পণ্য বা পরিষেবায় অ্যাড অন মডেল প্রয়োগ করতে হলে, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে।
  • একটি পণ্য বা সেবায় অ্যাড অন মডেল প্রয়োগ করতে হলে পণ্য এবং মূল্যকে সমান্তরালে রেখে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে।
  • অ্যাড অন মডেলে মূলত প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার তুলনায় তুলনামূলক কম মূল্যে একই পণ্য বা সেবা প্রদান করা হয়। যা গ্রাহক আকৃষ্টতা বৃদ্ধি করে যথেষ্ট বেশি হারে।
  • মূল্য নির্ধারণের উপরও অ্যাড অন মডেলের সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করছে।

অ্যাড অন মডেল

বর্তমান সময়ে অন্যতম জনপ্রিয় একটি বিজনেস মডেল হলো অ্যাড অন মডেল (Add On Model). বিভিন্ন সফটওয়্যার ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে এয়ার লাইন্স, রেস্টুরেন্ট সহ নানান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এই অ্যাড অন মডেল সঠিকভাবে ব্যবহারের ফলে তাঁদের প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা পরিষেবার মাধ্যমে সাফল্যের সাথে আয় করে নিচ্ছে। মূলত অ্যাড অন মডেল হচ্ছে কোনো নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার সাথে অতিরিক্ত পণ্য বা সেবা কিংবা ঐ পণ্যের সাথে অতিরিক্ত ফিচার তথা বৈশিষ্ট্য বা সুবিধাদি সংযোজনের মাধ্যমে তা থেকে নির্ধারিত মূল্যের বাইরেও অতিরিক্ত মূল্যের মাধ্যমে আয় করার পদ্ধতি।

অ্যাড অন মডেলে মূলত কোনো একটি পণ্য বা পরিসেবার জন্য বাজারে অন্য প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের তুলনায় কম মূল্য (কোনো কোনো ক্ষেত্রে বিনামূল্য) নির্ধারণের মাধ্যমে গ্রাহক চাহিদা সৃষ্টি করা হয়। আর পণ্য বা সেবাটি এমনভাবে উপস্থাপন করা হয় যেন গ্রাহক মনে ঐ নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার বাইরেও ঐ পণ্য সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত ফিচার কিংবা সেবার প্রতি প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি হয়। এর ফলে গ্রাহক ঐ পণ্যটির বাইরেও অন্যান্য পরিষেবা গুলোও অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে। এভাবে এই অ্যাড অন বিজনেস মডেল টি মূলত কাজ করে থাকে।

অ্যাড অন মডেলে মূলত প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার তুলনায় তুলনামূলক কম মূল্যে একই পণ্য বা সেবা প্রদান করা হয়। যা গ্রাহক আকৃষ্টতা বৃদ্ধি করে যথেষ্ট বেশি হারে।

বিস্তারিত বিবরণ

আমরা একটু লক্ষ্য করলে দেখতে পাই যে, কোনো বিশ্ববাজার কিংবা আঞ্চলিক বাজার যাই হোক না কেন একই পণ্য বা সেবাকে কেন্দ্র করে একাধিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। অর্থাৎ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান একই পণ্য বা সেবা বিভিন্ন আঙ্গিকে মানুষকে প্রদান করে থাকে। এখন এই প্রেক্ষাপটে কোনো একটি নতুন প্রতিষ্ঠান যদি সেই একই পণ্য বা সেবা ভিত্তিক ব্যবসা পরিচালনা করতে চায়, তবে সেই প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা সফল হওয়াটা খুব কষ্টদায়ক। কারণ ইতোপূর্বে যেসকল প্রতিষ্ঠান ঐ নির্দিষ্ট সেবা বা পণ্যের সার্ভিস প্রদান করে আসছে, তাঁদের একটি নির্দিষ্ট গ্রাহক ভিত্তি তৈরী হয়েছে। তাছাড়াও আস্থা কিংবা বাজার বিশ্লেষণে ও তারা একধাপ এগিয়ে। তাই এক্ষেত্রে ঐ নতুন প্রতিষ্ঠানটির জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং সম্ভাবনাময় পদ্ধতি হলো অ্যাড-অন বিজনেস মডেল।

কোনো একটি পণ্য বা পরিষেবায় অ্যাড অন মডেল প্রয়োগ করতে হলে, মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। যখন বাজারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের তুলনায় উক্ত প্রতিষ্ঠানটি তুলনামূলক কম মূল্যে ঐ একই পণ্য বা সেবা গ্রাহকদের নিকট উপস্থাপন করবে, তখন গ্রাহকরা উল্লেখিত ঐ নতুন প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবাটির প্রতি তুলনামূলক বেশি আকৃষ্ট হবে। এছাড়াও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমপরিমাণ মূল্য নির্ধারণ করলেও, ঐ প্রতিষ্ঠানটি তাঁর পণ্য বা সেবার সাথে অতিরিক্ত কিছু পণ্য বা সেবা যোগ করে দিতে পারে। উদাহরণ হিসেবে চিপস এর কথাই ধরা যাক। ধরুন একই ফ্লেভার সমৃদ্ধ চিপস একটি নির্দিষ্ট বাজারে পাঁচটি প্রতিযোগি প্রতিষ্ঠান দশ টাকা করে বিক্রি করছে, সেক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি তাঁদের প্রস্তুতকৃত চিপসটির সাথে ছোট কোনো খেলনা ফ্রি তে দেয়, তবে কিন্তু বাচ্চারা ঐ ফ্রি খেলনা পাওয়া যায় ঐ চিপস টিই কিনবে। সেক্ষেত্রে কিছুটা বেশি মূল্য নির্ধারণ করে এই চিপস টিই গ্রাহক চাহিদার শীর্ষে থাকবে।

এছাড়াও কোনো একটি পণ্য বা সেবায় অ্যাড অন মডেল প্রয়োগ করতে হলে পণ্য এবং মূল্যকে সমান্তরালে রেখে বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে। মোটকথা এই পদ্ধতিতে পণ্যের মান অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণে সতর্ক হতে হবে। এবং গ্রাহক মনে নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবাটির বাইরেও অতিরিক্ত পণ্য বা সেবাটিকে গ্রহণের উপযোগিতা কিংবা প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করতে হবে। কিন্তু এমনভাবে অতিরিক্ত পণ্য বা সেবাটিকে উপস্থাপন করতে হবে, যা মূলত জোরপূর্বক না দেখায় কিংবা গ্রাহক মনে বিরক্তির সৃষ্টি না করে। বরং এমনভাবে উপস্থাপন করতে হবে যেন গ্রাহক নিজেই এটি খুজছে কিংবা এটি তার একান্তই দরকারী। মোদ্দাকথা গ্রাহক স্বাধীনতার দিকে সর্বদা দৃষ্টিপাত করতে হবে। এক্ষেত্রে লক্ষ্য করলে দেখবেন যে, আপনি যখন কোনো একটি গেমস খেলতে থাকেন আর যখন কোনো মূহুর্তে আপনার লাইভস শেষ হয়ে যায়, তখন নতুন লাইভস ক্রয় করার জন্য আপনাকে অফার দিয়ে থাকে। ঐ মূহুর্তে কিন্তু আপনার নতুন লাইভসের উপযোগীতা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছে। আর আপনি তখনই নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে লাইভস বা কয়েন কিনে থাকবেন। এক্ষেত্রে কিন্তু আপনি আপনার প্রয়োজনীয়তার কারণেই অতিরিক্ত ফিচারটি নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে নিয়ে থাকবেন। এভাবেই মূলত অ্যাড অন মডেল কাজ করে থাকে।

মূল্য নির্ধারণের উপরও অ্যাড অন মডেলের সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করছে। তাই মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কৌশলী এবং সতর্ক হতে হবে।

সাফল্য পেতে করণীয়

অ্যাড অন মডেল ব্যবহার করে সফলতা পেতে হলে প্রথমেই আপনাকে আপনার পণ্য বা সেবার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আপনার পণ্যটির গুণগত মান অবশ্যই ভাল হতে হবে। পণ্য টি এমন হতে হবে যেন এটি গ্রাহকদের প্রাথমিক চাহিদাকে পূরণ করতে সক্ষম হয়। মোটকথা, আপনার পণ্যটির মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রাহক সন্তুষ্টির দিকে প্রথমে লক্ষ্য রাখতে হবে। এবং পাশাপাশি এই মূল পণ্যটির পাশাপাশি আপনি যে পণ্যটি আরো অতিরিক্ত বিক্রি করতে চান গ্রাহক মনে সেটির চাহিদা বা প্রয়োজনীয়তা তৈরী করতে হবে। এই যে গ্রাহক মনে নির্দিষ্ট একটি পণ্য ছাড়াও নতুন আরেকটি পণ্যের আকাঙ্খা তৈরী হলো এবং একটা সময়ে এসে ঐ পণ্য বা সেবাটি গ্রাহক ক্রয় করল, মূলত এই নতুন আরেকটি পণ্য বা সেবা নেওয়ার মাধ্যমেই অ্যাড অন মডেলের সার্থকতা পাওয়া গেল।

মূল্য নির্ধারণের উপরও অ্যাড অন মডেলের সফলতা বহুলাংশে নির্ভর করছে। তাই মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে কৌশলী এবং সতর্ক হতে হবে। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট প্রাইসিং স্ট্রাটেজিতে আগাতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার পণ্য বা সেবাটিকে প্রতিযোগী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোর থেকে কম মূল্যে বিক্রয় করতে হবে। কিংবা প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় বেশি মূল্যেও পণ্য বা সেবা বিক্রয় করতে পারেন, তবে সেই ক্ষেত্রে নতুন কিছু ফিচার প্রদান করতে হবে।

একটি নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার সাথে সংযোজিত অতিরিক্ত পণ্য বা সেবাটির গ্রহণযোগ্যতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এবং প্রতিনিয়ত অতিরিক্ত সংযোজিত পণ্য বা সেবাটির ধারা কিংবা মান পরিবর্তন করে পরীক্ষামূলক ভাবে দেখতে হবে যে, কোন পণ্য বা সেবাটি গ্রাহক বেশি আকৃষ্ট করছে। এভাবে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন পণ্য বা সেবার সংযোজনের মাধ্যমে গ্রাহক চাহিদা এবং প্রয়োজনীয়তা বুঝার চেষ্টা করতে হবে।

আপনার পণ্য বা সেবাটি গ্রহণকারী গ্রাহকদের সর্বদা উৎকৃষ্ট সেবাটি প্রদানের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। গ্রাহকদের চাহিদা, প্রয়োজনীয়তা, রূচি, আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি বিষয় ভালভাবে বুঝতে হবে। সর্বোপরি এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা পূর্বক গ্রাহক সন্তুষ্টি এবং আস্থা অর্জনে করণীয় বিষয়গুলো করতে হবে।

ঝুকি

অ্যাড অন মডেলে মূলত নির্দিষ্ট পণ্য বা পরিষেবার সাথে অতিরিক্ত সংযোজিত পণ্য বা সেবার বিক্রয়ের মাধ্যমে আয় করে থাকে। এক্ষেত্রে এমনও হতে পারে যে, অতিরিক্ত পণ্য বা পরিষেবা কিংবা ফিচারটি গ্রাহক গ্রহণ করলো নাহ, সেক্ষেত্রে বিকল্প আয়ের ব্যবস্থাটা ভেবে রাখা বাঞ্চনীয়।

যেমন বিভিন্ন গেমসের কথাই ধরা যাক, অনেক সময় আমরা নতুন ফিচার গুলো কিনি নাহ, সেক্ষেত্রে কিন্তু গেমস গুলো অ্যাড অন মডেলের বাইরে অ্যাড মোব এর মাধ্যমেও আয় করে থাকে। মূলত আমরা গেমস খেলার মূহুর্তে যে বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখতে পাই সেটিই অ্যাড মোব পদ্ধতি। মোটকথা আয়ের বিকল্প পথটাকে মসৃণ রাখা আবশ্যক।

সুবিধা

অ্যাড অন মডেলে মূলত প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠানের পণ্য বা সেবার তুলনায় তুলনামূলক কম মূল্যে একই পণ্য বা সেবা প্রদান করা হয়। যা গ্রাহক আকৃষ্টতা বৃদ্ধি করে যথেষ্ট বেশি হারে।

গ্রাহকরা নিজেদের রূচি-পছন্দ কিংবা প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী অ্যাড অন গ্রহণ করতে পারবে। এর ফলে গ্রাহকরা জোরপূর্বক নয় বরং তাঁদের প্রয়োজনীয়তার জন্যই কোনো পণ্য বা সেবা নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে গ্রহণ করতে আগ্রহী হয়।

অ্যাড অন এর মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সেবাটিকে আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপন করতে পারবেন। অর্থাৎ নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবাটির সাথে নতুন কোনো পণ্য বা সেবা যোগ করার ফলে আপনার ঐ পণ্য বা সেবাটিকে একটু আলাদা কিংবা সতেজ মনে হবে। অর্থাৎ পরিবর্তনশীল একটি ধারা বজায় থাকবে, যা গ্রাহক আকৃষ্টতা বৃদ্ধি করবে।

অসুবিধা

অ্যাড অন মডেল ব্যবহারে একটি নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার সাথে অতিরিক্ত পণ্য বা সেবাটি যোগ করা হয়। এখন সেই পণ্য বা পরিষেবাটিকে আকর্ষণীয় ভাবে উপস্থাপন এবং গ্রাহক মনে এর চাহিদা তৈরী করে বিক্রয় করা খুবই কষ্টসাধ্য কাজ।

নতুন বা অতিরিক্ত যে পণ্য বা সেবাটি যুক্ত করা হয়েছে প্রতিনিয়ত গ্রাহকের কাছে তাঁর উপযোগীতা সম্পর্কে সচেতন থাকা কিংবা সঠিক সেবা বা পণ্যটিকেই সংযোজন করার দিকে খেয়াল রাখতে হলে খুব বেশি সচেতনতা অবলম্বন করতে হয়।

উদাহরণ

গাড়ি

বিভিন্ন বড় বড় গাড়ির প্রতিষ্ঠানগুলোও অ্যাড অন মডেল প্রয়োগ করে ব্যবসা করে থাকে। প্রথমে তাঁরা কাঙ্ক্ষিত গ্রাহকের ক্রয় ক্ষমতা অনুযায়ী কোনো গাড়ির মূল্য নির্ধারণ করে থাকে। এমনভাবে মূল্য নির্ধারণ করে যেন, গ্রাহক গাড়িটির প্রতি আকৃষ্ট হয় এবং গাড়িটি ক্রয় করার প্রতি আগ্রহ প্রদর্শন করে। আর অ্যাড অন মডেলের সার্থকতা এখানে যে, গ্রাহক যখন গাড়িটি ক্রয় করে, তখন গাড়িটিকে আরো সুন্দর, গতিশীল এবং আকর্ষণীয় করতে গ্রাহক মনে উপযোগীতা সৃষ্টি করে। অর্থাৎ গ্রাহকের ভিতর চাহিদা কিংবা প্রয়োজনীয়তা সৃষ্টি করে ঐ গাড়ি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরঞ্জামাদি ক্রয় করতে। ফলে গ্রাহক অন্যান্য সরঞ্জামাদি গুলো অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে কিংবা ম্যানুফ্যাকচারিং করে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি বেশ ভাল পরিমাণ অর্থ আয় করে থাকে।

এয়ার লাইনস

প্রায়শই বিভিন্ন এয়ার লাইনস খুবই কম মূল্যে গ্রাহকদের এয়ার ট্রাভেল সেবা প্রদান করে থাকে। অর্থাৎ ভ্রমণকারীর জন্য একেবারেই সস্তায় ভ্রমণ সুযোগ দিয়ে থাকে। এক্ষেত্রে ঐ এয়ারলাইন্স মূলত আয় করে থাকে ভ্রমণকারীকে অতিরিক্ত সুবিধা যেমন, খাবার, ব্যাগেজ, সিট সংরক্ষণ ইত্যাদি সুবিধাদি দেওয়ার মাধ্যমে। অর্থাৎ যখন কোনো একজন গ্রাহক একটি টিকেট সংগ্রহ করে থাকে, তখন এয়ার লাইন্স থেকে ঐ গ্রাহককে টিকেটটি ফাস্ট ক্লাসে আপগ্রেড করা সহ ফ্লাইট ইন্স্যুরেন্স, সুস্বাধু খাবার প্যাকেজ ইত্যাদির অফার প্রদান করে থাকে। গ্রাহক মনে তৈরীকৃত চাহিদা থেকে গ্রাহক এই সুবিধাগুলো গ্রহণের বিনিময়ে টিকেটের নির্ধারিত মূল্যের বাইরেও অতিরিক্ত অর্থ প্রদান করে থাকে। এভাবেই অ্যাড অন মডেল এয়ার লাইন্স এর ক্ষেত্রেও কাজ করে থাকে।

মোবাইল গেমস

আমরা বিভিন্ন ধরনের গেমস প্লে স্টোর থেকে কিন্তু প্রায় সম্পূর্ণ ফ্রি তেই ডাউনলোড করতে পারি। অর্থাৎ গেমস টি খেলার জন্য আমাদের কোনো ধরনের অর্থ প্রদান করতে হয় নাহ। কিন্তু গেমটি খেলার সময় প্রায়শই দেখবেন যে, খেলতে খেলতে কোনো মূহুর্তে কোনো একটি ফিচার আপনাকে কিনতে বলছে। কিংবা আপনাকে আরো লাইভস কয়েনের বিনিময়ে কিনতে বলতেছে। আর সেই মূহুর্তে আমরা সেই ফিচার টি নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে কিনে থাকি। কারণ তখন ঐ ফিচারের প্রয়োজনীয়তা আমাদের ভিতর তৈরী হয়ে গিয়েছে। এটিই মূলত অ্যাড অন বিজনেস মডেল। শুধু মোবাইল গেমস নয় অন্যান্য সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশনের ক্ষেত্রেও এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়।

পরিশেষে সব দিক বিবেচনায় বলা যায়, বর্তমান প্রতিযোগিতা পূর্ণ সময়ে বিভিন্ন পণ্য বা সেবায় অ্যাড অন মডেল ব্যবহার তুলনামূলক সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। আর এই অ্যাড অন মডেল টি শুধু ব্যবহার নয় বরং সর্বদিক বিশ্লেষণ করে সুষ্ঠু এবং লাভজনক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

  • https://www.preferredcfo.com/the-add-on-business-model-and-why-it-rocks/
  • https://bmilab.com/blog/2017/8/4/bmis-55-pattern-cards-add-on?format=amp
  • https://bmtoolbox.net/patterns/
Next to read
Canvas & Methods
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)
মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট (Minimum Viable Product)

অধিক শ্রম ও অর্থ খরচের এই ঝুঁকি এড়াতে সৃষ্টি হয়েছে এক নতুন ধরনের বিজনেস স্ট্র‍্যাটেজি যেখানে পণ্য প্রয়োজনীয় কিছু ফিচার দিয়ে বাজারজাত করা হয়। পরবর্তীতে গ্রাহকদের চাহিদা পর্যালোচনা করে ধীরে ধীরে এই পণ্যের উন্নয়ন করা হয় এবং নতুন নতুন উপাদান/ফিচার যুক্ত করা হয়। ব্যবসায়িক জগতে একে বলা হয় মিনিমাম ভায়েবল প্রোডাক্ট।

সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)
Canvas & Methods
সোশ্যাল ইম্প্যাথি ম্যাপিং (Social Empathy Mapping)
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
Canvas & Methods
কাস্টমার এক্সপ্লোরেশন ম্যাপ (Customer Exploration Map)
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
Business Models
শেয়ারিং ইকোনমি মডেল (Sharing Economy Model)
বেইট এন্ড হুক মডেল  (Bait & Hook Model)
Business Models
বেইট এন্ড হুক মডেল (Bait & Hook Model)
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
Business
মোট মুনাফা (Gross profit) সংজ্ঞা, সূত্র এবং উদাহরণ
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
Business
ইক্যুইটির সংজ্ঞা এবং অর্থ
মার্কেটিং এ ৫ সি (5 C's Of Marketing)
Marketing
মার্কেটিং এ ৫ সি (5 C's Of Marketing)
ব্যাংকিং কি এবং ব্যাংক কিভাবে কাজ করে?
Banking
ব্যাংকিং কি এবং ব্যাংক কিভাবে কাজ করে?
সুনীল অর্থনীতি বা Blue Economy কী ?
Economics
সুনীল অর্থনীতি বা Blue Economy কী ?